Ajker Patrika

পানির সুবিধা বিপদ ডেকে আনল কৃষকের

আক্কেলপুর (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৫ জানুয়ারি ২০২২, ১১: ৫৭
পানির সুবিধা বিপদ ডেকে আনল কৃষকের

জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার রুকিন্দীপুর ইউনিয়ন। এখানকার বেলতলির শ্রীখালের দুই পাশের জমিতে আবাদ হতো খালের পানি দিয়ে। তবে সেই খাল দীর্ঘদিন খনন না করায় সবসময় পানি থাকত না। খালে পানি ধরে রাখার জন্য দুই মাস আগে খনন করে জয়পুরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ড। এতেই সৃষ্টি হয় বিপত্তির। একদিকে পানির চাহিদা মিটে। তবে বিপদ বাঁধে খাল খননের মাটি নিয়ে। কারণ ওই মাটি ফেলা হয়েছে কৃষকের জমিতে। আর ওই মাটিতে ইট মিশ্রিত থাকায় ক্ষতির মুখে পড়ে স্থানীয় কৃষকেরা। এতে করে কৃষকদের ওই জমিতে এখন আর ফসল হচ্ছে না।

স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুই মাস আগে শ্রীখাল খনন করে জয়পুরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ড। খালের দুই পাশে জায়গা না থাকায় খননের মাটি ফেলা হয়েছিল দুই পাশের কৃষকের জমিতে। যাঁদের জমি নিচু ছিল, তাঁরা সেই মাটি দিয়ে সমতল করেছেন। আর যাঁদের জমি উঁচু, সেখানে মাটির স্তূপ করে রাখায় তাঁদের জমিতে ফসল হচ্ছে না। তাই সেই মাটি যে যাঁর মতো করে অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছেন। সরেজমিন দেখা গেছে, শ্রীখাল খননের পর সে মাটি পাশের কৃষকদের জমিতে স্তূপ করে রাখা হয়েছে। সেখানকার মাটি এক্সকাভেটর (মাটি কাটার যন্ত্র) দিয়ে কেটে ট্রাকে করে স্থানীয় লোকজন নিয়ে যাচ্ছেন।

কৃষক রশিদ সরদার বলেন, ‘খননের মাটি আমার জমিতে ফেলা হয়েছিল। ওই জমিতে আর কোনো ফসল হচ্ছে না। কেউ সেই মাটি সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন না।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ট্রাকচালক বলেন, ‘খননের মাটি মারুফ ও মিলান নিয়ে যাচ্ছেন। আমরা শুধু ট্রাকে করে নিয়ে যাচ্ছি, মাটিগুলো গ্রামের বিভিন্ন রাস্তায় ফেলা হচ্ছে।’ তবে মারুফ হোসেন বলেন, ‘স্থানীয় কৃষকের অনুরোধে কিছু মাটি ট্রাক দিয়ে সরিয়ে অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছি।’

আরেক কৃষক বেলাল হোসেন বলেন, খাল খননের মাটিতে কারও লাভ হয়েছে, কারও ক্ষতি হয়েছে। আমার পাশের জমির মালিকের লাভ হয়েছে। তিনি তাঁর জমির মাটি বিক্রি করেছেন অন্যত্র।

শ্রীখাল পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির সভাপতি আবু মোত্তালেব বলেন, প্রায় আট কিলোমিটার এলাকায় খাল খনন করা হয়। খননের সময় খালের দুই পাশের অংখ্য গাছ কেটে ফেলা হয়েছিল। সেই সঙ্গে অনেক কৃষকের জমির ফসল নষ্ট হয়। আবার খনন করা মাটিও কৃষকের জমিতে ফেলা হয়েছিল। এতে অনেক কৃষকের জমিতে আজও ফসল হয় না।

রুকিন্দীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আহসান কবির বলেন, খাল খননের ওই মাটিগুলোতেও ছিল ইট-বালু। মাটি নিয়ে অনেক বিপদের মুখে রয়েছেন ওই এলাকার কৃষকেরা। তাই যে যাঁর মতো করে মাটি নিয়ে যাচ্ছেন। ওই মাটি কেউ বিক্রি করছেন কি না—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন সেটি তাঁর জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।

এ বিষয়ে জয়পুরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী (পুর) শাখা কর্মকর্তা আব্দুল মমিন বলেন, ‘তুলশীগঙ্গা, ছোট যমুনা ও শ্রীখাল পুনর্খনন প্রকল্পের আওতায় শ্রীখালে পানির প্রবাহ এবং সেচকাজের জন্য পানি ধরে রাখতে খালটি পুনরায় খনন করা হয়। তবে খালটির দুই পাশে খননের মাটি ফেলার তেমন জায়গা ছিল না। সেই মাটি যদি কোনো কৃষক তাঁর জমিতে নিতে চান, নিতে পারবেন। অথবা সরকারি কোনো স্থাপনার কাজে ব্যবহার করা যাবে। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ওই মাটি অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার কোনো অনুমতি কাউকে দেয়নি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

লাহোরে পাল্টা আঘাত হেনে পাকিস্তানকে জবাব দিল ভারত

পাকিস্তানের চীনা জে-১০ দিয়ে ভারতের রাফাল যুদ্ধবিমান ধ্বংস, যুক্তরাষ্ট্রের কড়া নজরে এই টক্বর

আবদুল হামিদের দেশত্যাগে এবার কিশোরগঞ্জের এসপি প্রত্যাহার

একটি দলের ওপর ভরসার বিনিময়ে পেয়েছি অশ্বডিম্ব: মাহফুজ আলম

শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করে সংবাদ, খুলনায় পত্রিকা অফিসে আগুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত