Ajker Patrika

সাবেক মেয়রের বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ বর্তমান মেয়রের

বাঘা প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ নভেম্বর ২০২১, ১৭: ০৪
সাবেক মেয়রের বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ বর্তমান মেয়রের

বাঘা পৌরসভার সাবেক মেয়র আক্কাছ আলীর বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণ আয়কর ও ভ্যাট সরকারি কোষাগারে জমা না দেওয়ার অভিযোগ তুলে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ করেছেন পৌরসভার বর্তমান মেয়র আব্দুর রাজ্জাক।

গত ১১ নভেম্বর মেয়র আব্দুর রাজ্জাকের স্বাক্ষরিত লিখিত অভিযোগ দুর্নীতি দমন কমিশন, রাজশাহীর উপপরিচালক বরাবর দেওয়া হয়েছে। অভিযোগের সেই কপি স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের সরবরাহ করেছেন আব্দুর রাজ্জাক।

এর আগে বাঘা পৌরসভার বর্তমান মেয়রের বিরুদ্ধে নিয়োগ-বাণিজ্য, টাকা আত্মসাৎ, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনভাতা না দেওয়াসহ পাহাড় সমান অভিযোগ উঠেছিল। এই পৌরসভায় পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও মালি ছাড়া অস্থায়ী কর্মী নিয়োগের বিধান না থাকলেও অর্থের বিনিময়ে মেয়র আবদুর রাজ্জাক বারবার কর্মচারী নিয়োগের চেষ্টা চালিয়ে আসছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে সম্প্রতি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ে গত ১১ অক্টোবর লিখিত অভিযোগ করেন পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইফুল ইসলাম। অভিযোগ খতিয়ে দেখতে গত ২৮ অক্টোবর তদন্ত এবং সংশ্লিষ্ট নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিতের নির্দেশ দেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ ফারুক হোসেন। এই অভিযোগের তদন্ত শেষ না হতেই সাবেক মেয়রের বিরুদ্ধে রাজস্ব ফাঁকির ঘটনাসহ আরও অনিয়মের অভিযোগ দুদকে জমা পড়ল।

বর্তমান মেয়র আব্দুর রাজ্জাক দুদকে দাখিল করা তাঁর অভিযোগে উল্লেখ করেন, ২০০৬ সালের ৪ মে থেকে ২০১৮ সালের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত আক্কাছ আলী পৌরসভার মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে বিভিন্ন ধরনের দুর্নীতি হয়েছে। বিগত ২০০৬ সালের মে মাস থেকে ২০১৮ সালের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বিপুল পরিমাণ আয়কর ও ভ্যাট সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হয়নি। এর মধ্যে পৌরসভার বিভিন্ন কাজের আয়কর ও ভ্যাটের ১০০ খানা চেক সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হয়নি। এতে সরকারের ১৫ লাখ ৫৪ হাজার ৬৪৬ টাকা ক্ষতি হয়েছে। ২০১৩-২০১৪ অর্ধবছর থেকে ২০১৬-২০১৭ অর্থবছর পর্যন্ত এডিবি ও বিশেষ বরাদ্দের চেক রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে ব্যয় হওয়া মোট ৫ কোটি ১২ লাখ ৪০ হাজার ২০৯ টাকার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নেই।

দায়িত্ব নেওয়ার প্রায় ৪ বছর পর অভিযোগ কেন তা জানতে চাইলে মেয়র আব্দুর রাজ্জাক বলেন, মানবিক কারণে বিষয়গুলো সেই সময় খতিয়ে দেখেননি তিনি। আরও বলেন, ‘আমি কোনো অনিয়ম দুর্নীতি করিনি, তারপরেও আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে।’

সাবেক মেয়র আক্কাছ আলী বলেন, রাজস্ব ফাঁকির ঘটনায় তিনি জড়িত নন। টাকা জমা দেওয়ার দায়িত্ব প্রধান হিসাব রক্ষকের। সে কী করেছেন, তা তাঁর জানা নেই। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে কোনো টাকা বকেয়া থাকলে পরবর্তী মেয়র সেই টাকা আদায় করতে পারেন। তাঁর দায়িত্ব পালনকালে একাধিকবার অডিট হয়েছে। কিন্তু কোনো অনিয়ম ধরা পড়েনি।

সাবেক মেয়র আরও বলেন, পৌরসভার নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে। তাই তাঁর জনপ্রিয়তা হ্রাস করার ষড়যন্ত্র করে অহেতুক অভিযোগ করা হয়েছে।

পৌরসভার প্রধান হিসাবরক্ষক হাসান আলী বলেন, ‘আমি হুকুমের গোলাম। মেয়র যা বলেন আমাকে তাই করতে হয়।’

অভিযোগের বিষয় জানার জন্য দুদকের রাজশাহীর উপপরিচালকের সরকারি টেলিফোনে যোগাযোগ করলে কর্মচারী মজিবুল হক জানান, ‘স্যার বিশেষ কাজে বাইরে আছেন।’

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আক্কাছ আলীকে পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হন আব্দুল রাজ্জাক। এর আগে ২০০৬ সালে আব্দুর রাজ্জাককে পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন আক্কাছ আলী। সীমানা জটিলতার কারণে প্রায় ১১ বছর পর আটকে ছিল বাঘা পৌরসভার নির্বাচন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত