Ajker Patrika

চিকিৎসক না থাকায় মুলাদীতে উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র বন্ধ, ভোগান্তি

আরিফুল হক তারেক
আপডেট : ০৭ এপ্রিল ২০২২, ০৯: ৩৯
চিকিৎসক না থাকায় মুলাদীতে উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র বন্ধ, ভোগান্তি

মুলাদীতে চিকিৎসক ও কর্মকর্তা না থাকায় বন্ধ হয়ে গেছে পৈক্ষা উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র। ফলে চিকিৎসা সেবা, সরকারি ওষুধ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন প্রায় ২৫ হাজার মানুষ। তবে একজন সিএইচসিপিকে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দায়িত্ব দিয়েছেন বলে জানান উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা।

জানা গেছে, উপজেলার গাছুয়া ইউনিয়নের পৈক্ষা উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র স্থাপনের পর থেকে মাঝে মধ্যে চিকিৎসকেরা সেখানে সেবা দিতেন। তবে রোগীদের মূল ভরসা ছিলেন উপসহকারী কমিউনিটি স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (সেকমো)। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সেকমো মো. সাখাওয়াত হোসেন অবসর যান।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসা সেবা দিতে একজন নিয়মিত চিকিৎসক, একজন উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার, একজন পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক (এফডব্লিউভি) ও একজন সহকারী থাকার কথা। কিন্তু পৈক্ষা উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়মিত চিকিৎসক, সেকমো নেই। পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক এলাকায় পরিদর্শনে যাওয়ায় তাঁর পক্ষে নিয়মিত স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সেবা দেওয়া সম্ভব হয় না। সহকারীর পদ শূন্য থাকায় স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি খোলা কিংবা পরিচালনার মতো কেউ নেই।

পৈক্ষা হোসনাবাদ গ্রামের আবুল হোসেন বলেন, সেকমো অবসরে যাওয়ার পর নতুন কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। ২০১৯ সালের পর থেকে সপ্তাহে ১ দিন মুলাদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে একজন চিকিৎসক আসতেন। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক মহিউদ্দীন মজুমদার বদলি হয়ে যাওয়ায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি বন্ধ রয়েছে।

হোসনাবাদ গ্রামের আব্দুল আজিজ বলেন, সাধারণ রোগের জন্য উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রই ছিল একমাত্র ভরসা। নিয়মিত খোলা না থাকায় গাছুয়া ইউনিয়নের ২৫ হাজার মানুষ ন্যূনতম চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

গাছুয়া ইউনিয়ন পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক জিয়াসমিন বলেন, ‘আমাকে এলাকা পরিদর্শন এবং মুলাদী সদরে অফিস করতে হয়। তাই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়মিত সময় দেওয়া সম্ভব না।’

পদ্মারহাট কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) মো. আমিনুল ইসলাম জানান, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের দায়িত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু এখনো দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। আর দায়িত্ব দেওয়া হলেও কমিউনিটি ক্লিনিকের পাশাপাশি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে সেবা দেওয়া সম্ভব হবে না।

গাছুয়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান জসিম উদ্দীন ব্যাপারী জানান, ইউনিয়নের কিছু এলাকা থেকে উপজেলা সদর ১০-১২ কিলোমিটার দূরে। অনেকের পক্ষে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাওয়া সম্ভব না। উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি চালু থাকলে দরিদ্র ও হতদরিদ্র মানুষ চিকিৎসা সেবা ও বিনা মূল্যে ওষুধ পেতেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. সাইয়েদুর রহমান বলেন, উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (সেকমো) নিয়োগের জন্য সিভিল সার্জন কার্যালয়ে চাহিদা দেওয়া আছে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সেকমো নিয়োগ বন্ধ থাকায় পৈক্ষা উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে। একজন সিএইচসিপিকে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে সেবা দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সেখানে একজন নিয়মিত চিকিৎসক দেওয়ার চেষ্টা চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত