Ajker Patrika

সমাজসংস্কারক মুহাম্মদ (সা.)

ড. এ এন এম মাসউদুর রহমান
সমাজসংস্কারক মুহাম্মদ (সা.)

মহানবী (সা.) সামাজিক ক্ষেত্রে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধন করেন। মানবতার ভিত্তিতে তিনি সমাজ গঠন করেন। ছোট-বড়, ধনী-গরিব, রাজা-প্রজা, আমির-ফকির সবাইকে এক কাতারে শামিল করেন। তিনি বলেন, ‘নিশ্চয়ই তোমাদের প্রভু এক, তোমাদের বাবা এক। আরবের ওপরে অনারবের, অনারবের ওপরে আরবের, কালো বর্ণের ওপরে গৌরবর্ণের এবং গৌরবর্ণের ওপরে কালো বর্ণের শ্রেষ্ঠত্ব নেই—কেবল খোদাভীতি ছাড়া।’ (তাবারানি)

সেকালে নারীকে ভোগ্য সামগ্রী মনে করা হতো। পশুপাখির মতো তাদের বিক্রি করা হতো। কন্যাসন্তান জন্মদান অত্যন্ত অপমানজনক মনে করা হতো। অপমান থেকে বাঁচার জন্য তারা কন্যাসন্তানকে জীবন্ত কবর দিত। কারও স্ত্রী কন্যাসন্তান প্রসব করলে, তার মুখ কালো হতো। সে সমাজের চিত্র তুলে ধরে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর যখন তাদের কাউকে কন্যাসন্তানের সুসংবাদ দেওয়া হয়; তখন তার চেহারা কালো হয়ে যায়। আর সে দুঃখ ভারাক্রান্ত হয়।’ (সুরা নাহল: ৫৮)

মহানবী (সা.) কন্যা হিসেবে, স্ত্রী হিসেবে, মা হিসেবে নারীর অধিকার নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘নারীদের ব্যাপারে তোমরা আল্লাহকে ভয় করো। নিশ্চয়ই তোমরা তাদের আল্লাহর আমানত হিসেবে গ্রহণ করেছ এবং আল্লাহর কালিমার মাধ্যমে তাদের লজ্জাস্থান তোমাদের জন্য হালাল করেছ।’ (আবু দাউদ)

সে সময় মদ ও জুয়াকে নৈমিত্তিক বিষয় মনে করা হতো। মহানবী (সা.) অধঃপতিত সমাজকে নতুনভাবে ঢেলে সাজান এবং মদ-জুয়া চিরতরে নিষিদ্ধ করেন। এ ছাড়া মহানবী (সা.) তাদের দাসপ্রথার মূলে কুঠারাঘাত করেন। ব্যভিচারের মূলোৎপাটন করার জন্য শাস্তি নির্ধারণ করেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর তোমরা ব্যভিচারের কাছে যেয়ো না, নিশ্চয়ই তা অশ্লীল কাজ ও মন্দ পথ।’ (সুরা ইসরা: ৩২)

সে সময় আরবে গোত্রপ্রথা বিলুপ্ত করে তাওহিদের ভিত্তিতে একটি আদর্শ শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেন, যার প্রশাসক ছিলেন স্বয়ং মহানবী (সা.)।

লেখক: অধ্যাপক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত