Ajker Patrika

আনন্দ দিচ্ছে বিষণ্ন পেলিক্যান

রাতুল মণ্ডল, শ্রীপুর (গাজীপুর) 
আপডেট : ০৩ জানুয়ারি ২০২২, ১০: ৩০
আনন্দ দিচ্ছে বিষণ্ন পেলিক্যান

এখানের সবাই বেশ প্রাণবন্ত। বেষ্টনীর বাইরে দাঁড়িয়ে দর্শনার্থীরা আনন্দ নিচ্ছেন। আর ভেতরে ধনেশ, কালিম, সোয়ান ও ক্রাউন ক্রেইনদের সুখী পরিবার। টুনটুনির বাসায়ও এসেছে নতুন ছানা। দাপিয়ে বেড়াচ্ছে কবুতরের দল। তবে সব ছাপিয়ে এক পাখি নজরে আসবে। একদম স্থির হয়ে বসে আছে এটি, মাঝেমধ্যেই আবার উচ্চ শব্দে রেগে ডাকাডাকি করে দাঁড়িয়ে যাচ্ছে পাখিটি। গাজীপুরের শ্রীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের নিঃসঙ্গ এ পাখির নাম পেলিক্যান।

সম্প্রতি সাফারি পার্কের ধনেশ অ্যাভিয়ারিতে সরেজমিনে দেখা যায়, বিষণ্ন পেলিক্যানের ছোটাছুটি আর রাগ দর্শনার্থীদের মুগ্ধতার কেন্দ্রবিন্দু। তবে আক্ষেপও আছে। দেবদাসের বিরহ নিয়ে যেমন তাদের দুঃখ হয়, তেমনি সঙ্গীহীন এ পেলিক্যানের একাকিত্বও তাদের কষ্ট দেয়। অনেকেরই দাবি, নতুন করে সংসার গোছানোর সুযোগ দেওয়া হোক পাখিটিকে।

পার্কের দর্শনার্থী তানিয়া বলেন, ‘শিশুসন্তান নিয়ে পার্কে এসেছি। বিচিত্র এই পেলিক্যানকে দেখে বাচ্চারা খুবই আনন্দ পেয়েছে। তবে পাখিটির একাকিত্ব আমাকে কষ্ট দিচ্ছে। সীমানাপ্রাচীরের কাছাকাছি চলে আসায় এর বিষণ্ন চেহারা আমার চোখে পড়েছে।’

পার্কটির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মো. তবিবুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিশাল আকারের জলজ পাখি গ্রেট হোয়াইট পেলিক্যান। ইউরোপ ও আমেরিকার হ্রদ ও সাগরের কাছাকাছি স্থানে এদের বসবাস। দর্শনার্থীদের বিনোদনের জন্য ২০১৪ সালে প্রথমবারের মতো আমাদের দেশে দুটি পেলিক্যান পাখি আনা হয়। ২০১৭ সালের প্রথম দিকে অসুস্থ হয়ে স্ত্রী পেলিক্যানটি মারা যায়। সেই থেকে একাকিত্ব জীবন শুরু হয় পুরুষটির। উড়ে গিয়ে যে কারও সঙ্গে ভাব জমাবে, তার সুযোগও নেই।’

সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, পেলিক্যানের বড় ঠোঁটের জন্য এরা বিখ্যাত। হলদে ঠোঁটের নিচে থাকে একটি থলি, যার মধ্যে এরা খাবার জমিয়ে রাখে। মাছ এ পাখির প্রধান খাদ্য। জলাশয়ের ধারে শিকারের সন্ধানে এদের বসার ভঙ্গি খুবই বৈচিত্র্যময়। পেলিক্যান প্রায় দেড় মিটার লম্বা হয়। এদের ছোট পা দুটির আঙুলগুলো পরস্পরের সঙ্গে জোড়া লাগানো। খাবার শিকারের সময় এরা জলাশয়ে ছোঁ মেরে পানিসহ মাছ উঠিয়ে নিয়ে যায়। পরে মাছকে নিজের থলিতে ঢুকিয়ে পানি ছেড়ে দেয়। পানিতে ভালো সাঁতারও কাটতে পারে বিদেশি এ পাখি। এরা ঝাঁক বেঁধে ভ্রমণে বের হতে পছন্দ করে।

দর্শনার্থী মিথিলা বলেন, ‘সাদা বকের মতো দেখতে এই পাখিটি দেখে খুবই ভালো লাগছে। পাখিটি হাঁ করলে মনে হয় আস্ত মানুষই ভেতরে চলে যাবে! তবে শান্ত পাখিটি দেখতে খুবই মিষ্টি।’

সাফারি পার্কের ওয়াইল্ড লাইফ সুপার ভাইজার সরোয়ার হোসেন খান জানান, ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের গোদাবরী নদীর তীরেও অনেক ধূসর পেলিক্যান দেখা যায়। এরা ঘণ্টায় প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ মাইল বেগে উড়তে পারে। উড়ন্ত অবস্থায় ২৫ থেকে ৪০ ফুট নিচের পানিতে শিকার দেখতে পায়। সুবিধামতো শিকার পেলে প্রচণ্ড গতিতে ঝাঁপিয়ে পড়ে এরা।

পার্কের এসিএফ মো. তবিবুর বলেন, ‘পেলিক্যানের একাকিত্ব দূর করতে শিগগির এর জন্য সঙ্গী আনার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে আপাতত পর্যটকেরা এটিকে দেখে ভালোই বিনোদন পাচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিজের প্রস্রাব পান করে ‘আশিকি’ অভিনেত্রী অনু আগারওয়াল বললেন, ‘আহা অমৃত’

মে. জে. ফজলুরের সেভেন সিস্টার্স দখলের মন্তব্য সমর্থন করে না সরকার: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

গায়ে কেরোসিন ঢেলে কলেজছাত্রীর আত্মহনন, পলাতক ইমাম গ্রেপ্তার

পাথরঘাটায় তিন শিক্ষকের ওপর হামলার‌ অভিযোগ শ্রমিক দল নেতার বিরুদ্ধে

সাধারণ যাত্রীদের ভোগান্তি এড়াতে বিমানের নিয়মিত ফ্লাইটে দেশে ফিরবেন খালেদা জিয়া

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত