Ajker Patrika

খাল পুনর্খনন শেষ না করেই কাজ সমাপ্তের অভিযোগ

হোসাইন আহাম্মেদ সুলভ, মুক্তাগাছা
আপডেট : ০৬ মার্চ ২০২২, ১৩: ২৩
খাল পুনর্খনন শেষ না করেই কাজ সমাপ্তের অভিযোগ

মুক্তাগাছা উপজেলার কুমারগাতা ইউনিয়নের মালতিপুর গ্রামের একটি খাল পুনঃখননের কাজ না করেই সমাপ্তি ঘোষণার অভিযোগ উঠেছে। লাকরী বিল এলাকা থেকে কান্দুলিয়া পর্যন্ত খাল খনন নিয়ে এ অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে এলাকাবাসীর পক্ষে প্রকল্প পরিচালক (ক্ষুদ্র সেচ উন্নয়ন প্রকল্প), ময়মনসিংহ অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী (ক্ষুদ্র সেচ), দুর্নীতি দমন কমিশনসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মালতিপুর গ্রামের লাকরী বিলের খালটি কৃষি কাজ ও বর্ষা মৌসুমের পানি নিষ্কাশনের জন্য প্রায় ১০টি গ্রামবাসীর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। খালটি বোরো মৌসুমে সেচের পানি সরবরাহের জন্য নির্ভরযোগ্য। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন কর্তৃক খালটি পুনরায় খননের জন্য ফরিদপুরের গোলাম মোহাম্মদ নাছিরের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ পায়।

অভিযোগ উঠেছে, খালটি খনন করার সময় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান খালের এক-তৃতীয়াংশ নামমাত্র খনন দেখিয়ে বাকি কাজ করেননি। ওই অংশে কোনো কাজ না করেই খনন সমাপ্ত করেন বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেন। তাঁরা বলছেন, টেন্ডারের শিডিউল অনুযায়ী গভীরতায় খনন করা হয়নি। সিংহভাগ অংশেই কোনো কাজই করেনি।

এতে শুকনা মৌসুমে খালে পানি না থাকায় কৃষকের বোরো আবাদে ব্যাঘাত ঘটছে। অন্যদিকে বর্ষা মৌসুমে ১০টি গ্রাম ও বিলের পানি নিষ্কাশনের ব্যাঘাত ঘটার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এতে আমন ফসল পানিতে ডুবে ব্যাপক ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। এতে এলাকার কৃষকেরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।

এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সরেজমিনে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণসহ খালটি টেন্ডার শিডিউল মোতাবেক খনন করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

ওই এলাকার মুকলেছুর রহমান বলেন, ‘খাল নামমাত্র খননও করা হয়নি। এর ফলে আমাদের সুবিধার পরিবর্তে অসুবিধাই বেশি হচ্ছে।’ সঠিকভাবে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানাচ্ছি।

স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য মফিজুল ইসলাম বলেন, ‘ঠিকাদার টেন্ডারের শিডিউল অনুযায়ী যে গভীরতায় খনন করার কথা ছিল, তা না করে প্রকল্পের কাজ শেষ করেছেন। এর ফলে এ সময়ে খালে পানি না থাকায় বোরো আবাদে কৃষকের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।’

এ ব্যাপারে তত্ত্বাবধানের কাজে নিয়োজিত উপসহকারী প্রকৌশলী ইসরাইল হোসেনের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, প্রকল্পের জন্য প্রতি কিলোমিটারে ৯ লাখ টাকা বরাদ্দ। এ খালে প্রথম দেড় কিলোমিটার কাজের টেন্ডার হয়। পরে আরও দেড় কিলোমিটার কাজ হয়। এখন কিছু মানুষ এ নিয়ে অভিযোগ করেছেন শুনেছি। তবে আমি দেখিনি।’

ইজরাইল হোসেন আরও বলেন, ‘অভিযোগটি যে পুরোপুরি অসত্য, তা না। তবে যথাযথ নয়। কিছু অংশে ভেকু নেওয়া যায়নি। কচুরিপনাও জমে আছে। ঠিকাদারকে বলা হয়েছে, টুকটাক কাজ যা বাকি আছে তা যেন সম্পন্ন করে দেন।’ এখনো ঠিকাদারের কোনো বিল পরিশোধ করা হয়নি বলেও জানান তিনি।

জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল-মনসুর বলেন, ‘কুমারগাতা ইউনিয়নের মালতিপুর গ্রামের লাকরী বিলের খাল খননের অনিয়মের বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। অনিয়মের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সত্যতা পেলে, অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত