Ajker Patrika

হাওরে ভরসা ভাড়ার মোটরসাইকেল

বরুণ কান্তি সরকার, নাসিরনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)
আপডেট : ২৬ এপ্রিল ২০২২, ১৪: ৪৬
হাওরে ভরসা ভাড়ার মোটরসাইকেল

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের হাওরবেষ্টিত গোয়ালনগর ইউনিয়নে শুষ্ক মৌসুমে যাতায়াতের একমাত্র ভরসা ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেল। বর্ষা মৌসুমে স্থানীয় বাসিন্দারা নৌকায় যাতায়াত করলেও শুষ্ক মৌসুমে কাঁচা সড়কে তাঁদের একমাত্র ভরসা এই মোটরসাইকেল।

উপজেলা সদর থেকে গোয়ালনগর ইউনিয়নের ১০ কিলোমিটার দূরত্বের প্রথম তিন কিলোমিটার পৌঁছাতে রিকশা কিংবা হেঁটে যাতায়াত করা গেলেও বাকি সাত কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হয় মোটরসাইকেলে। এতে শিশু, বৃদ্ধ, মহিলা ও গর্ভবতীদের সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা সদর থেকে গোয়ালনগর ইউনিয়নের দূরত্ব ১০ কিলোমিটার। এই ইউনিয়নে প্রায় ১৭ হাজার মানুষের চলাচল অনেকটাই সহজ করে দিয়েছে ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল। তবে উপজেলার সঙ্গে সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও অবহেলিত এই ইউনিয়নের রাস্তাঘাট উন্নয়নে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বর্ষার মৌসুমে নৌকা দিয়ে যাতায়াত করলেও শুষ্ক মৌসুমে বাইকে চলাচলে শিশু, বৃদ্ধ, মহিলা ও গর্ভবতী মহিলাদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।

জানা গেছে, গোয়ালনগর ইউনিয়নের ৩০-৪০ বছর বয়সী প্রায় ৫০ জন যুবক এই পেশায় জড়িত। তাঁরা বছরের সাত-আট মাস মোটরসাইকেল চালান। আবার বর্ষা মৌসুম এলেই পেশা পরিবর্তন করেন। মোটরসাইকেলের চালকেরা প্রায় ১২ বছর ধরে এই পেশায় জড়িত থেকে পরিবারের ভরণপোষণ করছেন। ফলে আয়ের পাশাপাশি তৈরি হয়েছে কর্মসংস্থান।

রাস্তাঘাট কর্দমাক্ত ও চলাচলের উপযোগী হওয়ার বিষয়ে গোয়ালনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজহারুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের এলাকা নিচু হওয়ায় চলাচলের উপযোগী রাখার জন্য সারা বছরই মাটি দিয়ে রাস্তা মেরামতের কাজ চলমান থাকে। এখনো কাজ চলছে। তবে যাঁরা মোটরসাইকেল চালান, তাঁদের কারণে আমাদের অনেক উপকার হচ্ছে।’

সরেজমিন দেখা গেছে, সাধারণ জনগণের আসা-যাওয়াকে কেন্দ্র করে গোয়ালনগর ইউনিয়নের ভিটাডুবী নোয়াহাটির নিকটে লঙ্ঘন নদীর তীরে মোটরসাইকেলের একটা নির্ধারিত স্ট্যান্ড গড়ে উঠেছে। নদীপাড় থেকে গোয়ালনগর বাজার এনে দিলে একজন আরোহী ৫০-৬০ টাকা করে দেন। তবে ভাড়া বেশি নিয়ে স্থানীয়দের ক্ষোভ থাকলেও বিকল্প যানবাহন না থাকায় একেই তাঁরা স্বাভাবিকভাবেই মেনে নিয়েছে।

ভিটাডুবী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মিটু বিশ্বাস জানান, স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে মোটরসাইকেলের চালকদের মোবাইল নম্বর সংরক্ষিত থাকে। কোথাও যাওয়ার জন্য প্রয়োজন হলে মোবাইলে কল করলে চালকেরা বাড়িতে ছুটে যান।

নোয়াগাঁও গ্রামের মোটরসাইকেল চালক প্রদীপ চন্দ্র দাশ (৪০) বলেন, ‘আমার পরিবারের সদস্য সংখ্যা ছয়জন। আমিই একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি। প্রতিদিন মোটরসাইকেল চালিয়ে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা উপার্জন করতে পারি। তবে গ্রামে মেলা বা অনুষ্ঠান থাকলে আমাদের আয় বেশি হয়।’

মোটরসাইকেলের চালক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মিলন হোসেন (৩৬) বলেন, ‘আমি মোটরসাইকেলের স্ট্যান্ড হওয়ার শুরু থেকেই এই পেশায় জড়িত। রাস্তাঘাট কাঁচা ও অনেক জায়গায় বিশেষ করে বৃষ্টির দিনে কর্দমাক্ত হওয়ায় মোটরসাইকেল চালাতে আমাদের কষ্ট করতে হয়। তবে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় আমাদের আয়-রোজগার কমে গেছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

পিটুনিতে নিহত সেই শামীম মোল্লাকে বহিষ্কার করল জাবি প্রশাসন, সমালোচনার ঝড়

চিন্ময় দাসের জামিন স্থগিতের আবেদন, শুনানি রোববার

মধুপুরে বিদ্যালয়ে ঢুকে শিক্ষককে জুতাপেটা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত