Ajker Patrika

নৌকায় ভোট দেওয়ায় ১৯১ কার্ড বাতিল!

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
নৌকায় ভোট দেওয়ায় ১৯১ কার্ড বাতিল!

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে গত ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার অভিযোগে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১৯১টি কার্ড বাতিল করা হয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী উপজেলার চিলমারী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নানের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ (ইউএনও) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

৬ অক্টোবর দেওয়া লিখিত ওই অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, কয়েক বছর ধরে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার চিলমারী ইউনিয়নের ২০৪ জন অসচ্ছল পরিবার সরকারের দেওয়া খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির কার্ডের মাধ্যমে চাল পেয়ে আসছিল। গত ইউপি নির্বাচনে তাদের অধিকাংশ পরিবার নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সৈয়দ আহাম্মেদের পক্ষে কাজ করে। কিন্তু নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল মান্নান জয়লাভ করেন।

সম্প্রতি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির কার্ডধারীদের ডিজিটাল ডেটাবেইস তৈরির নির্দেশ দেয়। ডিজিটাল ডেটাবেইস তৈরি করতে গিয়ে পুরোনো ১৯১টি কার্ড বাতিল করা হয়।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান তাঁর নিজস্ব লোকজনের নামে কার্ড করার জন্য মাত্র ১৩ জনকে রেখে ডেটাবেইস তৈরি করেন। এ বিষয়ে লোকমুখে শুনে চেয়ারম্যানের কাছে বারবার ধরনা দেওয়ার পরও তাঁদের নাম ডেটাবেইসে এন্ট্রি করা হয়নি।

ভুক্তভোগীরা জানান, ইউপি চেয়ারম্যান নিজস্ব ১৩ জন লোক রেখে বাকি ১৯১ জনের কার্ড বাতিল করে দেন। ফলে তাঁরা দুই মাস ধরে চাল তুলতে পারছেন না। এ অবস্থায় তাঁরা কষ্টে দিন অতিবাহিত করছেন।

তবে এসব অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই বলে দাবি করেন অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান। তিনি বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে করা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। ডেটাবেইস তৈরির আগে পুরো ইউনিয়নে মাইকিং করা হয়েছে। এ ছাড়া ইউপি সদস্যদের মাধ্যমেও এলাকায় প্রচার চালানো হয়। যাঁরা আসেননি, তাঁদের নাম বাদ পড়েছে।

ইউপি চেয়ারম্যান দাবি করেন, আগের চেয়ারম্যান তাঁর নিজের ওয়ার্ড থেকেই ১৯১ জনকে কার্ড করে দেন। তাঁদের অনেকে সচ্ছল। এখন উল্টো তিনি তাঁর লোকজনের মাধ্যমে মিথ্যাচার করে বেড়াচ্ছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চিলমারী ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান সৈয়দ আহাম্মেদ বলেন, ‘আমার সময় যাঁরা অসচ্ছল-গরিব ছিলেন, তাঁদের নামেই কার্ড করে দেওয়া হয়েছিল। মূলত তাঁরা নির্বাচনে আমার পক্ষে কাজ করার কারণেই বর্তমান চেয়ারম্যান তাঁদের কার্ড বাতিল করেছেন।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের ইউএনও আব্দুল জব্বার বলেন, ডেটাবেইস করার সময় মাইকিং করা হয়েছে। আবার আগের চেয়ারম্যানের সময় এক ওয়ার্ড থেকেই ১৯১ জনের কার্ড করা হয়েছি। তবু বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হবে। বিষয়টি উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত