Ajker Patrika

আ.লীগের ভরাডুবি অন্তর্কোন্দলে

জসিম উদ্দিন, নীলফামারী
আপডেট : ১৭ নভেম্বর ২০২১, ১৬: ৫০
আ.লীগের ভরাডুবি অন্তর্কোন্দলে

দ্বিতীয় ধাপে নীলফামারী সদর উপজেলার ১১ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা নৌকা প্রতীক নিয়ে মাত্র দুটিতে জয় পেয়েছেন। এমন ফলাফলে হতাশ দলের প্রার্থী, নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা। তাঁরা নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী ও তৃণমূলের দ্বন্দ্বকেই দায়ী করেছেন। এর আগে ২০১৬ সালের নির্বাচনে ৯টি ইউপিতে জয় পেয়েছিলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা

দলীয় সূত্র জানায়, এবারের ইউপি নির্বাচনে দলের প্রার্থী বাছাই করে কেন্দ্রে নাম পাঠায় উপজেলা আওয়ামী লীগ। তবে চূড়ান্ত তালিকায় মনোনয়ন না পাওয়ায় বঞ্চিত প্রার্থীদের অনুসারীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। দলের সিদ্ধান্তের বাইরে তাঁরা নির্বাচনে অংশ নেন। কয়েকটি ইউপিতে দলের একাধিক প্রার্থী নির্বাচন করেছেন। ফলে কর্মী ও ভোটারেরা বিভক্ত হয়ে পড়েন। ভোট ভাগাভাগির কারণে নির্বাচনে অংশ নেওয়া অন্য রাজনৈতিক দলের বা রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নয়, এমন প্রার্থীরাই জয়লাভ করেছেন।

পরাজয়ের এমন কারণের কথা স্বীকার করে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মমতাজুল হক জানান, বহিষ্কারের বিষয়টি কেন্দ্রীয় কমিটির। স্থানীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী থাকলে কর্মী ও ভোটার বিভক্ত হবেই। এরপরও ইউপি নির্বাচনে ফল বিপর্যয়ের কারণ বিশ্লেষণ করে সমস্যাগুলো কাটিয়ে ওঠার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যাতে আগামী নির্বাচনগুলোতে এর প্রভাব না পড়ে।

সোনারায় ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের তৃণমূলের কর্মী সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা নিজেরাই শ্রম দিয়ে নৌকার পক্ষে কাজ করি। কিন্তু এবার দলের বিভক্তি দেখে আমরাই বিভ্রান্ত হয়েছি। তৃণমূলের ভোটে যাকে নৌকার মাঝি করেছি, তিনি নৌকা পাননি। আর যাঁকে নৌকা দেওয়া হয়েছে, তিনি ভোটারদের কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি নন। তা ছাড়া ইউনিয়ন কৃষক লীগের আহ্বায়ক স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেছেন। স্বভাবতই নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ভোটারও বিভক্ত হয়ে গেছেন।’

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা কার্যালয় সূত্র জানায়, সদর উপজেলার ১৫টি ইউপির মধ্যে ১১টিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মামলা জটিলতায় বাকি চারটি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। যেগুলোয় নির্বাচন হয়েছে, তার মধ্যে দুটিতে আওয়ামী লীগ, একটিতে (বিএনপি) স্বতন্ত্র, একটিতে (জামায়াত) স্বতন্ত্র, তিনটিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ও চারটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। এর মধ্যে একটিতে জামানত হারিয়েছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী।

চেয়ারম্যানরা হলেন, গোড়গ্রাম ইউনিয়নে মাহবুব জর্জ নৌকা প্রতীক নিয়ে ৪ হাজার ৩৫৪, সংগলশী ইউনিয়নে মোস্তাফিজার রহমান নৌকা প্রতীক নিয়ে ৬ হাজার ৫৯৬, পঞ্চপুকুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান ওয়াহেদুল ইসলাম ঘোড়া প্রতীক নিয়ে ৪ হাজার ৫০৬, রামনগর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী সাবেক চেয়ারম্যান ওবায়দুল ইসলাম মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে ৮ হাজার ৪৩৭, চওড়াবড়গাছা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আবুল খায়ের বিটু চশমা প্রতীক নিয়ে ৪ হাজার ৮১৬, সোনারায় ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী ইউনিয়ন (বিএনপি) নুরুল ইসলাম শাহ্ আনারস প্রতীক নিয়ে ৮ হাজার ৫৩৪, চাপড়া সরমজানী ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী (জামায়াত) জাহাঙ্গীর আলম শাহ ফকির চশমা প্রতীক নিয়ে ৫ হাজার ১৫৯, কচুকাটা ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুর রউফ চশমা প্রতীক নিয়ে ৬ হাজার ১৩৯, পলাশবাড়ি ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী ইব্রাহিম তালুকদার আনারস প্রতীক নিয়ে ৫ হাজার ১৬৮, লক্ষ্মীচাপ ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান স্বতন্ত্র প্রার্থী আমিনুর রহমান আনারস প্রতীক নিয়ে ৬ হাজার ৫৬ ও চড়াইখোলা ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী মাসুম রেজা মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে ৫ হাজার ২২৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন।

পঞ্চপুকুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে পরাজিত আওয়ামী লীগ প্রার্থী নুরল আমিন সরকার জানান, দলের বিদ্রোহী হিসেবে আরও দুজন নির্বাচন করেছেন। আওয়ামী লীগের কর্মী ও ভোটাররা কতজনকে ভোট দেবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পাইপলাইনে জ্বালানি পরিবহন: ৩৪ হাজার লিটার ঘাটতি যমুনার প্রথম পার্সেলে

চিকিৎসক হওয়ার আগেই শীর্ষ সবার শীর্ষে

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে লতিফ সিদ্দিকী অবরুদ্ধ, নেওয়া হলো পুলিশি হেফাজতে

রূপপুর পরমাণু কেন্দ্র পরিদর্শনের পর যা জানাল আইএইএর বিশেষজ্ঞ দল

আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত সাবেক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী, ঢাবি শিক্ষক কার্জনসহ ১১ জন ডিবি হেফাজতে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত