তাপস মজুমদার
ছাগলের সব কাণ্ড তাহলে ছাগলামি নয়—মানে তুচ্ছার্থে ব্যবহার্য নয়। তাকে নিয়ে কোনো কিছু বলার আগে দশবার চিন্তা করতে হবে। কেননা ছাগলও দিতে পারে অনেক গূঢ় রহস্যের সন্ধান। সহায়তা করতে পারে অনেক বড় দুর্নীতির আবিষ্কারে।
কোন ঘটনা দিয়ে শুরু করব? এটা ভাবনার ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। বেনজীরকাণ্ড, আনার হত্যাকাণ্ড, আজিজ আহমেদ, আছাদুজ্জামান, মতিউর রহমান, রফিকুল ইসলাম, কাজী ফয়সল...! একটির পর একটি মহা দুর্নীতির খবর আসছে। এই লেখা যখন প্রকাশিত হবে, তখন হয়তো আরও নতুন ঘটনা সামনে এসে দাঁড়াবে। খুব ভালো। এ রকম ঘটনা সামনে আসুক, সেটা আমরা চাই। প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত অভিযান যেন বন্ধ না হয়।
সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি মুহাম্মদ আবদুল হাফিজ বলেছেন, ‘দুর্নীতি আমাদের সব অর্জনকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের হাত থেকে অফিস-আদালতকে মুক্ত রাখতে হবে।...একজন বেতনভোগী কর্মকর্তা-কর্মচারী কীভাবে কোটি কোটি এমনকি শতকোটি টাকার মালিক হন, তা দেশবাসীকে হতবাক করে। তাই এগুলোকে রোধ করতে রাষ্ট্রকেই দায়িত্ব নিতে হবে।’
দুদক এখন পর্যন্ত বেনজীরসহ বেশ কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তা ও তাঁদের পরিবারের যে জমি, শেয়ার, ফ্ল্যাট, ব্যাংক হিসাব ও তার স্থিতি, সঞ্চয়পত্র, বিও হিসাব, পাসপোর্ট খুঁজে পেয়েছে, তা মাথা ঘুরিয়ে দেওয়ার মতো। দু-একটি নমুনা—একজন ডিআইজির বাড়িতে শুধু আসবাবই ৫৬ কোটি টাকা মূল্যের। মতিউর রহমানের প্রতিদিনের মনোরঞ্জনের খরচ লাখ টাকা। সাবেক আইজিপি বেনজীরের পাসপোর্ট সংখ্যা সাত এবং তাঁর তুরস্ক, পর্তুগাল ও পাপুয়া নিউগিনির পাসপোর্ট রয়েছে। যাঁরা এসব করেছেন, তাঁরা বড় পদের মানুষ।
ঢাকার রাজপথে প্রখর রোদে কৃশকায় বৃদ্ধা তালের পাখা বিক্রি করেন, একজন সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধও ভ্যান চালিয়ে দিনাতিপাত করেন, মায়ের চিকিৎসার জন্য একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মানুষের কাছে হাত পাতেন। এসব তাহলে কে দেখবে?
ভুল চিকিৎসায় ঐশীরা আত্মহত্যা করে, পরিবহনের সীমাহীন বিশৃঙ্খলায় গণমানুষ দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধিসহ হাজারো দুর্ভোগ পোহায়, ভেজাল খাদ্যে গোটা জাতির জীবন এবং স্বাস্থ্য বিনষ্ট হয়ে যায়, দুর্নীতি দমন কমিশনে শত শত কোটি টাকার দুর্নীতির চারবার অনুসন্ধানও ব্যর্থ হয়ে যায়—এসব তাহলে কে ধরবে?
প্রায়ই শুনতে পাওয়া যায় জমির, ফ্ল্যাটের অবৈধ দখল ছাড়াতে বা জমির অন্য কোনো সমস্যা মেটাতে প্রভাবশালী লোকগুলো তার শেয়ারহোল্ডার বা আংশিক মালিক বনে যান। টাকাওয়ালা মানুষের ছেলেমেয়েরা হোটেলে রাত কাটাচ্ছে হয়তো বন্ধু বা বান্ধবীকে নিয়ে।
পুলিশ সেটা ধরে তাদের ছেড়ে দিতে বড় অঙ্কের টাকা নিচ্ছে। পুলিশ অবৈধ পয়সার মালিক হয়ে গড়ে তুলছে ব্যক্তিগত সাম্রাজ্য। আর যাদের ধরা হলো, তারা সংশোধন হওয়ার বদলে জানল যে টাকা হলেই অন্যায়ের রাস্তা খোলা। তখন তারা সাহস করে অবৈধ কাজ এবং বড় বড় দুর্নীতিতে ঢুকে পড়ছে।
গুণ থাক আর না থাক, রাজনীতির বোধ ও দেশপ্রেম থাক না থাক—আমাদের সরকারি চাকরির অবসর নেওয়া কর্মকর্তা, ক্রিকেট প্লেয়ার, সংগীতশিল্পী, অভিনেতা, ব্যবসায়ীসহ একটু হাতে পয়সা এসেছে অথবা সেলিব্রেটি হয়ে উঠেছে—তাদের প্রায় সবাইকে এমপি হতে হবে অথবা চাকরি শেষ হওয়ার পরও যেনতেনভাবে আরেকটি কন্ট্রাক্ট নিতে হবে—গভর্নর, কোনো কমিশন বা কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বা পরিচালক অথবা নিদেনপক্ষে কোনো ব্যাংকের পরিচালক। এক অদ্ভুত আকাঙ্ক্ষা! ‘না’ বলার মতো মানসিকতা তো নেই-ই; বরং ‘সব পেতে চাই’-এর লোভ। তারপরও আপত্তি নেই, যদি যোগ্যতা থাকে!
দেখা যাচ্ছে এই কর্মকর্তা নামধারী দুর্বৃত্তদের অনেকেই পিএইচডি হোল্ডার। তাঁদের পিএইচডি ডিগ্রি কেন দরকার? তদুপরি একজন পিএইচডিধারী মানুষ যদি দেশপ্রেমিক ও মানবিক না হন, জ্ঞানপিপাসু না হন, অন্যকে জ্ঞান আহরণে উদ্বুদ্ধ করতে না পারেন—তাহলে তিনি কেন পিএইচডি করবেন? এতে জগতের কী লাভ? কেন তাঁদের এই অনুমতি দেওয়া হয়? এই ডিগ্রিকে ব্যবহার করে তিনি অনেক অনৈতিক সুবিধা নিতে পারেন।
অপর পিএইচডিধারী উপযুক্ত মানুষকে নিয়ে সাধারণ মানুষের তুচ্ছতাচ্ছিল্য করার সুযোগ তৈরি করে দেন। তাতে প্রকৃত মানী ব্যক্তির সম্মানের হানি হয়। একদিকে গালভরা পিএইচডি ডিগ্রি; অপরদিকে অর্থের পাহাড়—অযোগ্যের হাতে পড়লে অহংকার তৈরি হয়। ফলে তার মধ্যে যে উন্নসিকতা জন্ম নেয়, সেটা অন্যকে ঈর্ষা-হিংসার আবর্তে ঠেলে দিতে পারে। যদি এটা জঙ্গল হতো, অথবা হতো পিছিয়ে পড়া জনপদ, তাহলে মানুষের সুখের সংজ্ঞা হয়তো অন্য রকম হতো। কিন্তু তা তো নয়!
আমার মনে হয়, সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতি বন্ধ হলে প্রায় সব সেক্টরে দুর্নীতি বন্ধ হয়ে যাবে। ব্যবসায়ী, রাজনীতিক, শিক্ষক, ব্যাংকার সবার। কেননা যেসব কর্মকাণ্ডে দুর্নীতিগুলো ঘটে, সেই সব কর্মকাণ্ড খোদ সরকারি কর্মকর্তারাই সমাধান করে থাকেন। যেমন নতুন ব্যাংক খোলা, ব্যবসার লাইসেন্স দেওয়া, উচ্চপদে পদোন্নতি, উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, কর্তৃপক্ষের প্রধান নিয়োগ, ক্রয়সংক্রান্ত বাজেট বরাদ্দ, নতুন নিয়োগসহ যেকোনো রকম আর্থিক অনুমোদন...! শুধু বিচার এবং আইন প্রণয়ন থাকছে তাঁদের বাইরে।
বঙ্গবন্ধুর পর দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ক্যারিশমাটিক ও স্মার্ট নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের হাল ধরেছেন। আমাদের আশা তাই অনেক। তিনি বলেছেন, ‘আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছি।’ এটা আমাদের বহু প্রতীক্ষিত চাওয়া। আমরা চাই অভিযান প্রতিনিয়ত চলুক। অবশ্যই সৎমানুষের দ্বারা চলুক এবং তাঁদের অভয় দিয়ে সর্বাত্মক সমর্থন দেওয়া হোক।
দীর্ঘ মেয়াদে ভালো মানুষ তৈরিতে মনোযোগ দিতে হবে—তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে এখনই সব অফিসপ্রধানের থেকে সম্পদের হিসাব বা হলফনামা নেওয়া দরকার—বিশেষ করে বিভিন্ন প্রকল্প পরিচালক, সচিব, প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার...। শুধু মেধা ও অভিজ্ঞতা নয়, কর্মকর্তাদের নৈতিকতা, সততা, দক্ষতা, সৃজনশীলতা, পারিবারিক এবং ব্যক্তিগত অতীত দেখে উচ্চ পদে নিযুক্ত করা হোক।
আমাদের তো অনেক কিছু চলে গেছে—মুক্ত বাতাস, খোলা মাঠ, খেলাধুলা, সাঁতার, বই পড়া, বিপুল সবুজ, যাত্রা ও পালাগান—এমন কত কিছু! তার অনেক কিছুই হয়তো আর ফিরিয়ে আনা যাবে না। কিন্তু এই সব মূর্খের মতো কর্মকাণ্ডে সর্বনিম্ন বিবেচনা বোধটুকুও যদি হারিয়ে যায়, জাতি তাহলে চিরতরে পথ হারাবে। আমরা সেটা হতে দিতে চাই না।
লেখক: সাংস্কৃতিক সংগঠক ও সাবেক ব্যাংকার
ছাগলের সব কাণ্ড তাহলে ছাগলামি নয়—মানে তুচ্ছার্থে ব্যবহার্য নয়। তাকে নিয়ে কোনো কিছু বলার আগে দশবার চিন্তা করতে হবে। কেননা ছাগলও দিতে পারে অনেক গূঢ় রহস্যের সন্ধান। সহায়তা করতে পারে অনেক বড় দুর্নীতির আবিষ্কারে।
কোন ঘটনা দিয়ে শুরু করব? এটা ভাবনার ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। বেনজীরকাণ্ড, আনার হত্যাকাণ্ড, আজিজ আহমেদ, আছাদুজ্জামান, মতিউর রহমান, রফিকুল ইসলাম, কাজী ফয়সল...! একটির পর একটি মহা দুর্নীতির খবর আসছে। এই লেখা যখন প্রকাশিত হবে, তখন হয়তো আরও নতুন ঘটনা সামনে এসে দাঁড়াবে। খুব ভালো। এ রকম ঘটনা সামনে আসুক, সেটা আমরা চাই। প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত অভিযান যেন বন্ধ না হয়।
সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি মুহাম্মদ আবদুল হাফিজ বলেছেন, ‘দুর্নীতি আমাদের সব অর্জনকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের হাত থেকে অফিস-আদালতকে মুক্ত রাখতে হবে।...একজন বেতনভোগী কর্মকর্তা-কর্মচারী কীভাবে কোটি কোটি এমনকি শতকোটি টাকার মালিক হন, তা দেশবাসীকে হতবাক করে। তাই এগুলোকে রোধ করতে রাষ্ট্রকেই দায়িত্ব নিতে হবে।’
দুদক এখন পর্যন্ত বেনজীরসহ বেশ কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তা ও তাঁদের পরিবারের যে জমি, শেয়ার, ফ্ল্যাট, ব্যাংক হিসাব ও তার স্থিতি, সঞ্চয়পত্র, বিও হিসাব, পাসপোর্ট খুঁজে পেয়েছে, তা মাথা ঘুরিয়ে দেওয়ার মতো। দু-একটি নমুনা—একজন ডিআইজির বাড়িতে শুধু আসবাবই ৫৬ কোটি টাকা মূল্যের। মতিউর রহমানের প্রতিদিনের মনোরঞ্জনের খরচ লাখ টাকা। সাবেক আইজিপি বেনজীরের পাসপোর্ট সংখ্যা সাত এবং তাঁর তুরস্ক, পর্তুগাল ও পাপুয়া নিউগিনির পাসপোর্ট রয়েছে। যাঁরা এসব করেছেন, তাঁরা বড় পদের মানুষ।
ঢাকার রাজপথে প্রখর রোদে কৃশকায় বৃদ্ধা তালের পাখা বিক্রি করেন, একজন সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধও ভ্যান চালিয়ে দিনাতিপাত করেন, মায়ের চিকিৎসার জন্য একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মানুষের কাছে হাত পাতেন। এসব তাহলে কে দেখবে?
ভুল চিকিৎসায় ঐশীরা আত্মহত্যা করে, পরিবহনের সীমাহীন বিশৃঙ্খলায় গণমানুষ দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধিসহ হাজারো দুর্ভোগ পোহায়, ভেজাল খাদ্যে গোটা জাতির জীবন এবং স্বাস্থ্য বিনষ্ট হয়ে যায়, দুর্নীতি দমন কমিশনে শত শত কোটি টাকার দুর্নীতির চারবার অনুসন্ধানও ব্যর্থ হয়ে যায়—এসব তাহলে কে ধরবে?
প্রায়ই শুনতে পাওয়া যায় জমির, ফ্ল্যাটের অবৈধ দখল ছাড়াতে বা জমির অন্য কোনো সমস্যা মেটাতে প্রভাবশালী লোকগুলো তার শেয়ারহোল্ডার বা আংশিক মালিক বনে যান। টাকাওয়ালা মানুষের ছেলেমেয়েরা হোটেলে রাত কাটাচ্ছে হয়তো বন্ধু বা বান্ধবীকে নিয়ে।
পুলিশ সেটা ধরে তাদের ছেড়ে দিতে বড় অঙ্কের টাকা নিচ্ছে। পুলিশ অবৈধ পয়সার মালিক হয়ে গড়ে তুলছে ব্যক্তিগত সাম্রাজ্য। আর যাদের ধরা হলো, তারা সংশোধন হওয়ার বদলে জানল যে টাকা হলেই অন্যায়ের রাস্তা খোলা। তখন তারা সাহস করে অবৈধ কাজ এবং বড় বড় দুর্নীতিতে ঢুকে পড়ছে।
গুণ থাক আর না থাক, রাজনীতির বোধ ও দেশপ্রেম থাক না থাক—আমাদের সরকারি চাকরির অবসর নেওয়া কর্মকর্তা, ক্রিকেট প্লেয়ার, সংগীতশিল্পী, অভিনেতা, ব্যবসায়ীসহ একটু হাতে পয়সা এসেছে অথবা সেলিব্রেটি হয়ে উঠেছে—তাদের প্রায় সবাইকে এমপি হতে হবে অথবা চাকরি শেষ হওয়ার পরও যেনতেনভাবে আরেকটি কন্ট্রাক্ট নিতে হবে—গভর্নর, কোনো কমিশন বা কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বা পরিচালক অথবা নিদেনপক্ষে কোনো ব্যাংকের পরিচালক। এক অদ্ভুত আকাঙ্ক্ষা! ‘না’ বলার মতো মানসিকতা তো নেই-ই; বরং ‘সব পেতে চাই’-এর লোভ। তারপরও আপত্তি নেই, যদি যোগ্যতা থাকে!
দেখা যাচ্ছে এই কর্মকর্তা নামধারী দুর্বৃত্তদের অনেকেই পিএইচডি হোল্ডার। তাঁদের পিএইচডি ডিগ্রি কেন দরকার? তদুপরি একজন পিএইচডিধারী মানুষ যদি দেশপ্রেমিক ও মানবিক না হন, জ্ঞানপিপাসু না হন, অন্যকে জ্ঞান আহরণে উদ্বুদ্ধ করতে না পারেন—তাহলে তিনি কেন পিএইচডি করবেন? এতে জগতের কী লাভ? কেন তাঁদের এই অনুমতি দেওয়া হয়? এই ডিগ্রিকে ব্যবহার করে তিনি অনেক অনৈতিক সুবিধা নিতে পারেন।
অপর পিএইচডিধারী উপযুক্ত মানুষকে নিয়ে সাধারণ মানুষের তুচ্ছতাচ্ছিল্য করার সুযোগ তৈরি করে দেন। তাতে প্রকৃত মানী ব্যক্তির সম্মানের হানি হয়। একদিকে গালভরা পিএইচডি ডিগ্রি; অপরদিকে অর্থের পাহাড়—অযোগ্যের হাতে পড়লে অহংকার তৈরি হয়। ফলে তার মধ্যে যে উন্নসিকতা জন্ম নেয়, সেটা অন্যকে ঈর্ষা-হিংসার আবর্তে ঠেলে দিতে পারে। যদি এটা জঙ্গল হতো, অথবা হতো পিছিয়ে পড়া জনপদ, তাহলে মানুষের সুখের সংজ্ঞা হয়তো অন্য রকম হতো। কিন্তু তা তো নয়!
আমার মনে হয়, সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতি বন্ধ হলে প্রায় সব সেক্টরে দুর্নীতি বন্ধ হয়ে যাবে। ব্যবসায়ী, রাজনীতিক, শিক্ষক, ব্যাংকার সবার। কেননা যেসব কর্মকাণ্ডে দুর্নীতিগুলো ঘটে, সেই সব কর্মকাণ্ড খোদ সরকারি কর্মকর্তারাই সমাধান করে থাকেন। যেমন নতুন ব্যাংক খোলা, ব্যবসার লাইসেন্স দেওয়া, উচ্চপদে পদোন্নতি, উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, কর্তৃপক্ষের প্রধান নিয়োগ, ক্রয়সংক্রান্ত বাজেট বরাদ্দ, নতুন নিয়োগসহ যেকোনো রকম আর্থিক অনুমোদন...! শুধু বিচার এবং আইন প্রণয়ন থাকছে তাঁদের বাইরে।
বঙ্গবন্ধুর পর দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ক্যারিশমাটিক ও স্মার্ট নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের হাল ধরেছেন। আমাদের আশা তাই অনেক। তিনি বলেছেন, ‘আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছি।’ এটা আমাদের বহু প্রতীক্ষিত চাওয়া। আমরা চাই অভিযান প্রতিনিয়ত চলুক। অবশ্যই সৎমানুষের দ্বারা চলুক এবং তাঁদের অভয় দিয়ে সর্বাত্মক সমর্থন দেওয়া হোক।
দীর্ঘ মেয়াদে ভালো মানুষ তৈরিতে মনোযোগ দিতে হবে—তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে এখনই সব অফিসপ্রধানের থেকে সম্পদের হিসাব বা হলফনামা নেওয়া দরকার—বিশেষ করে বিভিন্ন প্রকল্প পরিচালক, সচিব, প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার...। শুধু মেধা ও অভিজ্ঞতা নয়, কর্মকর্তাদের নৈতিকতা, সততা, দক্ষতা, সৃজনশীলতা, পারিবারিক এবং ব্যক্তিগত অতীত দেখে উচ্চ পদে নিযুক্ত করা হোক।
আমাদের তো অনেক কিছু চলে গেছে—মুক্ত বাতাস, খোলা মাঠ, খেলাধুলা, সাঁতার, বই পড়া, বিপুল সবুজ, যাত্রা ও পালাগান—এমন কত কিছু! তার অনেক কিছুই হয়তো আর ফিরিয়ে আনা যাবে না। কিন্তু এই সব মূর্খের মতো কর্মকাণ্ডে সর্বনিম্ন বিবেচনা বোধটুকুও যদি হারিয়ে যায়, জাতি তাহলে চিরতরে পথ হারাবে। আমরা সেটা হতে দিতে চাই না।
লেখক: সাংস্কৃতিক সংগঠক ও সাবেক ব্যাংকার
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫পাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
০৮ মে ২০২৫