Ajker Patrika

প্রিয়াকে সাজানোর খরচ

সম্পাদকীয়
প্রিয়াকে সাজানোর খরচ

একদিন আব্বাসউদ্দীন গুন গুন করে ভাওয়াইয়া গান গাইছিলেন। ঘরের বাইরে দাঁড়িয়ে সে গান শুনছিলেন নজরুল ইসলাম। গান শেষ হতেই ঘরে ঢুকে তিনি বললেন, ‘গাও তো আব্বাস, আবার গাও।’

আরও একবার গাইলেন আব্বাসউদ্দীন। নজরুল বললেন, ‘না, তুমি গেয়েই চলো, যতক্ষণ আমি থামতে না বলি।’

চোখ বন্ধ করে আব্বাসউদ্দীন আরও ১০-১৫ মিনিট গানটি গেয়ে চললেন। নজরুল বললেন, ‘আচ্ছা, এবার এই গানটা গাও দেখি ঠিক ওই সুরে।’

আব্বাসউদ্দীনের গানের পঙ্‌ক্তিগুলো ছিল এ রকম:

‘নদীর নাম সই কচুয়া/ মাছ মারে মাছুয়া/ মুই নারী দিচোং ছেকাপাড়া...’।

নজরুল লিখেছেন, ‘নদীর নাম সই অঞ্জনা/ নাচে তীরে খঞ্জনা/ পাখা সে নয় নাচে কালো আঁখি/ আমি যাব না আর অঞ্জনাতে/ জল নিতে সখী লো/ ঐ আঁখি কিছু রাখিবে না বাকী...’।

নজরুল বললেন, ‘জানি না, এ গানের সুরে কী মায়া!’

সেই নজরুলই একদিন গ্রামোফোন কোম্পানিতে এসে আড্ডারত সবাইকে বললেন, ‘দেখো, তোমরা কেউ যদি লটারিতে এক লাখ টাকা পাও, তাহলে তোমার বউ বলো, প্রিয়া বলো, তাকে কী কী জিনিস দিয়ে সাজাবে?’

কেউ বলল, ‘ট্যাক্সি করে এম বি সরকারের দোকান থেকে হীরা-জহরতের জড়োয়া সেট কিনব।’

কেউ বলল, ‘ওয়াসেল মোল্লার দোকানের শাড়ির যত রকম ডিজাইন আছে, সব কিনব।’

নজরুল টেনে নিলেন হারমোনিয়াম। তারপর বললেন, ‘শোনো, আমি কী দিয়ে প্রিয়াকে সাজাতে চাই।’

শুরু হলো গান: 
‘মোর প্রিয়া হবে এস রাণী, দেব খোঁপায় তারার ফুল/ কর্ণে দোলাব দ্বিতীয়া তিথির চৈতি চাঁদের দুল...’।

এরপর সে গানে বিজলি জরির ফিতায় মেঘ রং এলোচুল বাঁধার কথা আছে, রামধনু থেকে লাল রং এনে আলতা পরানোর কথা আছে, জোছনার সঙ্গে চন্দন দিয়ে গায়ে মাখানোর কথা আছে।

সবটা গেয়ে নজরুল বললেন, ‘কী মহারথীর দল, ক’টাকা লাগল প্রিয়াকে সাজাতে?’ 

সূত্র: আব্বাসউদ্দীন আহমদ, আমার শিল্পী জীবনের কথা, পৃষ্ঠা ১৮৬-৮৮

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

যুক্তরাষ্ট্রে পা রাখামাত্র পুতিনকে গ্রেপ্তারের আহ্বান

জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে উচ্চপদস্থ বোর্ড গঠন: আইএসপিআর

ফেসবুকে ছাত্রলীগ নেতার ‘হুমকি’, রাবিতে ১৫ আগস্টের কনসার্টে যাচ্ছে না আর্টসেল

পাবনায় প্রবাসীর স্ত্রীকে নিয়ে এএসআই উধাও, থানায় শ্বশুরের জিডি

সিঙ্গাপুরে স্থায়ী বসবাসের সুযোগ, আবেদন ফি মাত্র ৭ হাজার টাকা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত