Ajker Patrika

চোরকে চিনে ফেলায় খুন হন সেই দম্পতি

চাঁদপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ২৫ অক্টোবর ২০২১, ১২: ০৮
চোরকে চিনে ফেলায় খুন হন সেই দম্পতি

নুরুল আমিন (৬৫) ও তাঁর স্ত্রী কামরুন নাহার (৬০) দুজনই ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত সমাজসেবা কর্মকর্তা। বিভিন্ন কাজে ব্যাংকে যাতায়াত ছিলো এই দম্পতির। তাঁদের নিজের রিকশা চড়িয়ে ব্যাংকসহ বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যেতেন দীর্ঘ দিনের পরিচিত প্রতিবেশী রিকশাচালক মো. আব্দুল মালেক।

ঘনঘন ব্যাংকে যাতায়াত করায় অনেক আগে থেকেই ছিঁচকে চুরির সঙ্গে জড়িত মালেক ওই দম্পতির ঘরে চুরির পরিকল্পনা করেন। পরে এই ছিঁচকে চোরের হাতেই নিজ বাড়িতে খুন হন ওই দম্পতি। তারা চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার নাওড়া এলাকা নিজ বাড়িতে বসবাস করতেন।

চাঞ্চল্যকর নুরুল আমিন দম্পতি হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পুলিশ সুপার খন্দকার নূর রেজওয়ানা পারভীন।

গত শনিবার সন্ধ্যায় শহরতলী বাবুরহাট এলাকায় অবস্থিত পিবিআই কার্যালয়ে তিনি এসব কথা জানান। ইতিমধ্যে এই হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত এক আসামিসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।

গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন-খুনের সঙ্গে জড়িত শাহরাস্তি উপজেলার ঘুঘুসাল এলাকার মো. আবদুল মালেক, চুরি যাওয়া মালামাল ক্রয়কারী আসামী ঝালকাঠি সদর উপজেলার গাবখান এলাকার মো. ইলিয়াস হোসেন ও বরিশাল জেলার কাউনিয়া উপজেলার চরবাড়ীয়া এলাকার মো. বশির।

পুলিশ সুপার বলেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২৯ জুন সন্ধ্যায় বাড়ির মূল গেইট খোলা পেয়ে আ. মালেক ওই দম্পতির বাড়ির ছাদে কৌশলে অবস্থান নেন। রাত ৯টার দিকে নুরুল আমিন ছাদে উঠলে পিছন থেকে আ. খালেক তাঁর সঙ্গে থাকা লোহার রড দিয়ে সজোরে তাঁর মাথায় আঘাত করেন। তার পরিচয় প্রকাশ হওয়ার ভয়ে ছাদে শুখাতে দেওয়া পায়ের মোজা দিয়ে শ্বাসরোধ করে সেখানেই হত্যা করে তাঁকে।

পরবর্তীতে চুরি করতে বিল্ডিংয়ের একটি রুমে ভেতরে প্রবেশ করে একটি ফাইল কেবিনেটের ড্রয়ার টানাটানি করতে থাকে। এ সময় ড্রয়ার খোলার শব্দ শুনতে পেয়ে ঘরের লাইট জ্বালিয়ে আ. মালেক কে দেখে চিনে ফেলে কামরুন্নাহার। এটিই কাল হয়ে দাঁড়ায় তার জন্য।

তখন আ. খালেক তার হাতে থাকা রড দিয়ে কামরুন্নাহারের মাথায় আঘাত করে। এতে করে তিনি ফ্লোরে পড়ে যায় এবং তার মাথা বেয়ে রক্ত পড়তে থাকে। পরবর্তীতে নুরুল আমিনের ব্যবহৃত একটি মোবাইল ফোন নিয়ে ছাদ থেকে গাছ বেয়ে নিচে নেমে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে ১ জুলাই সংবাদ পেয়ে ঘরের তালা ভেঙে মৃত অবস্থায় নুরুল আলমের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় নিহতদের ছেলে জাকারিয়া বাবু বাদী হয়ে শাহরাস্তি থানায় অজ্ঞাতদের আসামী করে একটি মামলা করেন।

পুলিশ বলেন, মামলাটি প্রায় এক মাস শাহরাস্তি থানা পুলিশ তদন্ত করে। পরবর্ততে আদালত এই মামলার পরবর্তী তদন্ত পিবিআইকে করার নির্দেশ দেয়। পিবিআই এর পুলিশ পরিদর্শক কবির মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত