Ajker Patrika

চাল কিনতেই হিমশিম

ফয়সাল পারভেজ, মাগুরা
আপডেট : ২১ জুন ২০২২, ১৩: ৪৭
চাল কিনতেই হিমশিম

‘মোটা চালে গরিব মানসির ভাত খাওয়া বোঝায়। খাতি কষ্ট হলি জীবন তো ভাই থেমে থাকপি নানে। রিকশা চালাই কয়ডা গরম ভাত খেয়ে। সেই চালের দাম সাত দিনি কেজিতে ৬ টাকা বাড়িছে। কিরাম চলবি কন। এরাম তো আর চলতিছে না।’

রিকশা চালক সেলিম হোসেন এভাবেই বললেন তাঁর চাল কেনার অভিজ্ঞতার কথা। মাগুরা পুরোনো বাজার এলাকার চাল পট্টিতে তিনি তিন কেজি র্স্বনা যাকে মোটা চাল বলা হয় তা কিনলেন খুব বিষণ্ন মুখে।

সেলিম জানান, গত সপ্তাহে এ চাল ছিল ৪২ টাকা। এখন তা ৪৬ টাকা থেকে ৪৮ টাকা বিক্রি হচ্ছে। চালের মানও কমে গেছে। পোকা। পরিবারের সবাইরে নিয়ে জীবন চালানো খুব কষ্টের হয়ে গেছে বলে জানান সেলিম।

মাগুরা নতুন বাজার এলাকায় স্কুল শিক্ষিকা স্বপ্না সাহা জানান, মিনিকেট চাল ছাড়া আমার পরিবারে খাওয়া হয় না। সেই চাল কেজি প্রতি ৮ টাকা বেড়েছে। এক কেজি চাল যেখানে গত সপ্তাহে ৬২ টাকা করে কিনেছি। সেই একই চাল এখন ৭০ থেকে ৭২ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এত বেশি কেন বাড়াল প্রশ্ন করলে বিক্রেতারা কোনো উত্তর দেন না। মেজাজ খারাপ হয়, যা খুশি দাম চাইবে আর আমরা ও তা মুখ বুজে দিয়ে দিচ্ছি। এটা ঠিক হচ্ছে না।

মাগুরা পুরান বাজারে পাইকারি চাল বিক্রেতা আজিজুর রহমান জানান, চালের দাম কিছুটা বাড়তি। বাজারে স্বর্না চাল পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ২৫ কেজির বস্তা ১ হাজার টাকা। সেখানে কেজি পরছে ৪০ টাকা। এই চাল খুচরা বিক্রেতা খরচ সহ কিছুটা লাভ করে বিক্রি করছেন। এতে আমাদের কোনো হাত নেই। এ ছাড়া ২৫ কেজির বস্তার মিনিকেট ১৪৫০ থেকে ১৭০০ টাকা, বাসমতি পুরান টি ১৭৫০, নতুন বাসমতি বস্তা ১৮৫০। আটাশ বিক্রি হচ্ছে ১১৫০ টাকা থেকে ১২৫০ টাকা, কাজললতা ১২৫০ থেকে ১৩৫০ টাকা বস্তা। এই বাজারের পাইকারি চাল ব্যবসায়ী শান্ত দত্ত জানান, খুচরা পর্যায়ে দাম কিছুটা বেশি পরছে। আমরা অল্প লাভে বিক্রি করে দিচ্ছি। খুচরা ব্যবসায়ীরাও কিছু লাভ করছে। এখানে সব ব্যবসায়ীরই লাভ কমে গেছে। জিনিস পত্রের দাম বাড়ায় সবাই খুব ঝুঁকির মুখে আছে।

মাগুরা জেলা সদরের ভায়না মোড়, পুলিশ লাইন, ইছাখাদাসহ বেশ কয়েকটি বাজারে ঘুরে দেখা গেছে। পাইকারি বাজার থেকে এসব খুচরা দোকানে চালের কেজি প্রতি ৬ থেকে ১০ টাকা বেশি নেওয়া হচ্ছে। ইছাখাদা বাজারের খুচরা মুদি দোকানি রহমত বিশ্বাস জানান, পাইকারি বাজার থেকে যে চাল আমরা কেজি প্রতি ৪০ টাকায় কিনি। দোকান পর্যন্তই আনতে খরচ আছে। সঙ্গে নিজের কিছু লাভ ধরে বিক্রি না করলে টিকে থাকা মুশকিল হয়ে যাবে। এ জন্য চালের খুচরা বাজারে একটু বেশি দামে বিক্রি করা হয়।

চালের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চালের দাম বাড়ার অন্যতম কারণ বৃষ্টিতে ধান ভালো পায়নি অনেক কৃষক। বৃষ্টির পানিতে ধানের মান কমে গেছে। ফলে মিল মালিকেরা এসব ধান কিনছেন না। কিছুটা ভালো ধানের সংকট রয়েছে বাজারে। সেই সংকটের রেশ পড়েছে চালের বাজারে। নতুন বাজারের ধান ব্যবসায়ী আমিন হোসেন জানান, এখন ভালো ধান মণ প্রতি বিক্রি চলছে ১ হাজার থেকে ১২ শো টাকা। সর্বনিম্ন ৭০০ টাকা করেও ধান বিক্রি চলছে।

মাগুরা বাজার বিপণন কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন জানান, চালের বাজার কিছুটা অস্থিতিশীল। ধানের ভালো ফলন হলেও বৃষ্টিতে সঠিক সময়ে অনেক কৃষকই ধান ঠিকঠাক ঘরে তুলতে পারেননি। এর প্রভাব মিলারদের ওপর পড়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিজের প্রস্রাব পান করে ‘আশিকি’ অভিনেত্রী অনু আগারওয়াল বললেন, ‘আহা অমৃত’

মে. জে. ফজলুরের সেভেন সিস্টার্স দখলের মন্তব্য সমর্থন করে না সরকার: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে স্টারলিংকের প্রস্তাবিত কার্যক্রমের বিস্তারিত চায় ভারত

নির্দেশনা মানেননি পাইলট, মদিনা-ঢাকা ফ্লাইটকে নামতে হলো সিলেটে

গায়ে কেরোসিন ঢেলে কলেজছাত্রীর আত্মহনন, পলাতক ইমাম গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত