Ajker Patrika

ডেঙ্গু কি প্রতিরোধ অযোগ্য

সম্পাদকীয়
ডেঙ্গু কি প্রতিরোধ অযোগ্য

দেশের এবং দেশের বাইরে কিছু কিছু খবর প্রকাশিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হইচই হতে দেখা যায়। কিন্তু ডেঙ্গুতে মানুষের মৃত্যু সেভাবে অনেকের নজর কাড়ছে না। অনেকের কাছে এটা কোনো খবরও মনে হচ্ছে না। বর্ষা মৌসুম শেষ হওয়ার পর ডেঙ্গু পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার কথা। কিন্তু এবার তেমন কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।

রোববার আজকের পত্রিকায় ‘ঢাকার বাইরে ডেঙ্গু ছড়াচ্ছে এডিস অ্যালবোপিকটাস’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এডিস অ্যালবোপিকটাস মশার কারণেই ঢাকার বাইরে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ছে। পত্রিকার আরও একটি সংবাদ থেকে জানা যাচ্ছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ১২ জন মারা গেছে। আর চলতি বছর ডেঙ্গুতে এ পর্যন্ত ১ হাজার ৫৯৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।

কয়েক বছর ধরে ডেঙ্গু শুধু ঢাকা শহরের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল, কিন্তু এ বছর তা গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। বাংলাদেশ এ বছর ডেঙ্গুতে সংক্রমণ ও মৃত্যুর দিক থেকে বিশ্বে তৃতীয় স্থানে রয়েছে। মূলত মশকনিধন কার্যক্রম এবং চিকিৎসা ব্যবস্থাপনার ব্যর্থতা এ জন্য দায়ী।

ডেঙ্গুর সংক্রমণ এ বছর অস্বাভাবিক পর্যায়ে পৌঁছানোর আগে জুনে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণার কথা বলেছিলেন জনস্বাস্থ্যবিদেরা। কিন্তু তাঁদের সেই সতর্ক বার্তাকে আমলে নেওয়ার গরজ করেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ফলে ডেঙ্গু পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক হয়ে ওঠেনি। এখনো ভোগান্তি ও বিশাল অঙ্কের চিকিৎসা ব্যয়ের বোঝা বইতে হচ্ছে নাগরিকদের। অনেক পরিবারকে তাদের সন্তান হারাতে হয়েছে। কিন্তু সেই শোকে অন্তত সমবেদনাটুকু নিয়েও পাশে দাঁড়ানোর প্রয়োজনীয়তা বোধ করেনি দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ।

দায়িত্বপ্রাপ্তদের দায়সারা কাজ, আত্মতুষ্টি, স্থানীয় সরকার ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যকার সমন্বয়হীনতা দৃর করার বিষয়টি কেন গুরুত্ব পেল না? ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কোনোভাবেই নিজ নিজ দায় এড়াতে পারে না। কয়েক বছর ধরে ডেঙ্গু অস্বাভাবিক পর্যায়ে থাকার পরও সরকার কেন তা মোকাবিলার একটি সফল পদ্ধতি নিতে পারল না? এই প্রশ্নের জবাব খোঁজা জরুরি।

ডেঙ্গু যেহেতু কীটবাহিত রোগ, সেহেতু এটাকে স্বাভাবিক পর্যায়ে আনতে হলে রোগ ও কীট দুটোকেই নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। যারা ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন, সেই দলে যদি কীটতত্ত্ববিদসহ কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন বিশেষজ্ঞ না থাকেন, তাহলে কাঙ্ক্ষিত সুফল পাওয়ার ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা থাকাটাই স্বাভাবিক।

অভিজ্ঞতা থেকে মানুষ শিক্ষা নেয়, যাতে করে ভবিষ্যতের দুর্যোগ সফলভাবে মোকাবিলা করা যায়। কিন্তু আত্মতুষ্টি, প্রদর্শন প্রবণতা, দায় চাপানোর জায়গা থেকে বেরিয়ে না এলে শুধু অভিজ্ঞতা দিয়ে কিছু শেখা যায় না, তার বড় একটি উদাহরণ ডেঙ্গু পরিস্থিতি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং কীটতত্ত্ববিদদের পরামর্শ মেনে ডেঙ্গু মোকাবিলায় কার্যক্রম গ্রহণ করা হলে প্রাণঘাতী এই রোগ প্রতিরোধে সুফল পাওয়া যেত।মানুষের জীবন রক্ষায় বছরব্যাপী কার্যক্রম গ্রহণ করতে না পারলে, ভবিষ্যতেও ডেঙ্গু আমাদের জন্য সমস্যা হয়েই থাকবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চাকরির নামে মিরপুর-শেওড়াপাড়ায় বাসায় ডেকে নারীর সঙ্গে ভিডিও ধারণের পর টাকা হাতিয়ে নিত ‘হানি ট্র্যাপ’ চক্র

দনবাস চান পুতিন—ন্যাটো তো নয়ই, পশ্চিমা সেনাও থাকবে না ইউক্রেনে

দুস্থদের ৩৪ লাখ টাকা নিয়ে লাপাত্তা মোহনগঞ্জ সমাজসেবা কর্মকর্তা

তথ্য যাচাইয়ের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করবেন—ইউটিউব চ্যানেলে সিইসির বার্তা

ফরিদপুরে চিকিৎসকের ওপর হামলার প্রতিবাদে সেবা বন্ধের ঘোষণা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত