Ajker Patrika

শুল্ক কমানোর খবরে হঠাৎ তেলসংকট

জিয়াউল হক, যশোর
আপডেট : ১৩ মার্চ ২০২২, ১৫: ৪৮
শুল্ক কমানোর খবরে হঠাৎ তেলসংকট

যশোরের বাজারে হঠাৎ করেই সয়াবিন তেলের সংকট দেখা দিয়েছে। তেলের ভ্যাট কমানোর ঘোষণার পরই স্থানীয় বাজার থেকে এক প্রকার উধাও হয়ে গেছে এ নিত্যপণ্য। এ নিয়ে বিক্রেতা ও ব্যবসায়ীরা পরস্পরবিরোধী বক্তব্য দিচ্ছেন। এমন অবস্থায় মধ্যে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতারা।

গত শুক্রবারও ক্রেতাদের সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে কিনতে হয়েছে সয়াবিন তেল। অবশ্য পরিস্থিতি উত্তরণে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।

গতকাল কথা হয় চাকরিজীবী ইয়াছিন হোসেনের সঙ্গে। পুরো সপ্তাহের বাজার শুক্রবারই সারতে হয় তাঁকে। কিন্তু শহরের বড় বাজারে এসে বিপাকে পড়েন তিনি। অন্তত ৮ দোকান ঘুরেও মেলেনি প্রতিদিনকার রান্নার এ উপকরণটি।

ইয়াছিন বলেন, ‘যে দোকানেই গিয়েছি, বলছে তেল নেই। কেন নেই, জিজ্ঞেস করলে দোকানি বলেছে, আপনাকে জবাব দিতে হবে? আরও কয়েকজন সেখানে ছিল, সবার একই অবস্থা। বাজার শেষ করে তেল কেনার জন্য ভারী ব্যাগ নিয়ে ঘুরছেন সবাই। কত সময় মাথা ঠিক রাখা যায়, বলেন?’

দোকানি আবদুল মান্নান জানান, `গত প্রায় এক সপ্তাহ ধরে বাজারে তেলের সরবরাহ খুব কম। যত দিন যাচ্ছে সরবরাহ তত কমে যাচ্ছে। আমাদের চাহিদার শতকরা ১০ ভাগ তেল পাচ্ছি। ফলে আগে থেকেই সংকট শুরু হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার বড় বড় ব্যবসায়ীরা আর ফোনই ধরেনি। আমাদের কাছে যা ছিল তা, সকালেই শেষ হয়ে গেছে।’

বিক্রেতা রবিউল ইসলাম বলেন, আমাদের ১৮০-১৮৫ টাকায় কিনতে হচ্ছে। ঘর ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, কর্মচারী খরচ রয়েছে। আমরাতো ৪-৫ টাকা লাভ রাখবই। সেদিন বাজারে ডিসি অফিস থেকে লোক এসেছিল, তারা চালান দেখতে চাইছে। কিন্তু চালানে তো আর অতিরিক্ত দাম লিখে দিচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা। শুধু শুধু জরিমানা গুনতে হচ্ছে আমাদের। এ জন্য আর রাগ করে তেলই আনি নি।’

যশোর বড় বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সভাপতি কামালউদ্দিন বলেন, `ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে বাজার স্থিতিশীল থাকছে না। বিভিন্ন ধরনের গুজব ছড়িয়ে পড়ছে। এতে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী যেমন তেল মজুত করে রাখছে, তেমনি লাভ-লোকসানের ভয়ে অনেকেই তেল কিনছেন না। তা ছাড়া দীর্ঘদিন ধরে বাজার কমিটি নেই। কে আর কার কথা শুনবে? এসব সমন্বয়হীনতার কারণে তেলের স্থানীয় বাজারদর ঘন ঘন ওঠানামা করছে।’

সাবেক সভাপতি কামালউদ্দিন আরও বলেন, `খুচরা ব্যবসায়ীদের বাদ দিয়ে, বড় ব্যবসায়ীদের আগে নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। যেকোনো পরিস্থিতিতে সংকটগুলো মূলত তারাই তৈরি করে। আর সে সুযোগটি কাজে লাগিয়ে খুচরা ব্যবসায়ী আর মধ্যস্বত্বভোগীরা কারসাজির মাধ্যমে ভোগান্তি আরও বাড়িয়ে দেয়।’

এদিকে বাজার অস্থিতিশীল করার জন্য দায়ীদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, ভোক্তা অধিদপ্তর যৌথভাবে মাঠে নেমেছে। বাজার মনিটরিংয়ের পাশাপাশি তালিকা করা হচ্ছে মজুতদার ও ব্যবসায়ীদের। অসাধু ব্যবসায়ীদের জরিমানা করাও শুরু করা হয়েছে।

যশোরের জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান বলেন, `আমরা শুরুতে সবাইকে সতর্ক করেছিলাম। এতে অনেকেই স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় ফিরে এসেছে। আমরা এখন সার্বিক দিক বিবেচনায় কয়েক স্তরে কাজ করছি। আশা করছি রমজানের আগে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে। মানুষজনকে আর ভোগান্তি পোহাতে হবে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

অপারেশন সিন্দুর ঘিরে আলোচিত কে এই কর্নেল সোফিয়া কুরেশি

কাশ্মীরে বিধ্বস্ত বিমানের অংশবিশেষ ফরাসি কোম্পানির তৈরি, হতে পারে রাফাল

সীমান্তে সাদা পতাকা উড়িয়ে আত্মসমর্পণের ইঙ্গিত দিয়েছে ভারত: পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী

নিজ কার্যালয়ে র‍্যাব কর্মকর্তার গুলিবিদ্ধ লাশ, পাশে চিরকুট

আকাশ প্রতিরক্ষায় কে এগিয়ে, পাকিস্তান কি ভারতের আক্রমণ ঠেকাতে সক্ষম

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত