Ajker Patrika

রাস্তা না গর্ত?

সম্পাদকীয়
রাস্তা না গর্ত?

পিরোজপুরের নেছারাবাদে মাত্র ৪০০ মিটার সড়ক মেরামতের জন্য বরাদ্দ হয়েছিল ২৬ লাখ টাকা। এই টাকার সিংহভাগই চলে গেছে অন্যদিকে। রাস্তার কাজে লাগেনি। মাত্র ১০ দিনের মাথায় মেরামত করা রাস্তাটি তার শরীরের সব জামা-কাপড় খুলে ন্যাংটো হয়ে গেছে! কেউ বুঝতে পারবে না, সদ্যই এ রাস্তাটি মেরামত করা হয়েছিল, এখন সেখানে বড় বড় গর্ত। রাস্তাটি গাড়ি-ঘোড়া চলাচলের উপযোগী নেই আর।

একটি রাস্তা তৈরি করা হলে এলাকার জীবনযাত্রা বদলে যায়, এ কথা নতুন নয়। প্রত্যেকেই প্রত্যাশা করে, তার নিজের এলাকায় উন্নয়নের ছোঁয়া লাগবে। সেই রাস্তা তৈরি বা মেরামতের জন্য বরাদ্দ করা টাকা-পয়সা যদি চুরি হয়, তাহলে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ আর কাটে না।

বেদনাদায়ক সত্য হলো, রাস্তাটির মেরামতের সময়ই বোঝা যাচ্ছিল, কাজটি ঠিকভাবে হচ্ছে না। যে নির্মাণসামগ্রী আনা হয়েছিল, তা ছিল নিম্নমানের। নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে মেরামত করলে যে কিছুদিনের মধ্যেই এই রাস্তার কোনো অস্তিত্ব থাকবে না, সেটা বুঝেছিল এলাকাবাসী। বুঝেছিলেন সাবেক পৌর মেয়রও।

স্বরূপকাঠির বর্তমান মেয়রও বলেছেন একই কথা। সবাই বুঝেছিলেন, ঠিকাদার আর সড়ক বিভাগের কিছু লোক এই অনিয়মের জন্য দায়ী। ফলে জনগণের দিক থেকে এসেছিল প্রতিবাদ। কিন্তু প্রতিবাদের মুখে রাতের অন্ধকারে যেনতেন উপায়ে রাস্তা মেরামতের কাজ শেষ করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এবং নির্বিঘ্নে হাতিয়ে নিয়েছে মেরামতের জন্য বরাদ্দ টাকা।

এরপর ১০ দিন না কাটতেই বৃষ্টির প্রাবল্যে রাস্তাটাও হয়ে গেছে বড় বড় গর্তের এক কিম্ভূত চিত্র। এই ২৬ লাখ টাকার মেরামতি কারবারটি যে শুধুই চোখে ধুলো দেওয়ার কারসাজি ছিল, সে কথা বুঝতে কষ্ট হয় না।

সরকার থেকে দাবি করা হয়, দেশে উন্নয়ন হচ্ছে। উন্নয়নের জন্য কাজ যে হচ্ছে, সেটা মিথ্যা নয়। কিন্তু সেই কাজ মানসম্পন্ন কি না, সেটা কে দেখবে? কারও কাছে জবাবদিহির ব্যবস্থা না থাকলে তো এই সব ঠিকাদার সরকারি অফিসের ঘোড়েল কর্মকর্তাদের সঙ্গে মিলেমিশে বরাদ্দ করা টাকা লোপাট করে দেবে। এখানে তাদের পকেট ভারী হবে বটে, কিন্তু এলাকায় এই উন্নয়ন কোনো কাজেই লাগবে না। আর তাতে ক্ষতি হবে উন্নয়নবিষয়ক সরকারি প্রচারের। সরকার পরিকল্পিতভাবেই বরাদ্দ দিচ্ছে, কিন্তু তা যে ঠিক জায়গায় ঠিকভাবে পৌঁছাচ্ছে না, সেটাই এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা।

আজকের পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদটিতে আরও একটি ভয়ানক সত্য উঠে এসেছে। এলাকার প্রায় সবাই লক্ষ করেছেন, রাস্তা মেরামতের কাজটি হচ্ছে নিম্নমানের। জনতা বাধা দিচ্ছে। কিন্তু এত নজরদারির মধ্যেও ঠিকাদার কিংবা ঠিকাদার-নিযুক্ত সাব-কন্ট্রাক্ট পাওয়া ঠিকাদার ঠিকই নিম্নমানের কাজ করে পালিয়ে যেতে পেরেছেন। এটাকে আমরা কী বলব? সচেতন মানুষ, সচেতন কর্তৃপক্ষ কেন রুখে দিতে পারল না এই কারসাজি? এভাবেই কি বারবার প্রতারিত হবে জনগণ?

এই ঠিকাদারকে দিয়ে নতুন করে রাস্তা মেরামত করতে বাধ্য করা হলেই কেবল এ ঘটনার সফল পরিসমাপ্তি ঘটবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

অপারেশন সিঁদুরে নিহত প্রায় দেড় শ সেনার তালিকা প্রকাশ করে মুছে ফেলল পাকিস্তানি টিভি

ঢাবিতে পাঁচ প্যানেলে ভোটের যুদ্ধ

দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে এনসিপির মাহিন সরকারকে বহিষ্কার

এনবিআর কর্মকর্তার কাণ্ড: কৃত্রিম অঙ্গের ঘোষণা দিয়ে ৪৫০ টন গয়না আমদানি

যুগ্ম সদস্যসচিব মাহিন সরকারকে বহিষ্কারের কারণ জানাল এনসিপি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত