Ajker Patrika

চলনবিলের পলিতে আশা জাগাচ্ছে কাজুবাদাম

পাবনা ও চাটমোহর প্রতিনিধি
আপডেট : ০৬ জানুয়ারি ২০২২, ১০: ০৫
চলনবিলের পলিতে আশা জাগাচ্ছে কাজুবাদাম

বাংলাদেশের জলবায়ু কাজুবাদাম চাষের বেশ সহায়ক হওয়া সত্ত্বেও বিক্রি, বাজারজাতকরণ ও প্রক্রিয়াজাত করার ভালো ব্যবস্থা না থাকায় কৃষকের মধ্যে এ বাদাম চাষে খুব একটা আগ্রহ নেই। তবে চলনবিলের উর্বর পলিমাটিতে সম্ভাবনা দেখাচ্ছে কাজুবাদাম।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে কাজুবাদাম ও কফি গবেষণা উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্প চলমান রয়েছে। এ প্রকল্পের অধীনে চলনবিলের পাবনার চাটমোহরের হরিপুর ও মুলগ্রাম ইউনিয়নে দুটি প্রদর্শনী স্থাপিত হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস চাটমোহর প্রকল্প দুটি বাস্তবায়ন করছে।

জানা গেছে, বাদামজাতীয় ফল কাজুবাদাম। এ বাদামের ওপরের অংশের ফল থেকে জুস, ভিনেগার ও অ্যালকোহল তৈরি করা যায়। আন্তর্জাতিক বাজারে কাজুবাদামের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। বাদামের খোলসের তেল শিল্পকাজে ব্যবহার হয়। দেশে কাজুবাদাম প্রক্রিয়াজাতকরণে ভালো ব্যবস্থা না থাকায় উৎপাদিত কাজুবাদাম খোসাসহ বিদেশে রপ্তানি করা হয়। ফলে দেশের চাষিরা দাম কম পান।

চাটমোহরের বাদামচাষি হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মকবুল হোসেন বলেন, ‘আমি বড় আকারের একটি পুকুরের পাড়ে কাজুবাদাম ও কফি গবেষণা উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় ৫০ শতক জমিতে ভাস্কারা জাতের ৮০টি কাজুবাদামের চারা রোপণ করেছি। কাজুবাদামের জাত ও প্রযুক্তি প্রদর্শনীর আওতায় গত সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময় চারাগুলো রোপণ করেছি। চাটমোহর উপজেলা কৃষি অফিস প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। চাটমোহরের অনেক মানুষ প্রদর্শনীটি দেখতে আসেন।’

শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী রেজিস্ট্রার রুহুল কুদ্দুস ডলার বলেন, কাজুবাদাম পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যসম্মত খাবার। এ বাদামে আমিষ, স্নেহ, শর্করা, খনিজ পদার্থ, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, লৌহ ও ভিটামিন থাকে। ফলে তা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। হাড় ও দাঁতের গঠনে, ক্যানসার প্রতিরোধে, স্নায়ুতন্ত্রকে সুস্থ রাখতে, রক্তচাপ কমাতে, রক্তশূন্যতা ও অবসাদ দূরীকরণে সহায়ক ভূমিকা রাখে এ বাদাম।

চাটমোহর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ এ মাসুম বিল্লাহ বলেন, ২৫-২৭ সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রা কাজুবাদাম চাষের উপযোগী আবহাওয়া। উঁচু অম্লীয় বালু বা বালু-দোআঁশ মাটিতে কাজু বাদাম ভালো হয়। উন্নত জাতের চারা রোপণ করতে হয়। ঠিকমতো জমি পরিষ্কার রেখে, প্রয়োজনমতো জৈব ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ করলে, শুষ্ক মৌসুমে প্রয়োজনে সেচ দিতে পারলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। সঠিক সময়ে কাজুবাদাম সংগ্রহ করতে পারলে হেক্টরপ্রতি ১ দশমিক ৫ থেকে ১ দশমিক ৮ টন বাদাম পাওয়া সম্ভব। ঠিকমতো প্রক্রিয়াজাত করতে পারলে কাজুবাদামের খোসা থেকে উৎপাদিত তেল দিয়ে জৈব কীটনাশক উৎপাদন করা যাবে। এ ছাড়া কাজুবাদামের খোসা থেকে ভালো মানের জৈব সার তৈরি করা যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত