এ কে এম শামসুদ্দিন
পাকিস্তানে নির্বাচনের জন্য প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি ১৪ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আনোয়ারুল হক কাকারকে শপথবাক্য পাঠ করান। এই শপথ নেওয়ার অনুষ্ঠানটি এমন দিনে অনুষ্ঠিত হলো; যে দিনটি ছিল পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবস। অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ছাড়াও সেনাবাহিনীপ্রধানসহ গুরুত্বপূর্ণ উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। শপথ নেওয়ার পর অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী আনোয়ারুল হক কাকারকে বিশেষ আগ্রহ নিয়ে সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করতে ও করমর্দন করতে দেখা গেছে। সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে আনোয়ারুল হকের আন্তরিকতা প্রকাশের এই বিশেষ মুহূর্তটুকু সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। কারণ সবাই জানেন, নির্বাচন অনুষ্ঠানের যে গুরুদায়িত্ব তাঁর কাঁধে অর্পিত হয়েছে, তা সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন করার জন্য সামরিক বাহিনীর সাহায্য ছাড়া উপায় নেই। আনোয়ারুল হক নিজেও জানেন আগামী দিনে যা কিছু করতে হবে, সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখেই তাঁকে তা করতে হবে।
এর আগে ১২ আগস্ট পাকিস্তানের বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এবং ইমরান খান প্রতিষ্ঠিত জাতীয় পরিষদের বিরোধী দল তেহরিক-ই-ইনসাফ বা পিটিআইয়ের নেতা রাজা রিয়াজ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, সে বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছান। তাঁদের উভয়ের সম্মতিতে আনোয়ারুল হক কাকার নির্বাচনের জন্য অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। পাকিস্তানের সংবিধানের ২২৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়ার তিন দিনের মধ্যে বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দলের নেতাকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রীর নাম প্রস্তাব করতে হয়, সেই অনুসারে ১২ আগস্টের মধ্যে তাঁরা অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রীর নাম প্রেসিডেন্টের কাছে প্রেরণ করেন।
তারও আগে পাঁচ বছরের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার তিন দিন আগে ৯ আগস্ট জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। পাকিস্তানের সংবিধানে বলা আছে, মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই যদি জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়া হয়, তাহলে ৯০ দিনের মধ্যে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। আর জাতীয় পরিষদ পূর্ণ করলে ৬০ দিনের মধ্যে নির্বাচন হবে। এ ক্ষেত্রে যেহেতু মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়া হয়েছে, তাই ৯০ দিনের মধ্যে পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
পাকিস্তানের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী আনোয়ারুল হক কাকার বেলুচিস্তান আওয়ামী পার্টির একজন আইনপ্রণেতা। তিনি পশতুন জাতিগোষ্ঠীর মানুষ। তাই তিনি পশতুন ও বেলুচ উভয়ের প্রতিনিধিত্ব করেন। আনোয়ারুল হক সিনেটে (উচ্চ কক্ষে) তাঁর দলের সংসদীয় নেতার দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। তিনি ২০১৮ সালে বেলুচিস্তান থেকে ছয় বছরের জন্য সিনেটর নির্বাচিত হন। ২০২৪ সালের মার্চে তাঁর মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। আনোয়ারুল হক বরাবরই বেশ সক্রিয় রাজনীতিবিদ। সিনেটর নির্বাচিত হওয়ার আগে তিনি প্রাদেশিক সরকারের মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করেছেন। রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকলেও আনোয়ারুল হককে দেশের একজন বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী হিসেবে গণ্য করা হয়। তিনি বেলুচিস্তান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাজনীতিবিজ্ঞান ও সামাজিক বিজ্ঞানে ডিগ্রি নেন। রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার আগে নিজ শহরের এক স্কুলে শিক্ষকতার মধ্য দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন তিনি।
শাহবাজ শরিফ ও বিরোধীদলীয় নেতার সম্মতিতে পাকিস্তানের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী একটি ছোট প্রদেশ থেকে আনোয়ারুল হক কাকারকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করায় খুশি কারাগারে থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে পিটিআইয়ের কোনো পরামর্শ নেওয়া হয়নি।
তারপরও তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আনোয়ারুল হক কাকারের মনোনয়নে খুশি হয়েছে দলটি। ইমরান খান জেলে থাকা অবস্থায় পিটিআইয়ের ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মাহমুদ কোরেশি এক প্রতিক্রিয়ায় তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রীকে শিক্ষিত ও ভদ্রলোক হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। আনোয়ারুল হক কাকার একটি ছোট প্রদেশের হওয়ায় দেশের মৌলিক সমস্যাগুলো আরও ভালোভাবে বুঝতে পারবেন এবং সেই অনুসারে তাঁর ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবেন বলে কোরেশি আশা প্রকাশ করেন। পাকিস্তানের বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফও আনোয়ারুল হকের অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হওয়া নিয়ে মন্তব্য করেন। আনোয়ারুল হক স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করবেন বলে শাহবাজ আস্থা প্রকাশ করেন। তিনি বলেছেন, তত্ত্বাবধয়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আনোয়ারুল হকের প্রতি সব পক্ষের আস্থাই প্রমাণ করে তাঁদের সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল। শাহবাজ আনোয়ারুল হককে একজন শিক্ষিত ও দেশপ্রেমিক মানুষ বলে স্বীকার করেন।
পাকিস্তানের সংবিধান অনুযায়ী, তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে অবশ্যই ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। তবে এই সময়ের মধ্যে তাঁরা নির্বাচন আয়োজন করতে পারবেন কি না, সন্দেহ আছে। কারণ, বিদায়ী শাহবাজ সরকার মেয়াদের শেষের দিকে একটি নতুন আদমশুমারি অনুমোদন করার ফলে নির্বাচন কমিশনকে আবার নতুন করে নির্বাচনী সীমানা নির্ধারণ করতে হবে।
উল্লেখ্য, চলতি মাসের শুরুর দিকে পাকিস্তানের প্রথম ডিজিটাল জনশুমারির তথ্য প্রকাশ হয়। সেই অনুযায়ী নির্বাচনী আসনগুলোর নতুন সীমানা নির্ধারণের পথে এগোচ্ছে নির্বাচন কমিশন। সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, সীমানা নির্ধারণে চার থেকে ছয় মাস সময় লাগতে পারে। যদি তা-ই হয়, তাহলে চলতি বছর পাকিস্তানে আর জাতীয় নির্বাচন হওয়ার সুযোগ থাকছে না। এটি সবারই জানা, পাকিস্তানের রাজনীতিতে সেনাবাহিনীর প্রভাব অনস্বীকার্য। ইমরান খানের গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানব্যাপী যে রাজনৈতিক অস্থিরতার সৃষ্টি হয়েছিল তাতে সেনাবাহিনীও কিছুটা নাজুক পরিস্থিতিতে পড়ে গিয়েছিল। তবে ক্ষমতাসীনদের ব্যবহার করে ধীরে ধীরে পরিস্থিতি সামাল দিয়ে সেনাবাহিনী পুনরায় তাদের কর্তৃত্বের জায়গায় ফিরে এসেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ যদি সাংবিধানিক সময়সীমার চেয়ে বৃদ্ধি পায়, তাহলে সেনাবাহিনীই লাভবান হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার যদি দীর্ঘদিন দেশ পরিচালনায় থাকে, তাহলে এ বিষয়টি যেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে তার নিয়ন্ত্রণ আরও সুসংহত করার সুযোগ তৈরি করে দেবে।
নির্বাচন বিলম্বিত হলে কিছু জটিলতারও সৃষ্টি হতে পারে। এ ক্ষেত্রে সাংবিধানিক ও আইনগত নানা প্রশ্ন সামনে চলে আসতে পারে। যদি সাংবিধানিক প্রশ্ন ওঠে, তাহলে তার সুরাহায় দেশটির সুপ্রিম কোর্টের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের প্রয়োজন পড়বে। অতীতে এমন পরিস্থিতিতে সে দেশের সুপ্রিম কোর্টের সক্রিয় পদক্ষেপ গ্রহণের রেকর্ড আছে।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর রোষানলে পড়ে ইমরান খানের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ যে সত্যিই দোদুল্যমান, তা সহজেই অনুমেয়। ইমরান খানকে আরও কত দিন কারা-অন্তরালে কাটাতে হবে, তা বলা মুশকিল। ১৫ আগস্ট স্থানীয় ‘হিংসাত্মক বিক্ষোভ’-এর অভিযোগে ইমরানের বিরুদ্ধে করা ৯টি মামলায় জামিনের জন্য যে আবেদন করা হয়েছিল, তার সবগুলোই আদালত খারিজ করে দিয়েছেন। গত ৯ মে তোষাখানা মামলায় ইমরানকে গ্রেপ্তার করা হলে যে সহিংস বিক্ষোভ হয়, সেই বিক্ষোভের মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে অভিযুক্ত করে এই মামলাগুলো করা হয়েছিল। ইমরান খানকে নিয়ে এখন চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে; বিশেষ করে তিনি আসন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন কি না, এ বিষয়টিই গুরুত্বসহকারে আলোচিত হচ্ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, ইমরান খানের বিরুদ্ধে চলমান মামলার মীমাংসা হতে মাসের পর মাস পার হয়ে যাবে। ফলে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সম্ভাবনা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে। তা ছাড়া, দুর্নীতির অভিযোগে নিম্ন আদালতে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর, দেশটির নির্বাচন কমিশন ইমরান খানকে পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচনে অংশগ্রহণে অযোগ্য ঘোষণা করেই রেখেছে। ইমরান খান এই ঘোষণার বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করেছেন। দুর্নীতির মামলায় যদি আদালত থেকে ইমরান পরিত্রাণ পানও, তারপরও বিভিন্ন বেসামরিক আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে দুই শতাধিক মামলা বিচারাধীন রয়ে গেছে। এ ছাড়া সবশেষে একটি সামরিক আদালতও তো তাঁর জন্য অপেক্ষা করছেই। আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এখানে বিবেচনা করা যেতে পারে। পাকিস্তানের বর্তমান প্রধান বিচারপতি আগামী মাসে তাঁর মেয়াদ শেষ করবেন। পরবর্তী প্রধান বিচারপতি হবেন কাজী ফয়েজ ঈসা, যিনি ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে অযোগ্য বলে বিবেচিত হয়েছিলেন। যদিও পাকিস্তানের রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, নতুন প্রধান বিচারপতি হয়তো প্রতিশোধ নেবেন না। তিনি সংবিধান অনুযায়ী কাজ করতে পারেন। তাঁরা আরও মনে করেন, পাকিস্তানের নতুন প্রধান বিচারপতি যদি শত বাধা সত্ত্বেও সংবিধান টিকিয়ে রাখার ব্যাপারে শক্ত ভূমিকা পালন করতে পারেন, তাহলে ইমরান নির্বাচনে অংশ নিতে না পারলেও, রাজনৈতিকভাবে টিকে থাকতে পারবেন। অতীতে নওয়াজ শরিফ দোষী সাব্যস্ত হওয়া সত্ত্বেও যদি টিকে থাকতে পারেন, তাহলে ইমরান খানও টিকে যাবেন।
পাকিস্তানের ইতিহাস বলে, সামরিক বাহিনীর আশীর্বাদ ছাড়া কোনো বেসামরিক শাসকের পক্ষে ক্ষমতায় টিকে থাকা সম্ভব নয়। ইমরান খানের ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছে। তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরাতে সেনাবাহিনী যে নেপথ্যে থেকে কাজ করেছে, তা এখন দিবালোকের মতো স্পষ্ট। যদিও মুসলিম লীগের নওয়াজ শরিফ, পিপিপির আসিফ আলী জারদারির সঙ্গে জোট বেঁধে সংসদে অনাস্থা প্রস্তাবের মাধ্যমে ইমরান খানকে ক্ষমতাচ্যুত করেছে। তাই বলে, এই দুটি দলের সঙ্গে সেনাবাহিনীর ভালো সখ্য রয়েছে বলা যাবে না। অতীতে নওয়াজ শরিফকে সরিয়ে দিয়ে জেনারেল পারভেজ মোশাররফকে ক্ষমতায় বসিয়েছিল সেনাবাহিনী। জুলফিকার আলী ভুট্টোর পতনও হয়েছিল সামরিক বাহিনীর হাতে। ফলে মুসলিম লীগ ও পিপিপির সঙ্গে সেনাবাহিনীর সম্পর্ক যে সহজ নয় তা বোঝা যায়। এই সবকিছু মিলিয়েই বলা যায়, ভবিষ্যতেও পাকিস্তানের রাজনীতিতে উচ্চাভিলাষী সামরিক কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ থাকবেই। পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীও সেনাবাহিনীর প্রভাবমুক্ত হয়ে কিছু করতে পারবে বলে মনে হয় না। স্বাধীনতার ৭৬ বছর পরও এভাবেই সেনাবাহিনীর ছায়াতলেই পাকিস্তানের রাজনীতি ঘুরপাক খাচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত থাকবে।
এ কে এম শামসুদ্দিন, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ও কলাম লেখক
পাকিস্তানে নির্বাচনের জন্য প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি ১৪ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আনোয়ারুল হক কাকারকে শপথবাক্য পাঠ করান। এই শপথ নেওয়ার অনুষ্ঠানটি এমন দিনে অনুষ্ঠিত হলো; যে দিনটি ছিল পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবস। অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ছাড়াও সেনাবাহিনীপ্রধানসহ গুরুত্বপূর্ণ উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। শপথ নেওয়ার পর অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী আনোয়ারুল হক কাকারকে বিশেষ আগ্রহ নিয়ে সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করতে ও করমর্দন করতে দেখা গেছে। সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে আনোয়ারুল হকের আন্তরিকতা প্রকাশের এই বিশেষ মুহূর্তটুকু সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। কারণ সবাই জানেন, নির্বাচন অনুষ্ঠানের যে গুরুদায়িত্ব তাঁর কাঁধে অর্পিত হয়েছে, তা সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন করার জন্য সামরিক বাহিনীর সাহায্য ছাড়া উপায় নেই। আনোয়ারুল হক নিজেও জানেন আগামী দিনে যা কিছু করতে হবে, সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখেই তাঁকে তা করতে হবে।
এর আগে ১২ আগস্ট পাকিস্তানের বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এবং ইমরান খান প্রতিষ্ঠিত জাতীয় পরিষদের বিরোধী দল তেহরিক-ই-ইনসাফ বা পিটিআইয়ের নেতা রাজা রিয়াজ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, সে বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছান। তাঁদের উভয়ের সম্মতিতে আনোয়ারুল হক কাকার নির্বাচনের জন্য অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। পাকিস্তানের সংবিধানের ২২৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়ার তিন দিনের মধ্যে বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দলের নেতাকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রীর নাম প্রস্তাব করতে হয়, সেই অনুসারে ১২ আগস্টের মধ্যে তাঁরা অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রীর নাম প্রেসিডেন্টের কাছে প্রেরণ করেন।
তারও আগে পাঁচ বছরের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার তিন দিন আগে ৯ আগস্ট জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। পাকিস্তানের সংবিধানে বলা আছে, মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই যদি জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়া হয়, তাহলে ৯০ দিনের মধ্যে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। আর জাতীয় পরিষদ পূর্ণ করলে ৬০ দিনের মধ্যে নির্বাচন হবে। এ ক্ষেত্রে যেহেতু মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়া হয়েছে, তাই ৯০ দিনের মধ্যে পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
পাকিস্তানের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী আনোয়ারুল হক কাকার বেলুচিস্তান আওয়ামী পার্টির একজন আইনপ্রণেতা। তিনি পশতুন জাতিগোষ্ঠীর মানুষ। তাই তিনি পশতুন ও বেলুচ উভয়ের প্রতিনিধিত্ব করেন। আনোয়ারুল হক সিনেটে (উচ্চ কক্ষে) তাঁর দলের সংসদীয় নেতার দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। তিনি ২০১৮ সালে বেলুচিস্তান থেকে ছয় বছরের জন্য সিনেটর নির্বাচিত হন। ২০২৪ সালের মার্চে তাঁর মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। আনোয়ারুল হক বরাবরই বেশ সক্রিয় রাজনীতিবিদ। সিনেটর নির্বাচিত হওয়ার আগে তিনি প্রাদেশিক সরকারের মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করেছেন। রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকলেও আনোয়ারুল হককে দেশের একজন বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী হিসেবে গণ্য করা হয়। তিনি বেলুচিস্তান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাজনীতিবিজ্ঞান ও সামাজিক বিজ্ঞানে ডিগ্রি নেন। রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার আগে নিজ শহরের এক স্কুলে শিক্ষকতার মধ্য দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন তিনি।
শাহবাজ শরিফ ও বিরোধীদলীয় নেতার সম্মতিতে পাকিস্তানের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী একটি ছোট প্রদেশ থেকে আনোয়ারুল হক কাকারকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করায় খুশি কারাগারে থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে পিটিআইয়ের কোনো পরামর্শ নেওয়া হয়নি।
তারপরও তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আনোয়ারুল হক কাকারের মনোনয়নে খুশি হয়েছে দলটি। ইমরান খান জেলে থাকা অবস্থায় পিটিআইয়ের ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মাহমুদ কোরেশি এক প্রতিক্রিয়ায় তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রীকে শিক্ষিত ও ভদ্রলোক হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। আনোয়ারুল হক কাকার একটি ছোট প্রদেশের হওয়ায় দেশের মৌলিক সমস্যাগুলো আরও ভালোভাবে বুঝতে পারবেন এবং সেই অনুসারে তাঁর ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবেন বলে কোরেশি আশা প্রকাশ করেন। পাকিস্তানের বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফও আনোয়ারুল হকের অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হওয়া নিয়ে মন্তব্য করেন। আনোয়ারুল হক স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করবেন বলে শাহবাজ আস্থা প্রকাশ করেন। তিনি বলেছেন, তত্ত্বাবধয়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আনোয়ারুল হকের প্রতি সব পক্ষের আস্থাই প্রমাণ করে তাঁদের সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল। শাহবাজ আনোয়ারুল হককে একজন শিক্ষিত ও দেশপ্রেমিক মানুষ বলে স্বীকার করেন।
পাকিস্তানের সংবিধান অনুযায়ী, তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে অবশ্যই ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। তবে এই সময়ের মধ্যে তাঁরা নির্বাচন আয়োজন করতে পারবেন কি না, সন্দেহ আছে। কারণ, বিদায়ী শাহবাজ সরকার মেয়াদের শেষের দিকে একটি নতুন আদমশুমারি অনুমোদন করার ফলে নির্বাচন কমিশনকে আবার নতুন করে নির্বাচনী সীমানা নির্ধারণ করতে হবে।
উল্লেখ্য, চলতি মাসের শুরুর দিকে পাকিস্তানের প্রথম ডিজিটাল জনশুমারির তথ্য প্রকাশ হয়। সেই অনুযায়ী নির্বাচনী আসনগুলোর নতুন সীমানা নির্ধারণের পথে এগোচ্ছে নির্বাচন কমিশন। সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, সীমানা নির্ধারণে চার থেকে ছয় মাস সময় লাগতে পারে। যদি তা-ই হয়, তাহলে চলতি বছর পাকিস্তানে আর জাতীয় নির্বাচন হওয়ার সুযোগ থাকছে না। এটি সবারই জানা, পাকিস্তানের রাজনীতিতে সেনাবাহিনীর প্রভাব অনস্বীকার্য। ইমরান খানের গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানব্যাপী যে রাজনৈতিক অস্থিরতার সৃষ্টি হয়েছিল তাতে সেনাবাহিনীও কিছুটা নাজুক পরিস্থিতিতে পড়ে গিয়েছিল। তবে ক্ষমতাসীনদের ব্যবহার করে ধীরে ধীরে পরিস্থিতি সামাল দিয়ে সেনাবাহিনী পুনরায় তাদের কর্তৃত্বের জায়গায় ফিরে এসেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ যদি সাংবিধানিক সময়সীমার চেয়ে বৃদ্ধি পায়, তাহলে সেনাবাহিনীই লাভবান হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার যদি দীর্ঘদিন দেশ পরিচালনায় থাকে, তাহলে এ বিষয়টি যেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে তার নিয়ন্ত্রণ আরও সুসংহত করার সুযোগ তৈরি করে দেবে।
নির্বাচন বিলম্বিত হলে কিছু জটিলতারও সৃষ্টি হতে পারে। এ ক্ষেত্রে সাংবিধানিক ও আইনগত নানা প্রশ্ন সামনে চলে আসতে পারে। যদি সাংবিধানিক প্রশ্ন ওঠে, তাহলে তার সুরাহায় দেশটির সুপ্রিম কোর্টের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের প্রয়োজন পড়বে। অতীতে এমন পরিস্থিতিতে সে দেশের সুপ্রিম কোর্টের সক্রিয় পদক্ষেপ গ্রহণের রেকর্ড আছে।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর রোষানলে পড়ে ইমরান খানের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ যে সত্যিই দোদুল্যমান, তা সহজেই অনুমেয়। ইমরান খানকে আরও কত দিন কারা-অন্তরালে কাটাতে হবে, তা বলা মুশকিল। ১৫ আগস্ট স্থানীয় ‘হিংসাত্মক বিক্ষোভ’-এর অভিযোগে ইমরানের বিরুদ্ধে করা ৯টি মামলায় জামিনের জন্য যে আবেদন করা হয়েছিল, তার সবগুলোই আদালত খারিজ করে দিয়েছেন। গত ৯ মে তোষাখানা মামলায় ইমরানকে গ্রেপ্তার করা হলে যে সহিংস বিক্ষোভ হয়, সেই বিক্ষোভের মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে অভিযুক্ত করে এই মামলাগুলো করা হয়েছিল। ইমরান খানকে নিয়ে এখন চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে; বিশেষ করে তিনি আসন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন কি না, এ বিষয়টিই গুরুত্বসহকারে আলোচিত হচ্ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, ইমরান খানের বিরুদ্ধে চলমান মামলার মীমাংসা হতে মাসের পর মাস পার হয়ে যাবে। ফলে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সম্ভাবনা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে। তা ছাড়া, দুর্নীতির অভিযোগে নিম্ন আদালতে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর, দেশটির নির্বাচন কমিশন ইমরান খানকে পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচনে অংশগ্রহণে অযোগ্য ঘোষণা করেই রেখেছে। ইমরান খান এই ঘোষণার বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করেছেন। দুর্নীতির মামলায় যদি আদালত থেকে ইমরান পরিত্রাণ পানও, তারপরও বিভিন্ন বেসামরিক আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে দুই শতাধিক মামলা বিচারাধীন রয়ে গেছে। এ ছাড়া সবশেষে একটি সামরিক আদালতও তো তাঁর জন্য অপেক্ষা করছেই। আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এখানে বিবেচনা করা যেতে পারে। পাকিস্তানের বর্তমান প্রধান বিচারপতি আগামী মাসে তাঁর মেয়াদ শেষ করবেন। পরবর্তী প্রধান বিচারপতি হবেন কাজী ফয়েজ ঈসা, যিনি ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে অযোগ্য বলে বিবেচিত হয়েছিলেন। যদিও পাকিস্তানের রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, নতুন প্রধান বিচারপতি হয়তো প্রতিশোধ নেবেন না। তিনি সংবিধান অনুযায়ী কাজ করতে পারেন। তাঁরা আরও মনে করেন, পাকিস্তানের নতুন প্রধান বিচারপতি যদি শত বাধা সত্ত্বেও সংবিধান টিকিয়ে রাখার ব্যাপারে শক্ত ভূমিকা পালন করতে পারেন, তাহলে ইমরান নির্বাচনে অংশ নিতে না পারলেও, রাজনৈতিকভাবে টিকে থাকতে পারবেন। অতীতে নওয়াজ শরিফ দোষী সাব্যস্ত হওয়া সত্ত্বেও যদি টিকে থাকতে পারেন, তাহলে ইমরান খানও টিকে যাবেন।
পাকিস্তানের ইতিহাস বলে, সামরিক বাহিনীর আশীর্বাদ ছাড়া কোনো বেসামরিক শাসকের পক্ষে ক্ষমতায় টিকে থাকা সম্ভব নয়। ইমরান খানের ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছে। তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরাতে সেনাবাহিনী যে নেপথ্যে থেকে কাজ করেছে, তা এখন দিবালোকের মতো স্পষ্ট। যদিও মুসলিম লীগের নওয়াজ শরিফ, পিপিপির আসিফ আলী জারদারির সঙ্গে জোট বেঁধে সংসদে অনাস্থা প্রস্তাবের মাধ্যমে ইমরান খানকে ক্ষমতাচ্যুত করেছে। তাই বলে, এই দুটি দলের সঙ্গে সেনাবাহিনীর ভালো সখ্য রয়েছে বলা যাবে না। অতীতে নওয়াজ শরিফকে সরিয়ে দিয়ে জেনারেল পারভেজ মোশাররফকে ক্ষমতায় বসিয়েছিল সেনাবাহিনী। জুলফিকার আলী ভুট্টোর পতনও হয়েছিল সামরিক বাহিনীর হাতে। ফলে মুসলিম লীগ ও পিপিপির সঙ্গে সেনাবাহিনীর সম্পর্ক যে সহজ নয় তা বোঝা যায়। এই সবকিছু মিলিয়েই বলা যায়, ভবিষ্যতেও পাকিস্তানের রাজনীতিতে উচ্চাভিলাষী সামরিক কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ থাকবেই। পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীও সেনাবাহিনীর প্রভাবমুক্ত হয়ে কিছু করতে পারবে বলে মনে হয় না। স্বাধীনতার ৭৬ বছর পরও এভাবেই সেনাবাহিনীর ছায়াতলেই পাকিস্তানের রাজনীতি ঘুরপাক খাচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত থাকবে।
এ কে এম শামসুদ্দিন, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ও কলাম লেখক
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫পাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
০৮ মে ২০২৫