Ajker Patrika

বিশ্ব ইজতেমায় আমাদের প্রত্যাশা

সম্পাদকীয়
বিশ্ব ইজতেমায় আমাদের প্রত্যাশা

আজ আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হচ্ছে তাবলিগ জামাতের সবচেয়ে বড় জমায়েত বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। করোনা মহামারির কারণে গেল দুই বছর এই মহতী সম্মেলন আয়োজন করা না গেলেও এ বছর পুরোনো জৌলুশে ফিরে এসেছে। টঙ্গীর তুরাগতীরে আয়োজিত এই সম্মেলনে বাংলাদেশসহ বিশ্বের কয়েক লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলমান অংশ নেন এবং তাবলিগের মুরব্বিদের নির্দেশনা শুনে দলে-দলে ইসলাম প্রচারের মহান ব্রত নিয়ে বেরিয়ে পড়েন।

সাধারণ মুসলমানদের ইসলামের মৌলিক জ্ঞান শেখাতে এবং ধর্মচর্চায় অভ্যস্ত করে তুলতে ভারতের মাওলানা ইলিয়াস কান্ধলভি ১৯২৬ সালে তাবলিগ জামাত প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। প্রায় এক শ বছরের ইতিহাসে দলটি উপমহাদেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্বের প্রায় সবকটি দেশে নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।

তাবলিগের কাজ গতিশীল করার জন্যই মূলত ইজতেমার আয়োজন করা হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ও অঞ্চলে এমনকি জেলা পর্যায়েও ইজতেমার আয়োজন করা হয়ে থাকে। সেই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের টঙ্গীতে আয়োজিত হয় তাবলিগের আন্তর্জাতিক সম্মেলন বিশ্ব ইজতেমা।

এই জমায়েতকে হজের পর মুসলমানদের সবচেয়ে বড় জমায়েত বিবেচনা করা হয় এবং ৫৬ বছর ধরে এর আয়োজকের ভূমিকায় থাকার কারণে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়। বাংলাদেশের প্রায় সব গ্রাম-মহল্লা ও শহর থেকেই বিপুলসংখ্যক মুসল্লি ইজতেমায় অংশ নেন এবং ইসলামের মহান বাণী নিজেদের মধ্যে ধারণ করে অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রেরণা লাভ করেন।

মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর বাণী—‘একটি আয়াত হলেও মানুষের কাছে পৌঁছে দাও’—এই মর্মবাণী ধারণ করে ধর্মবিমুখ মুসলমানদের ধর্মের আলোয় ফিরিয়ে এনে মানবিক মূল্যবোধ বিকশিত করাই ইজতেমার মূল লক্ষ্য। ইমান, নামাজ, জ্ঞান ও আল্লাহর স্মরণ, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা, নিষ্ঠা ও ইসলাম প্রচার—এই ছয় কাজ সামনে রেখেই চলে তাবলিগের সব কার্যক্রম। তাই ইসলামের প্রচার-প্রসারে বিশ্ব ইজতেমার গুরুত্ব অপরিসীম। তবে ইসলামি তাত্ত্বিকদের মতামত হলো, এই জমায়েতকে ইসলামের মৌলিক বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত মনে করা, হজের সমপরিমাণ সওয়াব পাওয়ার আশা করা, পুরো জীবনের গুনাহের ক্ষমাপ্রাপ্তির কারণ মনে করা এবং আখেরি মোনাজাতে অংশ নেওয়া জরুরি মনে করা অনুচিত।

আজ আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে তুরাগতীরে লাখ লাখ মানুষের ঢল নামবে। বিপুল মানুষের এই সমাগমস্থলে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও স্বেচ্ছাসেবকদের সহযোগিতা করা এবং সুন্দরভাবে ইজতেমা সম্পন্ন করা আগত মুসল্লিদের অন্যতম দায়িত্ব। পাশাপাশি আল্লাহর দরবারে হাত তুলে কায়মনোবাক্যে মুসলিম উম্মাহর সুখ-সমৃদ্ধি, বিশ্বশান্তি ও বাংলাদেশের সার্বিক মঙ্গল কামনা করা উচিত।

পৃথিবী থেকে হিংসা-বিদ্বেষ ও হানাহানি দূর হোক এবং কল্যাণে ভরে উঠুক মানুষের জীবন; সফল হোক বিশ্ব ইজতেমা—এই আমাদের প্রত্যাশা। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আস্থায় বাজিমাত ইসলামী ব্যাংক

চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে গেছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ

‘ফের ধর্ষণচেষ্টার ক্ষোভে’ বাবাকে খুন, ৯৯৯-এ কল দিয়ে আটকের অনুরোধ মেয়ের

আ. লীগের ক্লিন ইমেজের ব্যক্তিদের বিএনপির সদস্য হতে বাধা নেই: রিজভী

১৫ স্থাপনায় পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, আকাশেই ধ্বংসের দাবি ভারতের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত