Ajker Patrika

সুকুমার সেন

সম্পাদকীয়
সুকুমার সেন

বিখ্যাত ভাষাতাত্ত্বিক, সাহিত্যবিশারদ এবং রবীন্দ্র-গবেষক সুকুমার সেন। বৈদিক, ধ্রুপদি সংস্কৃত, পালি, প্রাকৃত, বাংলা ও প্রাচীন পারসিক ভাষায় তাঁর বিশেষ ব্যুৎপত্তি এবং পাণ্ডিত্য ছিল। তুলনামূলক ভাষাতত্ত্ব ও পুরাণতত্ত্ব আলোচনায়ও তিনি তাঁর বৈদগ্ধ্যের পরিচয় দিয়েছেন।
কলকাতায় মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন। বর্ধমান জেলার গোতান গ্রামে ছিল তাঁর পৈতৃক নিবাস। এখানেই সুকুমার সেনের পড়াশোনা শুরু হয়।

১৯২১ সালে কলকাতার সংস্কৃত কলেজ থেকে সংস্কৃতে প্রথম বিভাগে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে বিএ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এরপর ১৯২৩ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তুলনামূলক ভাষাতত্ত্বে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করে এমএ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯২৫ সালে ‘সিনট্যাক্স অব দ্য নাউন ইন দ্য বৈদিক প্রোজ’ নামে একটি থিসিস লিখে প্রেমচাঁদ-রায়চাঁদ বৃত্তি লাভ করেন।

১৯২৬ সালে তাঁর প্রথম গবেষণা প্রবন্ধ ‘নোটস অফ দি ইউজ অফ কেসেস ইন দ্য কথক সংহিতা’ প্রকাশিত হয় এশিয়াটিক সোসাইটি জার্নালে। এরপর মধ্য ও আধুনিক (বাংলা) আর্য ভাষার ঐতিহাসিক পদবিচারের ওপর গবেষণা করে তিনি পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।

সুকুমার সেন মিথ-আশ্রিত ভাষাতত্ত্ব এবং পুরাণচর্চার পরিবর্তে আধুনিক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অবলম্বন করে গবেষণা করতেন। আধুনিক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অবলম্বন করে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ, এশিয়াটিক সোসাইটি ও বর্ধমান সাহিত্য সভার প্রায় ১২ হাজার পুথি পরীক্ষা করেছেন। জয়দেবের গীতগোবিন্দ কাব্যের প্রাচীন পুথিটি তিনি আবিষ্কার করেন। সেকশুভোদয়া পুথিটিও তিনি সম্পাদনা করেছেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলো হলো: ভাষার ইতিবৃত্ত, বাংলা স্থাননাম, রামকথার প্রাক-ইতিহাস, ভারত-কথার গ্রন্থিমোচন, বাঙ্গালা সাহিত্যের ইতিহাস, বঙ্গভূমিকা ইত্যাদি।

ভাষাতত্ত্ব ও পুরাণ ছাড়া রবীন্দ্রসাহিত্যেও তাঁর ছিল বিশেষ জ্ঞান ও প্রজ্ঞা। তিনি ছিলেন রবীন্দ্রনাথের সাহিত্যের ব্যাখ্যাকারী। তিনি রবীন্দ্র পুরস্কার, এশিয়াটিক সোসাইটির ‘যদুনাথ সরকার পদক এবং রবীন্দ্রচর্চা কেন্দ্র থেকে পান ‘রবীন্দ্র তত্ত্বাচার্য’ উপাধি।

এই ভাষাতাত্ত্বিক ১৯৯২ সালের ৩ মার্চ মৃত্যুবরণ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত