Ajker Patrika

শিক্ষার্থীদের আন্দোলন অব্যাহত

ইবি প্রতিনিধি
আপডেট : ০৯ মার্চ ২০২২, ১৫: ৩২
শিক্ষার্থীদের আন্দোলন অব্যাহত

সেশনজট থেকে মুক্তির দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থীরা। বিভাগের কলাপসিবল গেটে তালা দিয়ে দ্বিতীয় দিনের মতো আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন তাঁরা। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিভাগের সামনে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তাঁদের ‘পর্যাপ্ত শিক্ষক চাই, সেশনজট মুক্ত বিভাগ চাই’ স্লোগান দিতে দেখা গেছে।

গত সোমবার থেকে দুই দফা দাবিতে আন্দোলনে নামেন পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থীরা। দাবিগুলো হলো পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ ও সেশনজট মুক্ত বিভাগ। আন্দোলনের প্রথম দিন প্রক্টর এসে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেন। তবে তিনি ব্যর্থ হন। দ্বিতীয় দিনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সামনে কেউ আসেননি।

জানা গেছে, পরিসংখ্যান বিভাগে ৭টি ব্যাচ চলমান। অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী বিভাগে ২০ শিক্ষক থাকার কথা, কিন্তু আছেন ১০ জন। এঁর মধ্যে পাঁচজন শিক্ষক আছেন শিক্ষা ছুটিতে। ফলে মাত্র পাঁচজন শিক্ষক দিয়ে ক্লাস-পরীক্ষা নিতে হচ্ছে।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা সেশনজট দূর করেই ক্লাসে ফিরব। আমাদের এ সমস্যা দীর্ঘ দিনের। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আন্দোলনে নেমেছি। শিক্ষক স্বল্পতার কারণে সেশনজটের গ্যাঁড়াকলে পড়ে আছি। আমরা ৭ দিনের মধ্যে সবকিছুর সমাধান চাই। এরপরও যদি সমাধান না হয়, আমরা কঠোর আন্দোলনে যাব।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘অনার্স শেষ করতে যেখানে ৪ বছর লাগার কথা, সেখানে আমাদের বিভাগে ৬ বছর লাগছে। করোনার কারণে এমনিতেই পিছিয়ে আছি। এরপর এমন সেশন জট থাকলে তো পড়াশোনা শেষ হওয়ার পর চাকরির বয়স থাকবে না। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছি সঠিক সময়ের মধ্যে পড়াশোনা সম্পন্ন করে চলে যাওয়ার জন্য। বছরের পর বছর সেশন জটে আটকে থাকার জন্য না। এখন আমাদের সেশন জট কমানো এবং নির্দিষ্ট সময়ে ক্লাস পরীক্ষা হওয়ার জন্য যা যা করণীয় তাই নিশ্চিত করতে হবে।’

পরিসংখ্যান বিভাগের সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘সেশনজট যেন প্রকট আকারে ধারণ না করে, সে জন্য আমরা বিভিন্ন বিভাগ ও অন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষক এনে পাঠদান অব্যাহত রেখেছি। আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি বিভাগকে সামনে এগিয়ে নেওয়ার জন্য। কয়েক দফায় বিভাগের শিক্ষকসংকট ও সেশনজট সমস্যার কথা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের আশ্বস্ত করেছে, পরবর্তী নিয়োগে পরিসংখ্যান বিভাগকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হবে। তবে কবে নাগাদ নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে সেটা নির্দিষ্ট করে জানাতে পারেনি আমাদের।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ‘পরিসংখ্যান বিভাগে আজও আন্দোলন চলছে, এটা জানা নেই। তবে ওই বিভাগের শিক্ষকেরা আসছিলেন শিক্ষক নিয়োগের ব্যাপারে। শিক্ষক নিয়োগ একটা দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। সেটা করতে সময় লাগবে। উপাচার্য ক্যাম্পাসে এলে প্রক্রিয়া শুরু হবে।’ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকসংকটকে কেন্দ্র করে, সেশনজটের আন্দোলন বৃহৎ আকারে ছড়িয়ে গেলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সেটা কীভাবে সামলাবে-জানতে চাইলে কোষাধ্যক্ষ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য বিভাগে একই সমস্যা থাকলে সেটা বিভাগের চেয়ারম্যান ও শিক্ষকেরা জানালে শিক্ষক নিয়োগ অটোমেটিক হবে।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘বিভাগ থেকে কিছুই জানায়নি। না জানালে আমরা যেতে পারি না। ক্যাম্পাসেই ছিলাম। গতকাল (সোমবার) জানিয়েছে, গিয়েছিলাম। আলোচনা করেছি। তবে সমাধান হয়নি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত