Ajker Patrika

এশিয়া কাপ তাহলে নিরীক্ষার মঞ্চ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২১ আগস্ট ২০২২, ১১: ১২
এশিয়া কাপ তাহলে নিরীক্ষার মঞ্চ

সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে বাংলাদেশ ফিরেছে একরাশ হতাশা নিয়ে। এই ভরাডুবির পর ঘুরে দাঁড়াতে বিশ্বকাপ-পরবর্তী সময়ে বিসিবি উল্লেখ করার মতো উদ্যোগ নেয়নি। যখন দুয়ারে এশিয়া কাপ, বিসিবি তখনই নড়চড়ে বসেছে। অক্টোবর-নভেম্বরে অস্ট্রেলিয়ায় হতে যাওয়া বিশ্বকাপ সামনে রেখে পুরো টি-টোয়েন্টি দলকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা তাদের। সেটির অংশ হিসেবে এশিয়া কাপ আপাতত বিসিবির কাছে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মঞ্চ।

এশিয়া কাপ তো আছেই, আগামী কয়েক মাসে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ব্যস্ত সূচি বাংলাদেশ দলের। অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপের আগে আছে নিউজিল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ। এখনই তাই নতুন করে শুরু করতে চায় বিসিবি। পরীক্ষা-নিরীক্ষার এই সময়ে ভালো-খারাপ দুটি দিকই ভাবছে তারা। ভালো কিছু হলে তো ভালোই, না হলেও নিজের পরিকল্পনায় অটুট থাকতে চায় বিসিবি। নতুন কিছু উদ্যোগ নিয়ে বাংলাদেশ দলের টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন গতকাল বলছিলেন, ‘সামনে টি-টোয়েন্টিতে বড় কিছু টুর্নামেন্ট। আমাদের আসলে মানসিকতায় পরিবর্তন দরকার। এই সংস্করণে যে গতি, সেই গতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলাটা খুব কঠিন। টেকনিক্যাল পরিবর্তনের চেয়ে মানসিকতার পরিবর্তন বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

বিসিবির এই বোধোদয় এত দেরিতে কেন হলো? সেটিও এশিয়া কাপের মতো একটা গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্টের আগে। প্রশ্নটা ‘আমাদের বুদ্ধি কম’ বলে হেসে উড়িয়ে দিলেন সুজন। তবে এখন বুদ্ধি খাটিয়েই এগোতে চায় বিসিবি। সেটির অংশ হিসেবে খেলোয়াড়দের মতো কোচদেরও ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে ব্যবহার করতে চায় বিসিবি। সুজন তাই বলেছেন, ‘সামনে বাংলাদেশের যে সংখ্যায় ম্যাচ আছে, অনেকেরই বিশ্রাম প্রয়োজন হবে। ১৫০ ম্যাচ খেলা মানে সব মিলিয়ে ৪০০-৪৫০ দিন যুক্ত থাকা লাগবে। এ রকম ব্যস্ত সময়ে সোয়াপ কোচিংয়ের ভাবনা আমাদের মাথায় আছে। সামনে অনেক খেলোয়াড়েরও সংকট হবে। চোট আছে, ছন্দে নাও থাকতে পারে, অনেক কিছু আছে।’

সোয়াপ কোচিংয়ের ভাবনায় টি-টোয়েন্টি দলের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে রাসেল ডমিঙ্গোকে। সে ক্ষেত্রে ডমিঙ্গো ব্যাপারটা কীভাবে নিচ্ছেন সে প্রশ্ন থাকছে। যদিও সুজন মনে করেন, এই দক্ষিণ আফ্রিকান কোচ খুবই ইতিবাচক মানসিকতার। ব্যাপারটা তিনি সহজভাবেই নেবেন। সবকিছু নির্ভর করছে অবশ্য বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের সঙ্গে কোচিং প্যানেলের আগামীকালের সভার ওপর। ডমিঙ্গো দলের সঙ্গে এশিয়া কাপে যাচ্ছেন কি যাচ্ছেন না, সেটা জানা যাবে এই সভা শেষে। যদিও জোর গুঞ্জন এশিয়া কাপে দলের সঙ্গে বাংলাদেশ দলের প্রোটিয়া কোচের না যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। দলের সঙ্গে না গেলে দেশে ক্রিকেটারদের নিয়ে কাজ করার কথা তাঁর। আপাতত মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে দলের প্রস্তুতিতে সময় দিচ্ছেন তিনি।

বাংলাদেশ দলের টিম ডিরেক্টর সুজন মনে করেন, ডমিঙ্গোর দর্শন বাংলাদেশের সঙ্গে ঠিক মিলছে না। তিনি বলেছেন, ‘দেখেন, প্রতিটি মানুষেরই আলাদা চিন্তাভাবনা থাকে। আমার এবং আপনার দর্শন সম্পূর্ণ আলাদা। ঠিক তেমনি কোচের দর্শনও আলাদা। সত্যি বলতে, ওর (ডমিঙ্গো) দর্শন যেটা, সেটা হয়তো আমাদের সঙ্গে মিলছে না।’

এশিয়া কাপ শুরু হতে বেশি সময় না থাকলেও এখনো কিছু সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে বিসিবি। এশিয়া কাপে তাই বড় চ্যালেঞ্জের সামনে পড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশ, বলাই যায়। তবে চ্যালেঞ্জটা নিতে চান সুজন, ‘এশিয়া কাপটা আমাদের জন্য খুবই চ্যালেঞ্জিং। একই সঙ্গে আমাদের জন্য মর্যাদাপূর্ণ একটি বিষয়। অনেকগুলো চ্যালেঞ্জই থাকবে আমাদের সামনে। আমরা ওই চ্যালেঞ্জটাই নিতে চাই, দেখা যাক কী হয়।’

বিশ্বকাপে যাওয়ার আগে ভারত-পাকিস্তান যেখানে এশিয়া কাপে ভালো করতে উন্মুখ, সেখানে মর্যাদাপূর্ণ এই টুর্নামেন্টকে বাংলাদেশ দেখছে নিরীক্ষার মঞ্চ হিসেবে। এশিয়া কাপ নিয়ে বাংলাদেশের স্বপ্নটা যে খুব বড় নয়, সেটি টুর্নামেন্ট শুরুর আগেই স্পষ্ট।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত