মহিউদ্দিন খান মোহন

গত ২২ অক্টোবর খুলনায় বিএনপির সমাবেশের পর বিএনপির নেতা-কর্মীরা যখন উচ্ছ্বসিত, তখন একটি অত্যন্ত বেদনাদায়ক ঘটনা রয়ে গেছে লোকচক্ষুর অন্তরালে। আনন্দে উদ্বেল বিএনপির নেতা-কর্মীরা সে ঘটনার কথা সম্ভবত ভাবতেও পারছেন না। কেননা, ঘটনাটি ঘটেছে জনচক্ষুর অন্তরালে। যদিও এর শুরুটা হয়েছিল প্রকাশ্যেই।
সমাবেশের দুদিন আগে খুলনা মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি এবং অব্যাহতি পাওয়া সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মঞ্জু যখন সংবাদ সম্মেলন ডেকে ঘোষণা করলেন, তিনি তাঁর কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে সমাবেশে অংশগ্রহণ করবেন এবং সমাবেশকে সফল করতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাবেন, তখন তাঁর সমর্থকেরা উজ্জীবিত হয়েছিলেন নিঃসন্দেহে। দীর্ঘদিন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকার কারণে দেশের প্রায় সব জেলাতেই আমার কিছু পরিচিত নেতা-কর্মী রয়েছেন।
তেমনই একজন জানালেন, নজরুল ইসলাম মঞ্জু সমাবেশ সফল করতে সক্রিয় হওয়ার কথা ঘোষণা করার পর তাঁরা আশাবাদী হয়েছিলেন, অতীতের ভুল-বোঝাবুঝির অবসান ঘটিয়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এবার হয়তো তাঁকে দলে মর্যাদাপূর্ণ কোনো পদে আসীন করবেন। তাঁদের আশা ছিল, মঞ্জুকে নিশ্চয়ই সমাবেশ-মঞ্চে ডাকা হবে এবং দলের একজন পরীক্ষিত নেতা হিসেবে তাঁকে বক্তব্য রাখারও সুযোগ দেওয়া হবে। এ আশাতেই তাঁরা কয়েক হাজার লোকের একটি মিছিল নিয়ে সমাবেশে যোগ দিয়েছিলেন।
কিন্তু সমাবেশস্থলে যাওয়ার পরপরই তাদের সে আশার বেলুন চুপসে যায়। নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে মঞ্চে তো ডাকা হলোই না, এমনকি তিনি যে একটি বিশাল মিছিল নিয়ে সেখানে গেলেন, সে কথা একবারের জন্যও উচ্চারণ করা হলো না। হতাশ মঞ্জু-সমর্থকেরা সমাবেশ শেষে চুপচাপ যে যাঁর মতো চলে গেছেন।
নজরুল ইসলাম মঞ্জুর সংবাদ সম্মেলন করে সমাবেশে অংশগ্রহণের খবরে অনেকের মতো আমিও ভেবেছিলাম, যা-ই হয়ে থাকুক না কেন বিএনপির নেতৃত্ব হয়তো মঞ্জুর মতো নেতাকে পুনরায় সক্রিয় করার এ সুযোগ কাজে লাগাবেন। কিন্তু আমি ছিলাম ভ্রান্ত। এতে অবশ্য আমি খুব একটা অবাক হইনি।
কেননা, এমন ঘটনা বিএনপিতে অনেক ঘটেছে। ২০১২ কি ১৩ সালের কথা। ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা তখন বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত এবং কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও ঢাকা জেলার সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্ত। ওই সময় সুপ্রিম কোর্ট বার সমিতির নির্বাচন ঘনিয়ে আসছিল। এক রাতে টেলিভিশনের খবরে দেখলাম, ব্যারিস্টার হুদার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। টিভির খবরে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে তাঁর হাস্যোজ্জ্বল ছবিও দেখানো হলো। পরদিন সকালে ফোন করলাম নাজমুল হুদাকে।
তাঁর সঙ্গে আমার অন্তরঙ্গতা আগে থেকেই ছিল। বললাম, ‘বহিষ্কারাদেশ তো প্রত্যাহার করা হলো। কিন্তু আপনাকে স্বপদে পুনর্বহাল করেছে তো?’ এটাও বললাম, ‘ঢাকা জেলার সভাপতি পদ আর পাবেন না। কারণ ওটা আবদুল মান্নান সাহেবকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু ভাইস চেয়ারম্যান পদে পুনর্বহালের চিঠি হাতে নিয়ে বেরিয়েছেন তো ম্যাডামের অফিস থেকে?’ নাজমুল হুদা বললেন, ‘খালেদা জিয়ার একজন ব্যক্তিগত কর্মকর্তা ওটা পরে পাঠিয়ে দেবে বলেছে।’ আমি তাঁকে বললাম, ‘ভাই, জীবনে হয়তো অনেক ভুলই করেছেন।
তবে এবারেরটা চরম ভুল। ওই চিঠি আপনি আর কোনো দিনই পাবেন না।’ হুদা ভাই বিরক্ত হলেন কি না, জানি না। বললেন, ‘না না, ম্যাডামের সামনে “সে” বলেছে আমাকে।’ বললাম, ‘ভাই, নামের পেছনে “বিশ্বাস” থাকলেই যে তাকে বিশ্বাস করা যাবে—এমনটি কিন্তু নয়।’ নাজমুল হুদা দলের প্যানেলের পক্ষে জানপ্রাণ দিয়ে কাজ করলেন এবং বিএনপি জিতেও গেল। তবে ভাইস চেয়ারম্যান পদে পুনর্বহালের সে চিঠি তাঁর কাছে অধরাই রয়ে গেছে।

নজরুল ইসলাম মঞ্জু বিএনপির একজন পোড় খাওয়া নেতা। দলটির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে জড়িত রয়েছেন। তাঁর সাংগঠনিক দক্ষতা এবং উদ্ভূত পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার ক্ষমতা সম্বন্ধে অবগত হয়েছিলাম ২০০৭ সালে ভয়ংকর সিডরে ক্ষতিগ্রস্ত বাগেরহাট জেলার কয়েকটি এলাকায় ত্রাণ বিতরণ করতে গিয়ে। কী রকম প্রতিকূল পরিস্থিতিতে সরকারি সংস্থার শ্যেনদৃষ্টি এড়িয়ে তিনি আমাদের নির্বিঘ্নে ঢাকায় প্রত্যাবর্তনের ব্যবস্থা করেছিলেন, তা কোনো দিন ভুলতে পারব না।
সেই নজরুল ইসলাম মঞ্জুর সঙ্গে দলের এমন নিষ্ঠুর মশকরায় কষ্টই পেলাম। ফোন করলাম তাঁকে। জিজ্ঞেস করলাম, ‘সমাবেশে যোগ দেওয়ার ঘোষণা দিয়ে যে সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন, তা কার নির্দেশে?’ বললেন, ‘মহাসচিব আমাকে বলেছিলেন এটা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশ। তিনি এটাও বলেছিলেন, আমাকে যথাযথ সম্মান দেওয়া হবে। কিন্তু কী সম্মান দেওয়া হলো তা তো দেখলেন।’
মঞ্জু জানালেন, সমাবেশের পরে মহাসচিব তাঁকে ফোন করেছিলেন, তিনি রিসিভ করেননি। এরপর এসএমএস দিয়ে লিখেছেন, আবেগ-ক্ষোভ সংযত রাখতে। আমি বললাম, ‘ভাই, মহাসচিবকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। তিনি তো চলেন দলের “মালিক” এবং তাঁর অনুচরদের নির্দেশে। তিনি হয়তো বলেছিলেন আপনার কথা।
কিন্তু ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছ থেকে খুলনা বিএনপির লিজপ্রাপ্তরা সে কথায় হয়তো পাত্তা দেয়নি। কী আর করবেন, এটাকে ভাগ্যলিপি ভেবে মনকে প্রবোধ দিন। শুধু একটি কথা বলব আপনাকে, যদি মনে করেন বিএনপি এখন জিয়া-খালেদার বিএনপি আছে, তাহলে মস্ত ভুল করবেন। তাঁরা প্রবীণ এবং অভিজ্ঞদের মূল্যায়ন করতেন, যথাযোগ্য সম্মান দিতেন। আর এখন বিএনপিতে রাজনীতির চর্চা হয় না, হয় বেয়াদবির ওরিয়েন্টেশন।’ ভগ্ন-মনোরথে নজরুল ইসলাম মঞ্জু ‘থ্যাংকু’ বলে লাইন কেটে দিলেন।
এদিকে বিএনপির রংপুর মহাসমাবেশের দিন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ঢাকার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কথা শুনে মনে হচ্ছে কিছুদিনের মধ্যে তিনি বিএনপিতে যোগ দেবেন। কারণ তাঁর সাম্প্রতিক বক্তব্যে সেটা বোঝা যাচ্ছে।’ কোনো রাজনৈতিক দলের উচ্চপদস্থ একজন নেতা এমন বালখিল্য কথা বলতে পারেন, তা ছিল অনেকেরই ধারণার বাইরে। বিষয়টি কদিন ধরে রাজনৈতিক এবং পাড়া-মহল্লার আড্ডায় আলোচিত হচ্ছে। কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, ওবায়দুল কাদের কি রিজভীর কাছে তেমন কোনো বার্তা পাঠিয়েছেন? যদিও ওবায়দুল কাদের এখনো রিজভীর কথার প্রত্যুত্তর করেননি। তবে অচিরেই হয়তো তিনিও কোনো অমিয় বাণী হাজির করবেন।
সে যা-ই হোক। আমি ভাবছি অন্য কথা। লক্ষ করা যাচ্ছে, যেদিন বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ থাকে, সেদিনই রিজভী কোনো কারণ ছাড়াই নয়াপল্টনে প্রেস ব্রিফিং করছেন। কেন? এটা কি মহাসমাবেশের খবরকে মিডিয়ায় গৌণ করার প্রয়াস? কারণ আগেও দেখা গেছে, মহাসচিব মির্জা ফখরুল জাতীয় প্রেসক্লাব বা ডিআরইউ মিলনায়তনে বক্তৃতা দিচ্ছেন কিংবা গুলশান অফিসে সংবাদ সম্মেলন করছেন, একই সময়ে রিজভী নয়াপল্টনে প্রেস ব্রিফিং ডেকে সংবাদ সৃষ্টি করার চেষ্টা করছেন।
কেন যেন এটাকে মহাসচিবের সঙ্গে রিজভীর ঠান্ডা লড়াই মনে হয় আমার। কেননা, প্রচারিত আছে, রিজভী মহাসচিবকে প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবছেন এবং তাঁকে জনসমক্ষে অগুরুত্বপূর্ণ হিসেবে প্রতিপন্ন করার প্রয়াস চালাচ্ছেন। আরও লক্ষণীয়, রিজভী তাঁর প্রেস ব্রিফিংয়ে যে কথাগুলো বলছেন, গণসমাবেশে কেন্দ্রীয় নেতারা একই কথা বলে থাকেন। তো যে কথাগুলো সিনিয়র নেতারা সমাবেশে বলছেন, সেই একই কথা মিডিয়া ডেকে নয়াপল্টনে বসে রিজভীকে বলতে হবে কেন
বিষয়টি নিয়ে পুরোনো রাজনৈতিক এক সহকর্মীর সঙ্গে কথা বলেছিলাম। তিনি বললেন, ‘আপনি তো জানেন, এই লোকটি মিডিয়া-ক্রেজি। প্রতিদিন মিডিয়ায় তাঁর উপস্থিতি থাকতেই হবে। তাই কারণে-অকারণে সাংবাদিকদের ডেকে নানা রকম অভিনব তথ্য বিতরণ করেন। আবার কখনো কাকডাকা ভোরে অথবা কখনো গোধূলির আলো-আঁধারিতে ১৫-২০ জন কর্মী নিয়ে দলীয় অফিসের সামনের রাস্তায় খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে মিছিলও করেন। তিনি এটা বোঝেন না যে এতে তাঁর এবং দলের ভাবমর্যাদা ক্ষুণ্ন হচ্ছে। আর ওবায়দুল কাদের সম্পর্কে যা বলেছেন, তা কি কোনো সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ বলতে পারেন?’
বিএনপির ওই কর্মীর কথার কী জবাব দেব, তা ভেবে পাচ্ছিলাম না। রিজভীকে কখনো অসুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ মনে হয়নি। তবে সহকর্মীদের পেছন থেকে ল্যাং মারার অভ্যাসটি তাঁর পুরোনো। এটাকে মস্তিষ্কের অসুস্থতা না বলে বরং অসুস্থ মানসিকতা বলাই যুক্তিযুক্ত।
লেখক: সাংবাদিক ও রাজনীতি বিশ্লেষক

গত ২২ অক্টোবর খুলনায় বিএনপির সমাবেশের পর বিএনপির নেতা-কর্মীরা যখন উচ্ছ্বসিত, তখন একটি অত্যন্ত বেদনাদায়ক ঘটনা রয়ে গেছে লোকচক্ষুর অন্তরালে। আনন্দে উদ্বেল বিএনপির নেতা-কর্মীরা সে ঘটনার কথা সম্ভবত ভাবতেও পারছেন না। কেননা, ঘটনাটি ঘটেছে জনচক্ষুর অন্তরালে। যদিও এর শুরুটা হয়েছিল প্রকাশ্যেই।
সমাবেশের দুদিন আগে খুলনা মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি এবং অব্যাহতি পাওয়া সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মঞ্জু যখন সংবাদ সম্মেলন ডেকে ঘোষণা করলেন, তিনি তাঁর কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে সমাবেশে অংশগ্রহণ করবেন এবং সমাবেশকে সফল করতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাবেন, তখন তাঁর সমর্থকেরা উজ্জীবিত হয়েছিলেন নিঃসন্দেহে। দীর্ঘদিন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকার কারণে দেশের প্রায় সব জেলাতেই আমার কিছু পরিচিত নেতা-কর্মী রয়েছেন।
তেমনই একজন জানালেন, নজরুল ইসলাম মঞ্জু সমাবেশ সফল করতে সক্রিয় হওয়ার কথা ঘোষণা করার পর তাঁরা আশাবাদী হয়েছিলেন, অতীতের ভুল-বোঝাবুঝির অবসান ঘটিয়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এবার হয়তো তাঁকে দলে মর্যাদাপূর্ণ কোনো পদে আসীন করবেন। তাঁদের আশা ছিল, মঞ্জুকে নিশ্চয়ই সমাবেশ-মঞ্চে ডাকা হবে এবং দলের একজন পরীক্ষিত নেতা হিসেবে তাঁকে বক্তব্য রাখারও সুযোগ দেওয়া হবে। এ আশাতেই তাঁরা কয়েক হাজার লোকের একটি মিছিল নিয়ে সমাবেশে যোগ দিয়েছিলেন।
কিন্তু সমাবেশস্থলে যাওয়ার পরপরই তাদের সে আশার বেলুন চুপসে যায়। নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে মঞ্চে তো ডাকা হলোই না, এমনকি তিনি যে একটি বিশাল মিছিল নিয়ে সেখানে গেলেন, সে কথা একবারের জন্যও উচ্চারণ করা হলো না। হতাশ মঞ্জু-সমর্থকেরা সমাবেশ শেষে চুপচাপ যে যাঁর মতো চলে গেছেন।
নজরুল ইসলাম মঞ্জুর সংবাদ সম্মেলন করে সমাবেশে অংশগ্রহণের খবরে অনেকের মতো আমিও ভেবেছিলাম, যা-ই হয়ে থাকুক না কেন বিএনপির নেতৃত্ব হয়তো মঞ্জুর মতো নেতাকে পুনরায় সক্রিয় করার এ সুযোগ কাজে লাগাবেন। কিন্তু আমি ছিলাম ভ্রান্ত। এতে অবশ্য আমি খুব একটা অবাক হইনি।
কেননা, এমন ঘটনা বিএনপিতে অনেক ঘটেছে। ২০১২ কি ১৩ সালের কথা। ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা তখন বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত এবং কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও ঢাকা জেলার সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্ত। ওই সময় সুপ্রিম কোর্ট বার সমিতির নির্বাচন ঘনিয়ে আসছিল। এক রাতে টেলিভিশনের খবরে দেখলাম, ব্যারিস্টার হুদার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। টিভির খবরে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে তাঁর হাস্যোজ্জ্বল ছবিও দেখানো হলো। পরদিন সকালে ফোন করলাম নাজমুল হুদাকে।
তাঁর সঙ্গে আমার অন্তরঙ্গতা আগে থেকেই ছিল। বললাম, ‘বহিষ্কারাদেশ তো প্রত্যাহার করা হলো। কিন্তু আপনাকে স্বপদে পুনর্বহাল করেছে তো?’ এটাও বললাম, ‘ঢাকা জেলার সভাপতি পদ আর পাবেন না। কারণ ওটা আবদুল মান্নান সাহেবকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু ভাইস চেয়ারম্যান পদে পুনর্বহালের চিঠি হাতে নিয়ে বেরিয়েছেন তো ম্যাডামের অফিস থেকে?’ নাজমুল হুদা বললেন, ‘খালেদা জিয়ার একজন ব্যক্তিগত কর্মকর্তা ওটা পরে পাঠিয়ে দেবে বলেছে।’ আমি তাঁকে বললাম, ‘ভাই, জীবনে হয়তো অনেক ভুলই করেছেন।
তবে এবারেরটা চরম ভুল। ওই চিঠি আপনি আর কোনো দিনই পাবেন না।’ হুদা ভাই বিরক্ত হলেন কি না, জানি না। বললেন, ‘না না, ম্যাডামের সামনে “সে” বলেছে আমাকে।’ বললাম, ‘ভাই, নামের পেছনে “বিশ্বাস” থাকলেই যে তাকে বিশ্বাস করা যাবে—এমনটি কিন্তু নয়।’ নাজমুল হুদা দলের প্যানেলের পক্ষে জানপ্রাণ দিয়ে কাজ করলেন এবং বিএনপি জিতেও গেল। তবে ভাইস চেয়ারম্যান পদে পুনর্বহালের সে চিঠি তাঁর কাছে অধরাই রয়ে গেছে।

নজরুল ইসলাম মঞ্জু বিএনপির একজন পোড় খাওয়া নেতা। দলটির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে জড়িত রয়েছেন। তাঁর সাংগঠনিক দক্ষতা এবং উদ্ভূত পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার ক্ষমতা সম্বন্ধে অবগত হয়েছিলাম ২০০৭ সালে ভয়ংকর সিডরে ক্ষতিগ্রস্ত বাগেরহাট জেলার কয়েকটি এলাকায় ত্রাণ বিতরণ করতে গিয়ে। কী রকম প্রতিকূল পরিস্থিতিতে সরকারি সংস্থার শ্যেনদৃষ্টি এড়িয়ে তিনি আমাদের নির্বিঘ্নে ঢাকায় প্রত্যাবর্তনের ব্যবস্থা করেছিলেন, তা কোনো দিন ভুলতে পারব না।
সেই নজরুল ইসলাম মঞ্জুর সঙ্গে দলের এমন নিষ্ঠুর মশকরায় কষ্টই পেলাম। ফোন করলাম তাঁকে। জিজ্ঞেস করলাম, ‘সমাবেশে যোগ দেওয়ার ঘোষণা দিয়ে যে সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন, তা কার নির্দেশে?’ বললেন, ‘মহাসচিব আমাকে বলেছিলেন এটা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশ। তিনি এটাও বলেছিলেন, আমাকে যথাযথ সম্মান দেওয়া হবে। কিন্তু কী সম্মান দেওয়া হলো তা তো দেখলেন।’
মঞ্জু জানালেন, সমাবেশের পরে মহাসচিব তাঁকে ফোন করেছিলেন, তিনি রিসিভ করেননি। এরপর এসএমএস দিয়ে লিখেছেন, আবেগ-ক্ষোভ সংযত রাখতে। আমি বললাম, ‘ভাই, মহাসচিবকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। তিনি তো চলেন দলের “মালিক” এবং তাঁর অনুচরদের নির্দেশে। তিনি হয়তো বলেছিলেন আপনার কথা।
কিন্তু ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছ থেকে খুলনা বিএনপির লিজপ্রাপ্তরা সে কথায় হয়তো পাত্তা দেয়নি। কী আর করবেন, এটাকে ভাগ্যলিপি ভেবে মনকে প্রবোধ দিন। শুধু একটি কথা বলব আপনাকে, যদি মনে করেন বিএনপি এখন জিয়া-খালেদার বিএনপি আছে, তাহলে মস্ত ভুল করবেন। তাঁরা প্রবীণ এবং অভিজ্ঞদের মূল্যায়ন করতেন, যথাযোগ্য সম্মান দিতেন। আর এখন বিএনপিতে রাজনীতির চর্চা হয় না, হয় বেয়াদবির ওরিয়েন্টেশন।’ ভগ্ন-মনোরথে নজরুল ইসলাম মঞ্জু ‘থ্যাংকু’ বলে লাইন কেটে দিলেন।
এদিকে বিএনপির রংপুর মহাসমাবেশের দিন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ঢাকার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কথা শুনে মনে হচ্ছে কিছুদিনের মধ্যে তিনি বিএনপিতে যোগ দেবেন। কারণ তাঁর সাম্প্রতিক বক্তব্যে সেটা বোঝা যাচ্ছে।’ কোনো রাজনৈতিক দলের উচ্চপদস্থ একজন নেতা এমন বালখিল্য কথা বলতে পারেন, তা ছিল অনেকেরই ধারণার বাইরে। বিষয়টি কদিন ধরে রাজনৈতিক এবং পাড়া-মহল্লার আড্ডায় আলোচিত হচ্ছে। কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, ওবায়দুল কাদের কি রিজভীর কাছে তেমন কোনো বার্তা পাঠিয়েছেন? যদিও ওবায়দুল কাদের এখনো রিজভীর কথার প্রত্যুত্তর করেননি। তবে অচিরেই হয়তো তিনিও কোনো অমিয় বাণী হাজির করবেন।
সে যা-ই হোক। আমি ভাবছি অন্য কথা। লক্ষ করা যাচ্ছে, যেদিন বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ থাকে, সেদিনই রিজভী কোনো কারণ ছাড়াই নয়াপল্টনে প্রেস ব্রিফিং করছেন। কেন? এটা কি মহাসমাবেশের খবরকে মিডিয়ায় গৌণ করার প্রয়াস? কারণ আগেও দেখা গেছে, মহাসচিব মির্জা ফখরুল জাতীয় প্রেসক্লাব বা ডিআরইউ মিলনায়তনে বক্তৃতা দিচ্ছেন কিংবা গুলশান অফিসে সংবাদ সম্মেলন করছেন, একই সময়ে রিজভী নয়াপল্টনে প্রেস ব্রিফিং ডেকে সংবাদ সৃষ্টি করার চেষ্টা করছেন।
কেন যেন এটাকে মহাসচিবের সঙ্গে রিজভীর ঠান্ডা লড়াই মনে হয় আমার। কেননা, প্রচারিত আছে, রিজভী মহাসচিবকে প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবছেন এবং তাঁকে জনসমক্ষে অগুরুত্বপূর্ণ হিসেবে প্রতিপন্ন করার প্রয়াস চালাচ্ছেন। আরও লক্ষণীয়, রিজভী তাঁর প্রেস ব্রিফিংয়ে যে কথাগুলো বলছেন, গণসমাবেশে কেন্দ্রীয় নেতারা একই কথা বলে থাকেন। তো যে কথাগুলো সিনিয়র নেতারা সমাবেশে বলছেন, সেই একই কথা মিডিয়া ডেকে নয়াপল্টনে বসে রিজভীকে বলতে হবে কেন
বিষয়টি নিয়ে পুরোনো রাজনৈতিক এক সহকর্মীর সঙ্গে কথা বলেছিলাম। তিনি বললেন, ‘আপনি তো জানেন, এই লোকটি মিডিয়া-ক্রেজি। প্রতিদিন মিডিয়ায় তাঁর উপস্থিতি থাকতেই হবে। তাই কারণে-অকারণে সাংবাদিকদের ডেকে নানা রকম অভিনব তথ্য বিতরণ করেন। আবার কখনো কাকডাকা ভোরে অথবা কখনো গোধূলির আলো-আঁধারিতে ১৫-২০ জন কর্মী নিয়ে দলীয় অফিসের সামনের রাস্তায় খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে মিছিলও করেন। তিনি এটা বোঝেন না যে এতে তাঁর এবং দলের ভাবমর্যাদা ক্ষুণ্ন হচ্ছে। আর ওবায়দুল কাদের সম্পর্কে যা বলেছেন, তা কি কোনো সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ বলতে পারেন?’
বিএনপির ওই কর্মীর কথার কী জবাব দেব, তা ভেবে পাচ্ছিলাম না। রিজভীকে কখনো অসুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ মনে হয়নি। তবে সহকর্মীদের পেছন থেকে ল্যাং মারার অভ্যাসটি তাঁর পুরোনো। এটাকে মস্তিষ্কের অসুস্থতা না বলে বরং অসুস্থ মানসিকতা বলাই যুক্তিযুক্ত।
লেখক: সাংবাদিক ও রাজনীতি বিশ্লেষক

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত ২২ অক্টোবর খুলনায় বিএনপির সমাবেশের পর বিএনপির নেতা-কর্মীরা যখন উচ্ছ্বসিত, তখন একটি অত্যন্ত বেদনাদায়ক ঘটনা রয়ে গেছে লোকচক্ষুর অন্তরালে। আনন্দে উদ্বেল বিএনপির নেতা-কর্মীরা সে ঘটনার কথা সম্ভবত ভাবতেও পারছেন না
০৬ নভেম্বর ২০২২
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

গত ২২ অক্টোবর খুলনায় বিএনপির সমাবেশের পর বিএনপির নেতা-কর্মীরা যখন উচ্ছ্বসিত, তখন একটি অত্যন্ত বেদনাদায়ক ঘটনা রয়ে গেছে লোকচক্ষুর অন্তরালে। আনন্দে উদ্বেল বিএনপির নেতা-কর্মীরা সে ঘটনার কথা সম্ভবত ভাবতেও পারছেন না
০৬ নভেম্বর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

গত ২২ অক্টোবর খুলনায় বিএনপির সমাবেশের পর বিএনপির নেতা-কর্মীরা যখন উচ্ছ্বসিত, তখন একটি অত্যন্ত বেদনাদায়ক ঘটনা রয়ে গেছে লোকচক্ষুর অন্তরালে। আনন্দে উদ্বেল বিএনপির নেতা-কর্মীরা সে ঘটনার কথা সম্ভবত ভাবতেও পারছেন না
০৬ নভেম্বর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

গত ২২ অক্টোবর খুলনায় বিএনপির সমাবেশের পর বিএনপির নেতা-কর্মীরা যখন উচ্ছ্বসিত, তখন একটি অত্যন্ত বেদনাদায়ক ঘটনা রয়ে গেছে লোকচক্ষুর অন্তরালে। আনন্দে উদ্বেল বিএনপির নেতা-কর্মীরা সে ঘটনার কথা সম্ভবত ভাবতেও পারছেন না
০৬ নভেম্বর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫