Ajker Patrika

পাসপোর্টের আবেদন দ্বিগুণ

নুরুল আমীন রবীন, শরীয়তপুর
আপডেট : ১৮ জানুয়ারি ২০২২, ১৩: ৩৫
পাসপোর্টের আবেদন দ্বিগুণ

শরীয়তপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে সেবাপ্রার্থীদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাসপোর্ট-সংক্রান্ত সেবা নিতে ভিড় করছেন গ্রাহক। দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকার পর মধ্যপ্রাচ্যে শ্রমিক নিয়োগ শুরু হওয়ায় পাসপোর্টের আবেদন বেড়ে গেছে।

প্রতিদিন এই কার্যালয়ে গড়ে ৩৫০ জনেরও বেশি গ্রাহক পাসপোর্টের জন্য আবেদন করছেন, যা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে দ্বিগুণ। কার্যালয়ের ভেতরে গাদাগাদি করে দাঁড়িয়ে সেবা নিতে হচ্ছে গ্রাহকদের। মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব। মাস্ক ছাড়াই অনেক গ্রাহককে সেবা নিতে দেখা গেছে। এতে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছে স্বাস্থ্য বিভাগ।

জানা গেছে, সম্প্রতি ইতালিসহ মধ্যপ্রাচ্যে শ্রমিক নিয়োগের ঘোষণা আসে। ইতালিতে ৬৯ হাজার ৭০০ বিদেশি শ্রমিক নিয়োগের অংশ হিসেবে ২৭ জানুয়ারি নন-সিজনাল এবং ১ ফেব্রুয়ারি থেকে সিজনাল স্পন্সর ভিসার আবেদন জমা শুরু হবে, যা আগামী ১৭ মার্চ পর্যন্ত চলবে। শ্রমিক নিয়োগের এমন ঘোষণায় পাসপোর্টের জন্য আবেদনের চাপ বেড়েছে।

বর্তমানে শরীয়তপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট কার্যালয়ে পাঁচজন কর্মকর্তা ও কর্মচারী রয়েছেন। এ ছাড়া কাজের সুবিধার্থে আউটসোর্সিংয়ে কাজ করছেন আরও তিনজন। নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলার দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছেন তিনজন আনসার সদস্য। সব মিলিয়ে মাত্র ১১ জনের জনবল দিয়ে এই বিপুলসংখ্যক আবেদনকারীকে সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। কার্যালয়ের ভেতরে স্বাস্থ্যবিধি ভেঙে গ্রাহকেরা গাদাগাদি করে সেবা নিলেও এদিকে নজর দেওয়ার সুযোগ নেই সংশ্লিষ্টদের।

গতকাল সোমবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, কার্যালয়ের বাইরে আবেদনকারীদের দীর্ঘ সারি। সারিতে আবেদনকারীরা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখছেন না। পরছেন না মাস্ক। আবার মাস্ক নিয়ে এলেও থুতনিতে ঝুলিয়ে রেখেছেন। কার্যালয়ের ভেতরের অবস্থা আরও ভয়াবহ। সাক্ষাৎকার, ফিঙ্গার প্রিন্ট, ছবি তোলার কক্ষসহ প্রতিটি কক্ষের সামনেই উপচেপড়া ভিড়। ভেতরে প্রবেশ করার মতো জায়গাটুকুও নেই। এ সময় অনেক গ্রাহককে মাস্ক পরতে দেখা যায়নি। অনেকে মাস্ক নিয়ে গেলেও তা রেখেছেন পকেটের ভেতরে।

নড়িয়ার পণ্ডিতসার এলাকা থেকে পাসপোর্টের আবেদন করতে আসা ইউসুফ খানকে মাস্ক না থাকার কারণ জানতে চাইলে পকেট থেকে মাস্ক বের করে পরেন ও ভুল হয়েছে বলে জানান।

সদর উপজেলার বুড়িরহাট থেকে পাসপোর্ট করতে আসা সাগর সরদার বলেন, ‘সকাল ৯টায় এসেছি। এখন ৩টা বাজে। ৬ ঘণ্টা ধরে আটকে আছি। আমার সিরিয়াল ২২২, যা এখনো অনেক পেছনে। আমার মতো শতশত মানুষ সকাল থেকে পাসপোর্ট করতে এসে অপেক্ষা করছেন। এখানে মানুষের চাপে দাঁড়িয়ে থাকাই কষ্টকর। তার ওপর সামাজিক দূরত্ব মানা অসম্ভব।’

জেলা সদরের আংগারিয়া থেকে আসা শাহিন শিউলি সকাল থেকেই মাস্ক ছাড়া লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আনতে ভুলে গেছি।’ গেটে প্রবেশ করার সময় আনসার সদস্যরা বাধা দেননি? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, এত মানুষের ভিড়ে চেক করার সুযোগ নেই।

শরীয়তপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক মো. সাদ্দাম হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এক সপ্তাহ ধরে আবেদনের সংখ্যা অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। এই কার্যালয়ে জনবল সংকট। অল্পসংখ্যক জনবল দিয়ে সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বাইরের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যবিধির বিষয়গুলো তদারকির জন্য তিনজন আনসারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাঁদের পক্ষে এত আবেদনকারী নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবাইকে সেবা নেওয়ার অনুরোধ করছি।’

শরীয়তপুরের সিভিল সার্জন ডা. আব্দুল্লাহ আল মুরাদ বলেন, ‘দেশে নতুন করে করোনা সংক্রমণ বেড়েছে। শরীয়তপুরে সম্প্রতি আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। যেকোনো সরকারি-বেসরকারি কার্যালয়সহ সব জায়গায় শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে না পারলে সংক্রমণ ভয়াবহ রূপ নেবে। এরই মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে অনুরোধ ও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মধ্যপ্রাচ্যের চার দেশে পরবর্তী ঘোষণার আগপর্যন্ত বাংলাদেশি সব ফ্লাইট বাতিল

চ্যাটজিপিটিকে যেভাবে প্রশ্ন করবেন

ব্যবসায়ীর দাড়ি ধরে টানাটানি, ভিডিও শেয়ার দিয়ে যা বললেন সারজিস

মার্কিন ঘাঁটির ক্ষয়ক্ষতি কমাতে হামলার আগে কাতারকে জানায় ইরান: সিএনএন

নূরুল হুদাকে হেনস্তার অভিযোগে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আটক

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত