Ajker Patrika

স্কুল বড় করতে গাছের বাধা

কুমারখালী (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৭ অক্টোবর ২০২১, ১৩: ৫৫
স্কুল বড় করতে গাছের বাধা

কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার চারটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণকাজে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বড় বড় গাছ। ভবন নির্মাণের নির্ধারিত স্থানে গাছগুলো থাকায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করতে পারেনি।

ইতিমধ্যে তিনটি কাজের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। বাকি একটি কাজের মেয়াদ আছে আর মাত্র দুই মাস। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন উপজেলা প্রকৌশলী মো. আব্দুর রহিম।

উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্র জানায়, চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি (পিইডিপি-৪) প্রকল্পর আওতায় উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের মাজগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একটা ভবন নির্মাণের অনুমোদন দেয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। দরপত্রের মাধ্যমে কাজটি সম্পাদনের জন্য ২০২০ সালের ১৭ নভেম্বর চুক্তিবদ্ধ হয় কুষ্টিয়ার আলামপুর এলাকার সৈকত এন্টার প্রাইজ।

উন্নয়নকাজের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৩ লাখ ৪২ হাজার ২৯ টাকা এবং চুক্তিমূল্য ৭২ লাখ ৯১ হাজার ৯৪৭ টাকা। চুক্তি অনুযায়ী ২০২০ সালের ২৪ নভেম্বর কাজ শুরু হয়ে চলতি বছরের ২৩ আগস্ট শেষ করার কথা ছিল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের।

কিন্তু ভবন নির্মাণের নির্ধারিত স্থানে বড় একটি বটের গাছ থাকায় মেয়াদ শেষ হলেও এখনো কাজ শুরু করতে পারেননি ঠিকাদার। ফলে বিদ্যালয়ে ভবন নির্মাণ বা উন্নয়নের কাজ ঝুলে আছে।

উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্র আরও জানায়, ২০২০ সালের ১৫ ডিসেম্বর পাথরবাড়িয়া ও শেখপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বাউন্ডারি নির্মাণকাজের মেয়াদ শেষ হয়েছে। কিন্তু নির্ধারিত স্থানের গাছ অপসারণ না হওয়ায় এখন নির্মাণকাজ শুরু করতে পারেননি ঠিকাদার। প্রায় ২৮ লাখ ৩৩ হাজার ৫৩৭ টাকা প্রাক্কলিত ও ২৪ লাখ ৬৪ হাজার ৮৬০ টাকা চুক্তিমূল্যে এ কাজটির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার মো. আয়েজ উদ্দিন।

জানা গেছে, প্রায় ৯৬ লাখ ৫১ হাজার ৭৩৬ টাকা প্রাক্কলিত ও ৭৯ লাখ ৯৮ হাজার ৯৪২ টাকা চুক্তিমূল্যে উপজেলার চাদুপর ইউনিয়নের জংগলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অতিরিক্ত ক্লাসরুম উন্নয়নের অনুমোদন দেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল কর্তৃপক্ষ।

উন্নয়নকাজের জন্য চলতি বছরের ১৩ এপ্রিল দরপত্রের মাধ্যমে চুক্তিবদ্ধ হয় কুষ্টিয়া থানাপাড়ার মেসার্স মুন কনস্ট্রাকশন। এ বছরের ২০ এপ্রিল কাজ শুরু হয়ে আগামী বছর ৪ জানুয়ারি কাজ শেষ করার কথা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের। এ কাজের মেয়াদ বাকি আর মাত্র দুই মাস। কিন্তু উন্নয়নকাজের স্থানে গাছ থাকায় এখনো কাজ শুরু করতে পারেনি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মো. আব্দুর রহিম বলেন, ‘বিদ্যালয়ের গাছ অপসারণ না হওয়ায় প্রায় ২ কোটি টাকার উন্নয়নকাজ ঝুলে আছে। ইতিমধ্যে দুটি প্রকল্পের মেয়াদও শেষ হয়ে গেছে, কিন্তু কাজ শুরু হয়নি। শিক্ষা অফিসকে বারবার তাগিদ দিয়েও কোনো লাভ হয়নি।’

এ বিষয়ে মাজগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মতিয়ার রহমান বলেন, ‘বিদ্যালয়ে ৪১০ জন শিক্ষার্থী। দুটি ভবন আছে। আরও একটি ভবন নির্মাণ হওয়ার কথা। কিন্তু গাছের কারণে কাজ শুরু হয়নি। বিদ্যালয়ের জমি সংকট থাকায় গাছ কাটা ছাড়া ভবন নির্মাণ সম্ভব নয়। একটি বটগাছ ও দুটি মেহগনি গাছ বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা খন্দকার শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘বিদ্যালয়ের গাছ কর্তনের নির্দিষ্ট নীতিমালা রয়েছে। বেশ কিছু প্রসেসিংও আছে। আমরা নিয়ম মেনে গাছ কর্তনের ব্যবস্থার জন্য চেষ্টা করছি।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিতান কুমার মন্ডল বলেন, ‘গাছের জন্য উন্নয়নকাজ ঝুলে আছে, এমন বিষয় আমার জানা নেই। শিক্ষা অফিস কিছু জানায়নি। খোঁজ নিয়ে দেখা হবে বিষয়টি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত