সানজিদা সামরিন
পরিবারের কনিষ্ঠ সন্তান—কথাটা শোনার পর বা পড়ার পর কমবেশি সবারই চোখের সামনে যে দৃশ্যপট ভেসে ওঠে বা মস্তিষ্কে যে শব্দেরা খেলে বেড়ায় তা হলো—সবার আদরে উচ্ছন্নে যাওয়া দুষ্ট, নাছোড়বান্দা, একগুঁয়ে, উচ্ছৃঙ্খল, বেয়াদব এক চরিত্র। তা ছেলেও হতে পারে বা মেয়েও হতে পারে। এই চরিত্রের কোনো কাজই যেন কাজ নয়। কোনো প্রসঙ্গে নিজের মত জানানো বা দ্বিমত পোষণ করার মানে হলো সে বেয়াদব; বড়দের মোটেই সম্মান করে না। কারণ, তাকে আহ্লাদ দিয়ে দিয়ে মাথায় তোলা হয়েছে বা আরও উঁচু কোনো স্থানে তুলে দেওয়া হয়েছে।
এই কনিষ্ঠ চরিত্রের জীবনের সংগ্রাম যেমন কোনো সংগ্রাম নয়, তেমনি জীবনের কৃতিত্বও কোনো কৃতিত্ব নয়। কারণ, আশপাশ থেকে যে শব্দ, বাক্য়গুলো ভেসে আসে তার মানে দাঁড়ায়—বড়রা সবাই তাকে সাহায্য করেছে এবং তার জীবন অতি সহজ বলেই তো এই কৃতিত্ব অর্জন করতে পেরেছে। জীবন সহজ না হলে কি আর সফল হওয়া হতো!
পরিবারের বড় সন্তানদের নিয়ে মা-বাবা তথা জগতের প্রায় সবারই যে গর্বের সীমা থাকে না। একটু দৃশ্য বদল করি; পরিবারের বড় সন্তান শব্দটি শুনলেই যে শব্দগুলো মনে জায়গা করে নেয় তা হলো—শৃঙ্খলা, ভদ্রতা, পরিশ্রমী, সংসারের হাল ধরা ইত্যাদি। মিথ্য়ে নয় বটে। তবে পার্থক্য এটাই যে বড় সন্তান বলে হয়তো দায়িত্বগুলো তাঁদের কাঁধে আগে এসে পড়ে। কিন্তু ধাপে ধাপে সেই দায়িত্ব যে একসময় পরিবারের কনিষ্ঠ সন্তানও পালন করে, সে কথায় আমরা আর যাই না! কখনো কখনো পরিবারের ছোট সন্তানদের একটু বেশিই কর্মহীন ভাবি বলে তাকে একনাগাড়ে বিভিন্ন কাজে যুক্ত করে বসি। যেখানে অন্যরা ব্যস্ত আছি বলেই দিন পার করে দিচ্ছে। কিন্তু দিন শেষে জয়গান তো হয় বড়দেরই।
পারিবারিক দ্বন্দ্বে বা কলহে প্রায় সময় সব ভুলের দায় গিয়ে পড়ে বয়সে ছোটদের কাঁধে। তবে ভুল যে পরিবারের ছোটদেরই হবে—এমন কোনো কথা নেই। এটাও ভাবার বিষয় যে কত দিন, কত বছর ধরে তাঁকে উচ্ছৃঙ্খল, অভদ্র আর আলসে ভাবব! কতটা ছোট সে! প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর তার সঙ্গে সেই ছোট্টবেলার মতো আচরণ করব কি না। সে পরিবারের ছোট—এই বাহানায় তাকে যেকোনো বয়সেই ড্রয়িংরুম ভর্তি সবার সামনেই বকুনি দেব? এগুলো কি আদৌ ঠিক?
আমরা হয়তো আবেগে আপ্লুত হই, চোখের জল ফেলি পরিবারের বড় সন্তানদের নিয়ে নির্মিত টেলিভিশনের নাটক ও সিনেমা দেখে। ওই অবধি না গেলেও পরিবারের কনিষ্ঠ সন্তানদের তো একটু সম্মান করতেই পারি।
পরিবারের সদস্যদের মধ্যে বয়সের বিভিন্ন তারতম্য থাকে। ব্যাপক তফাত থাকতে পারে আপনার সন্তান ও আপনার বয়সে। পরিবারের ছোট সদস্যটি বয়সে আপনার ছোট, কিন্তু সামাজিক ও মানসিকভাবে তার ম্যাচিউরিটি কতটা এসেছে, এটা ভাবতে হবে। কারণ, আজীবন সে বয়সে আপনার ছোটই থাকবে। তবে সামাজিকভাবে সে প্রতিনিয়তই বেড়ে উঠছে। আত্মসম্মানবোধ তারও রয়েছে। সাধারণত একটি ছেলে বা মেয়ের ১১-১২ বছর বয়স বা তারও আগে আত্মসম্মানবোধ ও অপমানবোধ তৈরি হয়ে যায়। সে ক্ষেত্রে কোনো বিষয়ে কারও সামনে বকাঝকা করলে বা গায়ে হাত তুললে তা তাদের আত্মসম্মানে আঘাত হানে। বড়দের উচিত বয়স, মানসিকতা, সময় ও পরিবেশ বুঝে ছোটদের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সমঝোতা করা।
ছেলে বা মেয়ে বড় হওয়ার সময় কোনো বিষয়ে তাদের ব্যক্তিগত অনুভূতি ও মত প্রকাশের সুযোগ করে দেওয়া উচিত। প্রয়োজন বুঝে উৎসাহিত করা উচিত। তুমি ছোট, তুমি বোঝ না, তোমার চেয়ে জীবন অনেক বেশি দেখেছি—এসব না বলে তাদের মধ্যে শক্তপোক্ত জীবনবোধ তৈরি করে দেওয়ার চেষ্টা করুন। কারণ সে বড় হচ্ছে, সামাজিক মর্যাদা পাচ্ছে। সামাজিক চাহিদা ও বয়সের হারে মানসিক চাহিদাও বাড়ছে। হয়তো স্কুল বা কলেজে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্তও নিচ্ছে। সেখানে পরিবারে তাকে বারবার ছোট ও অবুঝ বললে তার মধ্যে কনফিডেন্স তৈরি হবে না, যা ভবিষ্যতে সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে। কথায় ‘না’-এর আধিক্য তার স্বনির্ভরতায় ও সিদ্ধান্ত তৈরিতে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। নেতিবাচক মন্তব্য, প্রায় কাজে নিষেধাজ্ঞা হীনম্মন্যতা ও দুর্বল চিত্তের অধিকারী করে গড়ে তুলতে পারে আপনার সন্তানকে। পরিবারের কনিষ্ঠ সন্তান বলেই তার সব কাজ, সিদ্ধান্ত ও ভাবনা ভুল হবে—এমনটি তো নয়!
লেখক: সানজিদা সামরিন, সহসম্পাদক, আজকের পত্রিকা
পরিবারের কনিষ্ঠ সন্তান—কথাটা শোনার পর বা পড়ার পর কমবেশি সবারই চোখের সামনে যে দৃশ্যপট ভেসে ওঠে বা মস্তিষ্কে যে শব্দেরা খেলে বেড়ায় তা হলো—সবার আদরে উচ্ছন্নে যাওয়া দুষ্ট, নাছোড়বান্দা, একগুঁয়ে, উচ্ছৃঙ্খল, বেয়াদব এক চরিত্র। তা ছেলেও হতে পারে বা মেয়েও হতে পারে। এই চরিত্রের কোনো কাজই যেন কাজ নয়। কোনো প্রসঙ্গে নিজের মত জানানো বা দ্বিমত পোষণ করার মানে হলো সে বেয়াদব; বড়দের মোটেই সম্মান করে না। কারণ, তাকে আহ্লাদ দিয়ে দিয়ে মাথায় তোলা হয়েছে বা আরও উঁচু কোনো স্থানে তুলে দেওয়া হয়েছে।
এই কনিষ্ঠ চরিত্রের জীবনের সংগ্রাম যেমন কোনো সংগ্রাম নয়, তেমনি জীবনের কৃতিত্বও কোনো কৃতিত্ব নয়। কারণ, আশপাশ থেকে যে শব্দ, বাক্য়গুলো ভেসে আসে তার মানে দাঁড়ায়—বড়রা সবাই তাকে সাহায্য করেছে এবং তার জীবন অতি সহজ বলেই তো এই কৃতিত্ব অর্জন করতে পেরেছে। জীবন সহজ না হলে কি আর সফল হওয়া হতো!
পরিবারের বড় সন্তানদের নিয়ে মা-বাবা তথা জগতের প্রায় সবারই যে গর্বের সীমা থাকে না। একটু দৃশ্য বদল করি; পরিবারের বড় সন্তান শব্দটি শুনলেই যে শব্দগুলো মনে জায়গা করে নেয় তা হলো—শৃঙ্খলা, ভদ্রতা, পরিশ্রমী, সংসারের হাল ধরা ইত্যাদি। মিথ্য়ে নয় বটে। তবে পার্থক্য এটাই যে বড় সন্তান বলে হয়তো দায়িত্বগুলো তাঁদের কাঁধে আগে এসে পড়ে। কিন্তু ধাপে ধাপে সেই দায়িত্ব যে একসময় পরিবারের কনিষ্ঠ সন্তানও পালন করে, সে কথায় আমরা আর যাই না! কখনো কখনো পরিবারের ছোট সন্তানদের একটু বেশিই কর্মহীন ভাবি বলে তাকে একনাগাড়ে বিভিন্ন কাজে যুক্ত করে বসি। যেখানে অন্যরা ব্যস্ত আছি বলেই দিন পার করে দিচ্ছে। কিন্তু দিন শেষে জয়গান তো হয় বড়দেরই।
পারিবারিক দ্বন্দ্বে বা কলহে প্রায় সময় সব ভুলের দায় গিয়ে পড়ে বয়সে ছোটদের কাঁধে। তবে ভুল যে পরিবারের ছোটদেরই হবে—এমন কোনো কথা নেই। এটাও ভাবার বিষয় যে কত দিন, কত বছর ধরে তাঁকে উচ্ছৃঙ্খল, অভদ্র আর আলসে ভাবব! কতটা ছোট সে! প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর তার সঙ্গে সেই ছোট্টবেলার মতো আচরণ করব কি না। সে পরিবারের ছোট—এই বাহানায় তাকে যেকোনো বয়সেই ড্রয়িংরুম ভর্তি সবার সামনেই বকুনি দেব? এগুলো কি আদৌ ঠিক?
আমরা হয়তো আবেগে আপ্লুত হই, চোখের জল ফেলি পরিবারের বড় সন্তানদের নিয়ে নির্মিত টেলিভিশনের নাটক ও সিনেমা দেখে। ওই অবধি না গেলেও পরিবারের কনিষ্ঠ সন্তানদের তো একটু সম্মান করতেই পারি।
পরিবারের সদস্যদের মধ্যে বয়সের বিভিন্ন তারতম্য থাকে। ব্যাপক তফাত থাকতে পারে আপনার সন্তান ও আপনার বয়সে। পরিবারের ছোট সদস্যটি বয়সে আপনার ছোট, কিন্তু সামাজিক ও মানসিকভাবে তার ম্যাচিউরিটি কতটা এসেছে, এটা ভাবতে হবে। কারণ, আজীবন সে বয়সে আপনার ছোটই থাকবে। তবে সামাজিকভাবে সে প্রতিনিয়তই বেড়ে উঠছে। আত্মসম্মানবোধ তারও রয়েছে। সাধারণত একটি ছেলে বা মেয়ের ১১-১২ বছর বয়স বা তারও আগে আত্মসম্মানবোধ ও অপমানবোধ তৈরি হয়ে যায়। সে ক্ষেত্রে কোনো বিষয়ে কারও সামনে বকাঝকা করলে বা গায়ে হাত তুললে তা তাদের আত্মসম্মানে আঘাত হানে। বড়দের উচিত বয়স, মানসিকতা, সময় ও পরিবেশ বুঝে ছোটদের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সমঝোতা করা।
ছেলে বা মেয়ে বড় হওয়ার সময় কোনো বিষয়ে তাদের ব্যক্তিগত অনুভূতি ও মত প্রকাশের সুযোগ করে দেওয়া উচিত। প্রয়োজন বুঝে উৎসাহিত করা উচিত। তুমি ছোট, তুমি বোঝ না, তোমার চেয়ে জীবন অনেক বেশি দেখেছি—এসব না বলে তাদের মধ্যে শক্তপোক্ত জীবনবোধ তৈরি করে দেওয়ার চেষ্টা করুন। কারণ সে বড় হচ্ছে, সামাজিক মর্যাদা পাচ্ছে। সামাজিক চাহিদা ও বয়সের হারে মানসিক চাহিদাও বাড়ছে। হয়তো স্কুল বা কলেজে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্তও নিচ্ছে। সেখানে পরিবারে তাকে বারবার ছোট ও অবুঝ বললে তার মধ্যে কনফিডেন্স তৈরি হবে না, যা ভবিষ্যতে সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে। কথায় ‘না’-এর আধিক্য তার স্বনির্ভরতায় ও সিদ্ধান্ত তৈরিতে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। নেতিবাচক মন্তব্য, প্রায় কাজে নিষেধাজ্ঞা হীনম্মন্যতা ও দুর্বল চিত্তের অধিকারী করে গড়ে তুলতে পারে আপনার সন্তানকে। পরিবারের কনিষ্ঠ সন্তান বলেই তার সব কাজ, সিদ্ধান্ত ও ভাবনা ভুল হবে—এমনটি তো নয়!
লেখক: সানজিদা সামরিন, সহসম্পাদক, আজকের পত্রিকা
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি বেড়েই চলছে। এ কারণে চালক ও যাত্রীদের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছে এই সড়ক। ডাকাতির শিকার বেশি হচ্ছেন প্রবাসফেরত লোকজন। ডাকাতেরা অস্ত্র ঠেকিয়ে লুট করে নিচ্ছে সর্বস্ব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়েও ঘটছে ডাকাতির ঘটনা।
০২ মার্চ ২০২৫বিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৬ জানুয়ারি ২০২৫গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪