আব্দুর রাজ্জাক
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) প্রতিটি বিভাগীয় শহরে পর্যায়ক্রমে মহাসমাবেশ করছে। বিএনপির রাজনীতিতে যখন ভাটার টান চলছিল, কোনো দিকেই কোনো কূলকিনারা করতে পারছিল না, তখনই তারা ঢাকায় একটি সমাবেশ থেকে প্রতিটি বিভাগে মহাসমাবেশের ডাক দেয়।
গত দুই মাসে রাজপথের আন্দোলন-সংগ্রামের আগে বিএনপির তেমন কোনো কার্যক্রম চোখে পড়ার মতো ছিল না। বিএনপির পক্ষ থেকে ১৪ বছর যাবৎ ধারাবাহিকভাবে বলা হচ্ছিল যে ‘আন্দোলন হবে ঈদের পরে’। রাজনৈতিক সচেতন মহল ও সাধারণ মানুষ এটাকে মজা করে বলত, বিএনপির আন্দোলন ঈদের পরে, শুধু ঊহ্য থাকত কোন ঈদের পরে, সেই তারিখটা।
২০১৩ ও ২০১৪ সালে বিএনপি নির্বাচন ভন্ডুল করার জন্য কিছু জ্বালাও-পোড়াও করেছে, ভোটকেন্দ্রসহ পাঁচ শতাধিক স্কুলঘর পুড়িয়েছে, বাসে আগুন দিয়েছে, পেট্রলবোমাসহ কিছু সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করেছে। এসব কর্মকাণ্ড ছিল লোকচক্ষুর অন্তরালে, অর্থাৎ প্রকাশ্যে মিটিং-মিছিল না করে সন্ত্রাসী কায়দায় আন্দোলন-সংগ্রাম করেছিল দলটি। ২০১৫ সালে ৯৩ দিন তারা অবরোধের নামে জ্বালা-পোড়াও পেট্রলবোমা মারাসহ প্রচুর যানবাহনে আগুন দিয়েছে, শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটিয়েছে, অগ্নিদগ্ধ হয়েছে পাঁচ শতাধিক মানুষ।
বিএনপি অবশ্য স্বীকার করে তারা অবরোধ ডেকেছে; যে কথাটি স্বীকার করে না তা হলো, তাদের এই অবরোধের ফলে বিএনপির এবং জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা এই কাণ্ডগুলো ঘটিয়েছে। বিএনপির নেতাদের কাছে যদি প্রশ্ন করা হয়, ‘অবরোধ ডেকেছেন আপনারা, এই কাণ্ড ঘটিয়েছে কারা?’ তখন তাদের উত্তর হয়, ‘আমরা অবরোধ ডেকেছি, জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সেটা পালন করেছে, আমরা জ্বালাও-পোড়াওয়ের মধ্যে নাই।’ সাধারণ মানুষ যা বোঝার বুঝে নিয়েছে।
ছয় মাস আগেও রাজনৈতিক সচেতন ব্যক্তিরা বলাবলি করছিল, বিএনপির অবস্থা মনে হয় মুসলিম লীগের মতো হবে। গত কয়েক সপ্তাহে বিএনপি জানান দেওয়ার চেষ্টা করেছে তারা মুসলিম লীগ হবে না। তাদের নেতা-কর্মীদের চাঙা করার জন্য মহাসমাবেশের ডাক দিয়ে এ কথাটাই দেশবাসীকে জানিয়ে দিয়েছে।
মহাসমাবেশে লোকসমাগম হবে, কারণ আওয়ামী লীগবিরোধী একটা সেন্টিমেন্ট এ দেশে বরাবরই আছে। সেই আওয়ামী লীগবিরোধী সেন্টিমেন্টের লোকজন সব সময়ই বিএনপিকে ঘিরে তাদের মতামত প্রচার করে যাচ্ছে। এটা একটা স্বাভাবিক রাজনৈতিক প্রক্রিয়া, সরকারি দলের বিপরীতে বিরোধী দল থাকবে, ভিন্ন মত থাকবে, তারা তাদের কথা বলবে—রাজপথে বলবে, বিভিন্ন সভা-সমাবেশ করে বলবে। এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য।
বিএনপি চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, খুলনা, রংপুর, বরিশাল ও ফরিদপুরে মহাসমাবেশ করেছে। সর্বশক্তি প্রয়োগ করে, লোকসমাগম করে তাদের শক্তির জানান দেওয়ার চেষ্টা করছে; অর্থাৎ সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে চাইছে এই বলে যে ‘আমরা হারিয়ে যাইনি’। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে এটাই তাদের কৌশল।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, মহাসমাবেশে তাদের সাধ্যমতো লোকসমাগম করবে—এটা স্বাভাবিক, কিন্তু বিভিন্ন বিভাগে যেদিন মহাসমাবেশ হবে তার আগের দিন থেকে পরিবহন ধর্মঘট ডাক দেওয়া হয় মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ব্যানারে। এই ঐক্য পরিষদের ব্যানারে ধর্মঘট ডাকার ফলে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়, সরকার এবং সরকারের প্রশাসনযন্ত্র তাদের মহাসমাবেশ বাধাগ্রস্ত করার জন্য সুপরিকল্পিতভাবে এই ধর্মঘট ডাকে। সরকারি দলের পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা কিছু জানে না, পরিবহন মালিক-শ্রমিকেরা তাদের জানমাল রক্ষার্থে স্বতঃস্ফূর্তভাবে এ ধর্মঘট ডাকে।
বিএনপি এই সুযোগে সমাবেশের আগের দুই দিনসহ সমাবেশের দিন পর্যন্ত বিভিন্ন কূটকৌশল অবলম্বন করছে। যে কৌশলটা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রকাশ পাচ্ছে। যেমন ধরুন, কলাগাছের ভেলায় করে তিন-চারজন লোক জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবিসংবলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে মহাসমাবেশে যোগদানের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। এই কলাগাছের ভেলার ছবি বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশ পাচ্ছে। এটা যে সম্পূর্ণ পরিকল্পিত বানানো, বিএনপি প্রচার পাওয়ার জন্য এ কাজটি করছে, এটা সবাই একবাক্যে হয়তো মেনে নেবেন।
আবার মহাসমাবেশ শুরু হওয়ার দুদিন আগে সমাবেশস্থলে এসে রান্না করে খাওয়ার দৃশ্য সামাজিক মাধ্যমে প্রচার পাচ্ছে। এটাও একটি সুপরিকল্পিত প্রচার পাওয়ার ক্ষেত্র; অর্থাৎ বিএনপি বোঝাতে চাইছে, তাদের সমাবেশ বাধাগ্রস্ত করার ক্ষমতা কারও নেই। তাদের নিবেদিত একনিষ্ঠ কর্মীরা কলাগাছের ভেলায় করে, দূরদূরান্ত থেকে হেঁটে শত বাধাবিপত্তি উপেক্ষা করে দুই-তিন দিন আগেই সমাবেশস্থলে এসে বীরের মতো জমায়েত হবেই হবে। বিভিন্ন প্রচারমাধ্যম এটাকে ফলাও করে প্রচার করে। বিএনপির নেতারা এসব করে সাধারণ নেতা-কর্মীদের কিছুটা হলেও চাঙা করতে পারছেন। তাঁরা বোঝাতে চাইছেন, তাঁদের দলে অনেক ত্যাগী নেতা-কর্মী আছেন। বলতে চাইছেন, ‘তোমরা সবাই চাঙা হও, আমরা আমাদের দাবি আদায় করবই।’
মোদ্দাকথা, পরিবহন ধর্মঘট ছাড়া মহাসমাবেশ হলে হয়তো লোকসমাগম যা হয় তার চেয়ে ৫ হাজার বেশি হতো। কিন্তু পরিবহন ধর্মঘটের ফলে প্রতিটি মহাসমাবেশ ঘিরে তিন থেকে চার দিন বিএনপি আলোচনায় থাকছে, তাদের মহাসমাবেশের বিভিন্ন দিক নিয়ে তিন-চার দিন মিডিয়ায় প্রচার পাচ্ছে। সঙ্গে বিএনপি যেটা চাইছে—সাধারণ মানুষের সহানুভূতি, কিছুটা হলেও সেই সহানুভূতি বিএনপির ওপর বাড়ছে। বিএনপি ও তার নেতা-কর্মীরা কলাগাছের নাটক, সমাবেশস্থলে পিকনিকের আমেজের নাটক, হেঁটে বিভিন্ন তরিকা অবলম্বন করে সমবেত স্থানে পৌঁছার নাটক ভালোভাবেই করে যাচ্ছে। এসব নাটক মঞ্চস্থ করার সুযোগ করে দিয়েছে আওয়ামী লীগের একটি অংশ, যারা পরিবহন মালিক-শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে সরাসরি জড়িত।
সাধারণ মানুষ বলাবলি করতে শুরু করেছে, বিএনপির মহাসমাবেশ এক দিন করতে দেওয়া হোক, পরিবহন ধর্মঘটের নামে তাদের মহাসমাবেশ বাধাগ্রস্ত করার কৌশল থেকে বের হয়ে আসুক। পরিবহন ধর্মঘটের কৌশল কিছুটা হলেও ম্রিয়মাণ হচ্ছে বিএনপির নানা ধরনের বিকল্প উদ্যোগের কারণে। এককথায় বলতে গেলে, এ ধরনের ঘটনায় বিএনপি তিন থেকে চার দিন প্রচারণার মূলে থাকছে। তাই সচেতন মহল মনে করে, পরিবহন ধর্মঘট না ডেকে আওয়ামী লীগও যেন বিএনপির তুলনায় বড় করে পাল্টা সমাবেশ করে; অর্থাৎ রাজনীতিকে মোকাবিলা করতে হবে রাজনীতি দিয়ে, কোনো অপকৌশল দিয়ে নয়।
বঙ্গবন্ধু সারা জীবন রাজনীতি করেছেন জনগণকে সঙ্গে নিয়ে, কোনো কূটকৌশল অবলম্বন করে নয়। বঙ্গবন্ধু বিভিন্ন ঘাত-প্রতিঘাত মোকাবিলা করেছেন জনগণকে সঙ্গে নিয়ে, আন্দোলন-সংগ্রাম করে। আশা করি, আওয়ামী লীগও জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সব ধরনের বাধাবিপত্তি, কূটকৌশল, অপকৌশল উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধুর মতো তাদের রাজনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
লেখক: প্রকৌশলী
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) প্রতিটি বিভাগীয় শহরে পর্যায়ক্রমে মহাসমাবেশ করছে। বিএনপির রাজনীতিতে যখন ভাটার টান চলছিল, কোনো দিকেই কোনো কূলকিনারা করতে পারছিল না, তখনই তারা ঢাকায় একটি সমাবেশ থেকে প্রতিটি বিভাগে মহাসমাবেশের ডাক দেয়।
গত দুই মাসে রাজপথের আন্দোলন-সংগ্রামের আগে বিএনপির তেমন কোনো কার্যক্রম চোখে পড়ার মতো ছিল না। বিএনপির পক্ষ থেকে ১৪ বছর যাবৎ ধারাবাহিকভাবে বলা হচ্ছিল যে ‘আন্দোলন হবে ঈদের পরে’। রাজনৈতিক সচেতন মহল ও সাধারণ মানুষ এটাকে মজা করে বলত, বিএনপির আন্দোলন ঈদের পরে, শুধু ঊহ্য থাকত কোন ঈদের পরে, সেই তারিখটা।
২০১৩ ও ২০১৪ সালে বিএনপি নির্বাচন ভন্ডুল করার জন্য কিছু জ্বালাও-পোড়াও করেছে, ভোটকেন্দ্রসহ পাঁচ শতাধিক স্কুলঘর পুড়িয়েছে, বাসে আগুন দিয়েছে, পেট্রলবোমাসহ কিছু সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করেছে। এসব কর্মকাণ্ড ছিল লোকচক্ষুর অন্তরালে, অর্থাৎ প্রকাশ্যে মিটিং-মিছিল না করে সন্ত্রাসী কায়দায় আন্দোলন-সংগ্রাম করেছিল দলটি। ২০১৫ সালে ৯৩ দিন তারা অবরোধের নামে জ্বালা-পোড়াও পেট্রলবোমা মারাসহ প্রচুর যানবাহনে আগুন দিয়েছে, শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটিয়েছে, অগ্নিদগ্ধ হয়েছে পাঁচ শতাধিক মানুষ।
বিএনপি অবশ্য স্বীকার করে তারা অবরোধ ডেকেছে; যে কথাটি স্বীকার করে না তা হলো, তাদের এই অবরোধের ফলে বিএনপির এবং জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা এই কাণ্ডগুলো ঘটিয়েছে। বিএনপির নেতাদের কাছে যদি প্রশ্ন করা হয়, ‘অবরোধ ডেকেছেন আপনারা, এই কাণ্ড ঘটিয়েছে কারা?’ তখন তাদের উত্তর হয়, ‘আমরা অবরোধ ডেকেছি, জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সেটা পালন করেছে, আমরা জ্বালাও-পোড়াওয়ের মধ্যে নাই।’ সাধারণ মানুষ যা বোঝার বুঝে নিয়েছে।
ছয় মাস আগেও রাজনৈতিক সচেতন ব্যক্তিরা বলাবলি করছিল, বিএনপির অবস্থা মনে হয় মুসলিম লীগের মতো হবে। গত কয়েক সপ্তাহে বিএনপি জানান দেওয়ার চেষ্টা করেছে তারা মুসলিম লীগ হবে না। তাদের নেতা-কর্মীদের চাঙা করার জন্য মহাসমাবেশের ডাক দিয়ে এ কথাটাই দেশবাসীকে জানিয়ে দিয়েছে।
মহাসমাবেশে লোকসমাগম হবে, কারণ আওয়ামী লীগবিরোধী একটা সেন্টিমেন্ট এ দেশে বরাবরই আছে। সেই আওয়ামী লীগবিরোধী সেন্টিমেন্টের লোকজন সব সময়ই বিএনপিকে ঘিরে তাদের মতামত প্রচার করে যাচ্ছে। এটা একটা স্বাভাবিক রাজনৈতিক প্রক্রিয়া, সরকারি দলের বিপরীতে বিরোধী দল থাকবে, ভিন্ন মত থাকবে, তারা তাদের কথা বলবে—রাজপথে বলবে, বিভিন্ন সভা-সমাবেশ করে বলবে। এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য।
বিএনপি চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, খুলনা, রংপুর, বরিশাল ও ফরিদপুরে মহাসমাবেশ করেছে। সর্বশক্তি প্রয়োগ করে, লোকসমাগম করে তাদের শক্তির জানান দেওয়ার চেষ্টা করছে; অর্থাৎ সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে চাইছে এই বলে যে ‘আমরা হারিয়ে যাইনি’। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে এটাই তাদের কৌশল।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, মহাসমাবেশে তাদের সাধ্যমতো লোকসমাগম করবে—এটা স্বাভাবিক, কিন্তু বিভিন্ন বিভাগে যেদিন মহাসমাবেশ হবে তার আগের দিন থেকে পরিবহন ধর্মঘট ডাক দেওয়া হয় মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ব্যানারে। এই ঐক্য পরিষদের ব্যানারে ধর্মঘট ডাকার ফলে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়, সরকার এবং সরকারের প্রশাসনযন্ত্র তাদের মহাসমাবেশ বাধাগ্রস্ত করার জন্য সুপরিকল্পিতভাবে এই ধর্মঘট ডাকে। সরকারি দলের পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা কিছু জানে না, পরিবহন মালিক-শ্রমিকেরা তাদের জানমাল রক্ষার্থে স্বতঃস্ফূর্তভাবে এ ধর্মঘট ডাকে।
বিএনপি এই সুযোগে সমাবেশের আগের দুই দিনসহ সমাবেশের দিন পর্যন্ত বিভিন্ন কূটকৌশল অবলম্বন করছে। যে কৌশলটা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রকাশ পাচ্ছে। যেমন ধরুন, কলাগাছের ভেলায় করে তিন-চারজন লোক জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবিসংবলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে মহাসমাবেশে যোগদানের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। এই কলাগাছের ভেলার ছবি বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশ পাচ্ছে। এটা যে সম্পূর্ণ পরিকল্পিত বানানো, বিএনপি প্রচার পাওয়ার জন্য এ কাজটি করছে, এটা সবাই একবাক্যে হয়তো মেনে নেবেন।
আবার মহাসমাবেশ শুরু হওয়ার দুদিন আগে সমাবেশস্থলে এসে রান্না করে খাওয়ার দৃশ্য সামাজিক মাধ্যমে প্রচার পাচ্ছে। এটাও একটি সুপরিকল্পিত প্রচার পাওয়ার ক্ষেত্র; অর্থাৎ বিএনপি বোঝাতে চাইছে, তাদের সমাবেশ বাধাগ্রস্ত করার ক্ষমতা কারও নেই। তাদের নিবেদিত একনিষ্ঠ কর্মীরা কলাগাছের ভেলায় করে, দূরদূরান্ত থেকে হেঁটে শত বাধাবিপত্তি উপেক্ষা করে দুই-তিন দিন আগেই সমাবেশস্থলে এসে বীরের মতো জমায়েত হবেই হবে। বিভিন্ন প্রচারমাধ্যম এটাকে ফলাও করে প্রচার করে। বিএনপির নেতারা এসব করে সাধারণ নেতা-কর্মীদের কিছুটা হলেও চাঙা করতে পারছেন। তাঁরা বোঝাতে চাইছেন, তাঁদের দলে অনেক ত্যাগী নেতা-কর্মী আছেন। বলতে চাইছেন, ‘তোমরা সবাই চাঙা হও, আমরা আমাদের দাবি আদায় করবই।’
মোদ্দাকথা, পরিবহন ধর্মঘট ছাড়া মহাসমাবেশ হলে হয়তো লোকসমাগম যা হয় তার চেয়ে ৫ হাজার বেশি হতো। কিন্তু পরিবহন ধর্মঘটের ফলে প্রতিটি মহাসমাবেশ ঘিরে তিন থেকে চার দিন বিএনপি আলোচনায় থাকছে, তাদের মহাসমাবেশের বিভিন্ন দিক নিয়ে তিন-চার দিন মিডিয়ায় প্রচার পাচ্ছে। সঙ্গে বিএনপি যেটা চাইছে—সাধারণ মানুষের সহানুভূতি, কিছুটা হলেও সেই সহানুভূতি বিএনপির ওপর বাড়ছে। বিএনপি ও তার নেতা-কর্মীরা কলাগাছের নাটক, সমাবেশস্থলে পিকনিকের আমেজের নাটক, হেঁটে বিভিন্ন তরিকা অবলম্বন করে সমবেত স্থানে পৌঁছার নাটক ভালোভাবেই করে যাচ্ছে। এসব নাটক মঞ্চস্থ করার সুযোগ করে দিয়েছে আওয়ামী লীগের একটি অংশ, যারা পরিবহন মালিক-শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে সরাসরি জড়িত।
সাধারণ মানুষ বলাবলি করতে শুরু করেছে, বিএনপির মহাসমাবেশ এক দিন করতে দেওয়া হোক, পরিবহন ধর্মঘটের নামে তাদের মহাসমাবেশ বাধাগ্রস্ত করার কৌশল থেকে বের হয়ে আসুক। পরিবহন ধর্মঘটের কৌশল কিছুটা হলেও ম্রিয়মাণ হচ্ছে বিএনপির নানা ধরনের বিকল্প উদ্যোগের কারণে। এককথায় বলতে গেলে, এ ধরনের ঘটনায় বিএনপি তিন থেকে চার দিন প্রচারণার মূলে থাকছে। তাই সচেতন মহল মনে করে, পরিবহন ধর্মঘট না ডেকে আওয়ামী লীগও যেন বিএনপির তুলনায় বড় করে পাল্টা সমাবেশ করে; অর্থাৎ রাজনীতিকে মোকাবিলা করতে হবে রাজনীতি দিয়ে, কোনো অপকৌশল দিয়ে নয়।
বঙ্গবন্ধু সারা জীবন রাজনীতি করেছেন জনগণকে সঙ্গে নিয়ে, কোনো কূটকৌশল অবলম্বন করে নয়। বঙ্গবন্ধু বিভিন্ন ঘাত-প্রতিঘাত মোকাবিলা করেছেন জনগণকে সঙ্গে নিয়ে, আন্দোলন-সংগ্রাম করে। আশা করি, আওয়ামী লীগও জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সব ধরনের বাধাবিপত্তি, কূটকৌশল, অপকৌশল উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধুর মতো তাদের রাজনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
লেখক: প্রকৌশলী
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
৩ দিন আগেপাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
৩ দিন আগেভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে দুই চিরবৈরী প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনার পারদ ক্রমেই চড়ছিল। তা তুঙ্গে উঠল এবার পাকিস্তানের ভূখণ্ডে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলা দিয়ে। পাশাপাশি সীমান্তেও দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে...
৩ দিন আগেঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি বেড়েই চলছে। এ কারণে চালক ও যাত্রীদের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছে এই সড়ক। ডাকাতির শিকার বেশি হচ্ছেন প্রবাসফেরত লোকজন। ডাকাতেরা অস্ত্র ঠেকিয়ে লুট করে নিচ্ছে সর্বস্ব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়েও ঘটছে ডাকাতির ঘটনা।
০২ মার্চ ২০২৫