Ajker Patrika

নিয়মের মধ্যে আনা হোক ইটভাটা

সম্পাদকীয়
আপডেট : ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৭: ২৪
নিয়মের মধ্যে আনা হোক ইটভাটা

আমাদের দেশে শহর ছাড়াও গ্রামে এখন আগের চেয়ে ইটের তৈরি বাড়িঘরের সংখ্যা অনেক বাড়ছে। মানুষের আয়-রোজগারও আগের তুলনায় বেড়েছে। এ কারণে স্থায়িত্বের কথা চিন্তা করে মানুষ কিছুটা কষ্ট হলেও পাকা বাড়ি নির্মাণ করছে। পাশাপাশি নগরায়ণের ফলে ইটের ব্যবহারও দিন দিন বেড়ে চলেছে। ইটভাটার জন্য দেশে আইন আছে। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ইটভাটা করার জন্য সেই আইন মানা হয় না। বিপদটা সেখানেই। ইট যেমন আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি পরিবেশ রক্ষা করা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। অনেক ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত লোকজন গাফিলতি করে কিংবা ঘুষ নিয়ে অবৈধ ইটভাটা করার অনুমতি দিয়ে থাকেন।

আজকের পত্রিকায় মঙ্গলবার ‘ইটভাটা গিলছে তাজা গাছ’ শিরোনামে একটি খবর প্রকাশিত হয়েছে।

প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, খুলনার পাইকগাছায় সরকারি অনুমতি ছাড়াই পরিচালিত হচ্ছে অধিকাংশ ইটভাটা। সেখানে জ্বালানি হিসেবে দেদার পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। আর ইটের কাঁচামাল হিসেবে কেটে আনা হচ্ছে কৃষিজমির উপরিভাগের উর্বর মাটি।

ইটভাটা স্থাপনসংক্রান্ত ‘ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন’ অনুযায়ী, লাইসেন্স ছাড়া ইটভাটা স্থাপনের সুযোগ নেই। লাইসেন্স ছাড়া কেউ ভাটা চালু করলে শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে। যেকোনো প্রতিষ্ঠান থেকে ১ কিলোমিটার এবং বনাঞ্চল থেকে ২ কিলোমিটার দূরত্বে ভাটা স্থাপনের বিধান থাকলেও তা অমান্য করে অল্প দূরত্বে এসব ভাটা স্থাপন করা হয়েছে।

ইট তৈরির প্রধান উপকরণ মাটি। এই মাটির জন্য কৃষকের ধানি জমিই প্রধান টার্গেট করেন ভাটামালিকেরা। আবার কৃষকেরা না বুঝে কিংবা নগদ টাকার লোভে ভবিষ্যতে বড় ক্ষতির কথা বিবেচনা না করে মাটি বিক্রি করেন। ধানি জমির ওপরের উর্বর অংশ তুলে নিলে ফসল উৎপাদনে মারাত্মক ক্ষতি হয়। এই ক্ষতি পূরণ হতে কয়েক বছর লেগে যায়।

পাশাপাশি ভাটায় কাঠ পোড়ানোর কারণে একদিকে যেমন পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে, তেমনি দেশের বনাঞ্চলের পরিমাণও কমে যাচ্ছে। কয়লার চেয়ে কাঠে ইট পোড়ালে খরচ কম হয়। তাই ভাটামালিকেরা তাঁদের লাভের দিক বিবেচনা করে পরিবেশের বড় ধরনের ক্ষতি করে চলেছেন।

আইন অনুযায়ী, ইট পোড়ানোর চিমনি অনেক উঁচু করে নির্মাণ করার কথা, যাতে চিমনি থেকে নির্গত দূষিত ধোঁয়া লোকালয়ে ছড়িয়ে পড়তে না পারে। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মালিকেরা মান্ধাতার আমলের ছোট চিমনি দিয়ে কাজ সারতে চান।

আধুনিক পদ্ধতিতে ইট তৈরি করলে পরিবেশদূষণ হওয়ার আশঙ্কা কম। দেশে এ-সংক্রান্ত আইন ও নির্দেশনাও আছে। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসনের দায়িত্বে অবহেলার কারণে নির্দেশনাগুলো কার্যকর করা যাচ্ছে না। এ জন্য প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো দরকার। এ ক্ষেত্রে স্থানীয় পরিবেশ অধিদপ্তর ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্ব অনেক বেশি। পরিবেশ রক্ষার জন্য ইটভাটাগুলো একটি নিয়মের মধ্যে আনতেই হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

‘ঘুষের জন্য’ ৯১টি ফাইল আটকে রাখেন মাউশির ডিডি: দুদক

রাখাইনে মানবিক করিডর কি প্রক্সি যুদ্ধের ফাঁদ হবে, ভারত-চীন কীভাবে দেখবে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত