Ajker Patrika

বনের জমিতে পিকনিক স্পট করে ব্যবসা

রাতুল মণ্ডল, শ্রীপুর (গাজীপুর) 
বনের জমিতে পিকনিক স্পট করে ব্যবসা

গাজীপুরের শ্রীপুরে বন বিভাগের এক একরেরও বেশি জমি দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে পিকনিক স্পট। দীর্ঘ সময় ধরে এভাবে বনের জমি দখল করে ব্যবসা পরিচালনা করলেও ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে স্থানীয় ভূমিহীন ও নিম্ন আয়ের মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

রিসোর্ট মালিক বলছেন, নিজের জমির পাশে বনের জায়গায় অস্থায়ী কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ছোট ছোট কাঠের তৈরি মাচাং ঘর তৈরি করেছেন। কর্তৃপক্ষ চাইলে তিনি জায়গা ছেড়ে দেবেন। বন বিভাগের লোকজন বলছেন, শিগগিরই জমি থেকে ওই সব স্থাপনা ভেঙে ফেলা হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের টেংরা মৌজার বন বিভাগের এক একরের বেশি জমি দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে ‘সত্য নিকেতন বৃন্দাবন’ নামে একটি পিকনিক স্পট। বনের ভেতর গড়ে তোলা হয়েছে ছোট-বড় বেশ কয়েকটি বিশ্রামাগার। ছোট-বড় মিলিয়ে কমপক্ষে রয়েছে ১৫টি ঘর। বনের গাছপালা দখলে নিয়ে চারপাশে দেওয়া হয়েছে অস্থায়ী কাঁটাতারের বেড়া।

স্থানীয় বাসিন্দা জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘আমরা বনের গাছপালার শুকনো একটি ডালপালায় হাত দিলে বন বিভাগের কর্মকর্তার খোঁজখবর নিয়ে মামলা দিয়ে থাকেন।

আমরা গরিব মানুষ, একটি টয়লেট করতে গেলেও বন বিভাগের লোকজন এসে ভেঙে মামলা দেন। ছেলে-মেয়ে নিয়ে কষ্টে থাকলেও বনের ভেতর একটি ছোট্ট খুপরি ঘর করার সাহস পাই না। অথচ বনের বিশাল এলাকা দখল করে ঘরে তোলা হয়েছে পিকনিক স্পট। এখানে উচ্চস্বরে চলে গানবাজনা, নাচানাচি। কই, এখানে তো বন বিভাগের কর্মকর্তাদের নজর নেই। নজর শুধু গরিবের খুপরি ঘরে।’

স্থানীয় বাসিন্দা লোকমান হেকিম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আইন শুধু গরিবের জন্য। বনের ভেতর গড়ে উঠেছে পিকনিক স্পট। এটা তো কেউ ভাঙতে আসেনি। সরকারি জমি দখল করে পিকনিক স্পট নির্মাণ, আবার সেটা ভাড়া দিয়ে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে টাকা। এখানে বন বিভাগের কর্মকর্তাদের মাথা ব্যথা নেই। মাথা ব্যথা আমাদের জরাজীর্ণ ঘরের দিকে।’

পিকনিক স্পটের প্রতিষ্ঠাতা আমির হামজা মৃধা বলেন, ‘আমার নিজস্ব জমিতে পিকনিক স্পট নির্মাণ করা হয়েছে। জমির পাশে বনের কিছু জমির ভেতর ছোট-বড় মাচাং ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। সেগুলোর মধ্যে মানুষ এসে একটু বিশ্রাম নেন। পাশাপাশি বন বিভাগের একটি লট বরাদ্দ রয়েছে আমার নামে। বন বিভাগের লোকজন চাইলে আমি জায়গা ছেড়ে দেব, আমি কোনো গাছপালা নষ্ট করিনি।’

বন বিভাগের সাতখামাইর বিটের দায়িত্বে থানা রেঞ্জ কর্মকর্তা ফজলুল হক বলেন, ‘আমি এই বিটে নতুন যোগদান করেছি। বনের জমির গাছপালার ভেতর মাচাং ঘর নির্মাণ করা হয়েছে অনেক আগে। আপনার মাধ্যমে খবর পেলাম। এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে বনের জমি থেকে এগুলো ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে। বনের জমিতে এ ধরনের পিকনিক স্পট করার কোনো সুযোগ নেই।’

সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) রানা দেব বলেন, এ বিষয়ে স্থানীয় বিট অফিসের সংশ্লিষ্টদের ভালোভাবে খোঁজখবর নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পরে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। কোনো অবস্থায়ই বন বিভাগের এক শতাংশ জমি দখল করতে দেওয়া হবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মৌচাকে গাড়িতে লাশ: ২৫ লাখ টাকায় যুক্তরাষ্ট্রের কথা বলে জাকিরকে শ্রীলঙ্কায় নিয়েছিল দালাল

যেভাবে শেখ হাসিনাকে ফেরানোর পরিকল্পনা চলছিল, স্বীকারোক্তিতে জানালেন মেজর সাদিকের স্ত্রী জাফরিন

পুলিশের এডিসিকে ছুরি মেরে পালিয়ে গেল ছিনতাইকারী

টেলিটক এখন গলার কাঁটা পর্যায়ে চলে এসেছে: ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব

সিন্ধু পানিবণ্টন নিয়ে আন্তর্জাতিক আদালতের রায় পাকিস্তানের বড় জয়: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত