Ajker Patrika

মুদ্রার ওপিঠ দেখল বাংলাবাজার

শরীয়তপুর ও শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৯ জুলাই ২০২২, ১৫: ৫১
মুদ্রার ওপিঠ দেখল বাংলাবাজার

ঈদে ঘরমুখী যাত্রীদের বাড়ি ফেরার সেই চিরচেনা চিত্র নেই শরীয়তপুরের মাঝিরঘাট ফেরিঘাট, লঞ্চ ঘাট এবং মাদারীপুরের বাংলাবাজার ফেরিঘাটে। ফেরিঘাটে নেই যানবাহনের দীর্ঘ সারি। অল্প কিছু যাত্রী লঞ্চে পদ্মা পার হলেও ফাঁকা ফেরি ঘাট। পদ্মা সেতু চালুর পর এই দুই জেলার ফেরিঘাটে যাত্রীদের আনাগোনা একেবারেই কমে গেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় পদ্মা সেতুর টোল প্লাজার সামনে রাজধানী থেকে দক্ষিণাঞ্চল মুখী যানবাহনের চাপ ছিল চোখে পড়ার মতো। সকালের দিকে চাপ কিছুটা কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে এ চাপ। তবে তা যাত্রী বা চালকদের জন্য ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়নি। যাত্রাবাড়ী-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্ত হতে ভাঙ্গা পর্যন্ত সড়কের একেবারেই স্বাভাবিক ছিল যান চলাচল।

ঢাকা থেকে বরিশাল যাওয়ার পথে জাজিরা টোলপ্লাজার সামনে বাস যাত্রী এনায়েত হোসেন বলেন, ‘জীবনে প্রথম ঈদে পরিবার পরিজন নিয়ে ভোগান্তি ছাড়াই বাড়ি যাচ্ছি। যাত্রাবাড়ী থেকে মাত্র ৩৫ মিনিটে এই পর্যন্ত আসলাম। বাকি পথটাও আশা করি নিরাপদে যেতে পারব।’

সায়েদাবাদ থেকে শরীয়তপুরের উদ্দেশ্যে আসা ছায়রন আক্তার বলেন, ‘পদ্মা সেতু কবে দেখব সে জন্য অধীর আগ্রহে ছিলাম। আজ সে সুযোগ পূর্ণ হলো। আর ঈদে বাড়ি ফেরার চির ভোগান্তি থেকে মুক্তি পেয়েছি।’

শরীয়তপুর ট্রাফিক বিভাগের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আরিফ হোসেন জানান, পদ্মা সেতু হয়ে প্রতিটি যানবাহন যেন নিরাপদে চলাচল করতে পারে সে জন্য ট্রাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। শরীয়তপুর অংশে কাজিরহাট শরীয়তপুর সড়কের যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সার্বক্ষণিক কাজ করছে ট্রাফিক বিভাগ।

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবুল হোসেন বলেন, মহাসড়কে যানবাহনের চাপ স্বাভাবিক রয়েছে। প্রতিটি যানবাহনকে টোল দিতে ৫ সেকেন্ড সময় লাগছে। তাই ঈদে ঘরমুখী মানুষ ভোগান্তি ছাড়াই টোল প্লাজা অতিক্রম করছে।

এদিকে কয়েক মাসের ব্যবধানে পাল্টে গেছে মাদারীপুরের শিবচরের বাংলাবাজার ঘাটের চিত্র। ঈদ সামনে রেখে গত রমজানের ঈদে ঘরমুখী মানুষের উপচে পড়া ভিড় ছিল এ ঘাটে। অথচ এই ঈদে ঘরমুখী মানুষের কোনো ভিড় নেই ঘাটে। স্বপ্নের পদ্মা সেতু চালুর কারণে এ চিত্র দেখা গেছে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌপথে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বাংলাবাজার ঘাটে ঈদে বাড়ি ফেরা যাত্রীদের আনাগোনা নেই। পুরো ঘাট এলাকা ফাঁকা। স্থানীয় লোকজন ছাড়া অন্য কাউকে দেখা যায়নি ঘাট এলাকায়। নেই দোকানপাটও। পুরো ঘাট এলাকা যেন বিরান ভূমি। অথচ ঈদ সামনে রেখে জনসমুদ্রে পরিণত হতো এই ঘাট এলাকা। দিনরাত বেচাকেনা হতো ঘাটের দোকানগুলোতে। গত রমজানের ঈদেও ঘাট ছিল সরগরম। গভীর রাতেও ঘরমুখী মানুষের ভিড় ছিল এ ঘাটে। ঈদুল আজহায় পাল্টে গেছে চিত্র।

ঘাট-সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা রেজাউল করিম বলেন, ‘প্রতিবছর ঈদে ঘাট এলাকায় যাত্রীদের ঢল নামে। ঘাটের দোকান থেকে শুরু করে আশপাশের বিভিন্ন দোকানে প্রচুর বেচাকেনা হতো। হঠাৎ করেই থেমে গেছে সব। ঘাট বন্ধের পর আমাদের এলাকায় নেমে এসেছে নীরবতা। দুদিন পরেই ঈদ। অথচ ঘাটের দীর্ঘদিনের চিত্র বদলে গেছে।’ ’

বিআইডব্লিউটিএর শিমুলিয়া ঘাট সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা সেতু চালুর পর দু-তিন দিন লঞ্চ চালু থাকলেও যাত্রীর অভাবে লঞ্চ, স্পিডবোট চলাচল বন্ধ রয়েছে।’

বিআইডব্লিউটিএর বাংলাবাজার ঘাটের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আক্তার হোসেন বলেন, ‘নৌপথে সব নৌযান চলাচল বন্ধ। লঞ্চ-স্পিডবোটগুলো অলস পড়ে আছে। অন্য নৌপথে লঞ্চ চলাচলের জন্য লঞ্চমালিকেরা চেষ্টা করছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাকা দিয়ে নারীর চাবুকের ঘা খাচ্ছিলেন পুরুষ, দুজন গ্রেপ্তার

মানবিক করিডর না ভূরাজনৈতিক কৌশল? সীমান্তে যুক্তরাষ্ট্রের তৎপরতায় উদ্বেগ

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে স্টারলিংকের প্রস্তাবিত কার্যক্রমের বিস্তারিত চায় ভারত

নির্দেশনা মানেননি পাইলট, মদিনা–ঢাকা ফ্লাইটকে নামতে হলো সিলেটে

ভারত–বাংলাদেশ বাণিজ্য বিধিনিষেধের মূল্য গুনছেন ব্যবসায়ীরা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত