Ajker Patrika

কিছুই বাদ যাচ্ছে না

সম্পাদকীয়
কিছুই বাদ যাচ্ছে না

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কিছুদিন আগে এক বক্তব্যে বলেছিলেন, ‘দলের মনোনয়নে এমপি হয়েই কেউ কেউ দলকে ইচ্ছেমতো পরিচালনায় মরিয়া হয়ে ওঠে। কে কোথায় কী করছে, আমার কাছে সব তথ্য আছে।’ দেখা যাচ্ছে, এমপিরা শুধু ইচ্ছেমতো দলকে পরিচালনায় মরিয়া হয়ে উঠছেন তা নয়, দখল-বাণিজ্যেও তাঁদের কারও কারও নাম উঠে আসছে। নদী পারাপারের জন্য ঘাট এবং হাট-বাজার ইজারা দেওয়া হয়। পুকুর-জলাশয় ইজারা দেওয়ার নিয়ম আছে। এবার জানা গেল সাগর ইজারা দেওয়ার নতুন খবর। যদিও বিষয়টি অলিখিত। এ বিষয়ে একটি খবর প্রকাশিত হয়েছে মঙ্গলবারের আজকের পত্রিকায়। পটুয়াখালী জেলার রাঙ্গাবালী ও কলাপাড়ার জেলেদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাগর দখল করে তাঁদের কাছ থেকে ইজারামূল্যের মতো নিয়মিত অর্থ আদায় করার তথ্য।

জেলেদের বক্তব্য উদ্ধৃত করে খবরে বলা হয়েছে, কুয়াকাটার কাছে বঙ্গোপসাগরের বুকে জেগে ওঠা চর বিজয়, রাঙ্গাবালীর চর হেয়ার, সোনারচর, মেছের চর, জাহাজমারা চর, চরমোন্তাজ, তুফানিয়া চর, হাইরের চরসহ কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে এবং গঙ্গামতী সৈকতের মোহনাসহ আশপাশে সাগর ও সৈকতে কারেন্ট জালের ঘের (স্থানীয় ভাষায় খুঁটা জাল) দিয়ে মাছ ধরার জন্য জেলেদের নিয়মিত চাঁদা দিতে হচ্ছে। আর এই চাঁদা আদায়ের রীতির প্রচলন করেছেন পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী) আসনের সংসদ সদস্য মহিব্বুর রহমান মহিব। স্থানীয় পর্যায়ের আওয়ামী লীগের আরও কিছু নেতা এবং প্রভাবশালী ব্যক্তি এমপির সহযোগিতায় এই ইজারার ব্যবস্থা চালু করেছেন। তাঁদের নামও খবরে উল্লেখ করা হয়েছে।

জেলেদের অভিযোগ, বহু বছর ধরে ‘জাল যার সাগরের মাছ তার’ রীতি চলে এলেও মহিব্বুর রহমান মহিব এমপি হওয়ার পর এই ব্যবস্থার পরিবর্তন ঘটেছে। পটুয়াখালী উপকূলে বঙ্গোপসাগরে জেগে ওঠা সব চর, ডুবোচর, মোহনা ও সৈকতের বিভিন্ন স্থানে এখন আর নির্বিঘ্নে মাছ ধরতে পারেন না তাঁরা। মাছ ধরতে হলে ইজারার মতো বছর ভিত্তিতে টাকা দিতে হয় প্রভাবশালী ওই চক্রকে। জেলেরা জানান, ক্ষমতাসীন দল ও সংসদ সদস্যের কথা বলে তাঁদের কাছ থেকে টাকা আদায়ে নেতৃত্ব দেন রাঙ্গাবালী উপজেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা।
যাঁদের বিরুদ্ধে এই গুরুতর অভিযোগ উঠেছে, তাঁরা সবাই তা অস্বীকার করেছেন। স্থানীয় সংসদ সদস্য ও তাঁর পক্ষের লোকজন ইজারা বা টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার না করলেও ভুক্তভোগী জেলেরা স্বীকার করেছেন টাকা দিয়ে মাছ ধরার কথা।

রাঙ্গাবালী ও কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা বলেছেন, ‘চর বা সমুদ্রের মোহনা ইজারা দেওয়ার সুযোগ নেই। যদি এ রকম হয়ে থাকে খোঁজ নেওয়া হবে।’ পারস্পরিক ভাগাভাগির ব্যবস্থা থাকলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা খোঁজ নিয়ে হয়তো বিশেষ কোনো তথ্যই পাবেন না।

দোষ করে তা স্বীকার করার সৎ সাহস না থাকলেও ক্ষমতাবানেরা যে টাকার জন্য কিংবা বিনিময়ে কত কিছু করছেন, তার ছিটেফোঁটা মাঝেমধ্যে প্রকাশ হয়ে পড়ে!

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ পদে রদবদল

গাজীপুরে রাস্তা বন্ধ করে চলাচল করা সেই পুলিশ কমিশনারকে প্রত্যাহার

ভারতসহ একসঙ্গে তিন দেশ সামলাবেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত, দিল্লিতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

নারীর সঙ্গে ঝগড়ার পর রূপসা সেতু থেকে নিচে লাফ দেন সাংবাদিক বুলু: কোস্ট গার্ড

ডাকসু প্রার্থীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের হুমকি, সমালোচনার ঝড়

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত