Ajker Patrika

বাজারের আগুন নেভাতেই হবে

সম্পাদকীয়
বাজারের আগুন নেভাতেই হবে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় শনিবার দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে জনপ্রতিনিধিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। পাইকারি বাজারে চাঁদাবাজি, চলার পথের চাঁদাবাজি ও অবৈধ মজুতদারি বন্ধ করতে হবে বলে উল্লেখ করেছেন।

চাঁদাবাজি ও মজুতদারি যে পণ্যমূল্য বৃদ্ধির বড় কারণ, তাতে সন্দেহ নেই। সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণের কথা বলছে, বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছে কিন্তু দাম বাড়ার ধারা অব্যাহত রয়েছে। এর মধ্যে রমজান মাসে নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে সরকার চাল, ভোজ্যতেল, চিনি ও খেজুরের আমদানি শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বৃহস্পতিবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

এনবিআরের প্রজ্ঞাপনে ভোজ্যতেল আমদানিতে মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ১৫ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ, খেজুরে ২৫ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। চাল আমদানিতে শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করে রেগুলেটরি ডিউটি ২৫ থেকে কমিয়ে করা হয়েছে ৫ শতাংশ। আর অপরিশোধিত চিনির আমদানি শুল্ক টনপ্রতি তিন হাজার টাকা থেকে কমিয়ে এক হাজার এবং পরিশোধিত চিনির শুল্ক ছয় হাজার থেকে কমিয়ে দুই হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এই প্রজ্ঞাপন জারির পর রাজধানীর পাইকারি বাজারে পাম ও সয়াবিন তেলের দাম না কমে উল্টো মণপ্রতি ৪০-৫০ টাকা বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, যে পরিমাণ শুল্ক কমানো হয়েছে, তাতে বাজারে তেমন প্রভাব পড়বে না।

আমাদের ব্যবসায়ীরা কখনো দাম কমানোর কথা ভাবেন না, দাম বাড়ানোর ফন্দিফিকিরে তাঁরা ওস্তাদ। ব্যবসায়ীদের লোভের জিহ্বা সব সময় লকলক করে।

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, বর্তমান সরকার পণ্যের দাম যৌক্তিক পর্যায়ে রাখতে আন্তরিকভাবে চেষ্টা করছে। পণ্যমূল্য ভোক্তাদের নাগালে রাখতে আমদানি শুল্ক কমানো তারই প্রতিচ্ছবি। তিনি বলেছেন, প্রয়োজনে জরুরি আইন প্রয়োগ করে বাজারে পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করা হবে।

সরকারের ওপর একটু আস্থা রাখার আহ্বান জানিয়ে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, আগে যেভাবে সরকারের পক্ষ থেকে বলার পরও দাম কমেনি, সেটা আর হবে না।

মানুষ তো সেটাই দেখতে চায়। কিন্তু ব্যবসায়ীরা ‘শুল্ক কমানোর কোনো প্রভাব বাজারে পড়বে না’, বলে শুরুতেই তো সরকারের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন।

সরকারের উচিত, পণ্যের ওপর শুল্ক কমানোর সুবিধা সাধারণ ভোক্তারা কেন পাবে না, সেই প্রশ্নের জবাব ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে আদায় করা। ব্যবসায়ীরা যেভাবে খেয়ালখুশিমতো পণ্যের দাম বাড়িয়ে ভোক্তাদের পকেট কাটেন, সেটা আর চলতে দেওয়া ঠিক হবে না।

নানা অজুহাতে দ্রব্যমূল্য বাড়ানোটা আইনগতভাবে যেমন দণ্ডনীয় তেমনি নৈতিক দিক থেকেও নিন্দনীয়। দেশে ভোক্তাদের অধিকার সংরক্ষণের জন্য আছে সরকারি প্রতিষ্ঠান জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। মাঝেমধ্যে এই অধিদপ্তরের তৎপরতার খবর পাওয়া যায়। কিন্তু তাতে বাজারের আগুন নেভে না। এই আগুন নেভানোর জন্য যা যা করা দরকার, সবই করতে হবে সরকারকে। বাজার নিয়ে ভীতি দূর না হলে মানুষের মনে আস্থা ফিরবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৬১৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ: এক্সিম ব্যাংকের নজরুল ইসলাম মজুমদারসহ ৩০ জনের নামে মামলা

‘কথিত আওয়ামী লীগ সদস্যদের’ বাংলাদেশবিরোধী তৎপরতার বিষয়ে ভারত অবহিত নয়: মুখপাত্র

কলকাতার নিউটাউনে বসে আয়েশ করছেন আওয়ামী লীগ নেতারা

চাকরি না ছেড়েই বিদেশে পাড়ি, ৪৮ শিক্ষক বরখাস্ত

ভিসা ছাড়া পাকিস্তান সফরের চুক্তি হতে পারে শিগগির

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত