Ajker Patrika

বঙ্গবন্ধু না হলে বাংলাদেশ হতো না

মীর রাকিব হাসান
আপডেট : ১৭ মার্চ ২০২২, ১৫: ৩০
বঙ্গবন্ধু না হলে বাংলাদেশ হতো না

বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আমার সম্পর্ক ১৯৬৬ সাল থেকে। আমরা ছাত্রলীগ করতাম, উনি আমাদের নেতা ছিলেন, আদর্শ ছিলেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে দুই-একবার দেখা হয়েছে। তাঁর জন্মদিনে আলাদা করে বড় কোনো আয়োজন আমার চোখে পড়েনি। তবে ওই দিন বাইরে খুব একটা কাজ রাখতেন না তিনি। আমরা দেখা করে সেদিন কথা বলার সুযোগ পেতাম একটু বেশি। তাঁর বাসায় এমনিতেই নানা পদের রান্না হতো, জন্মদিনেও ব্যতিক্রম ঘটত না। সেই সুস্বাদু খাবার আমাদের দিতেন আমাদের ভাবি (বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা)।

আসলে তখন জন্মদিনের সংস্কৃতিটাও ওভাবে ছিল না। উনি রাজনীতি করতেন, দেশের জন্য কাজ করতে করতেই ওনার দিন, সপ্তাহ, মাস, বছর চলে গেছে। জেলে ছিলেন মাসের পর মাস। স্বাধীনতার পর তিনি জন্মদিন পালন করলেও সেটা খুবই ঘরোয়াভাবে হয়তো করেছেন। এমন বড় করে করেননি, যেটা বাইরে থেকে আমরা টের পাব। তবে তাঁর জন্মদিন আমরা ইকবাল হলে উদ্‌যাপন করতাম।

বঙ্গবন্ধু না হলে এ দেশের স্বাধীনতার পতাকাটা পেতাম না। বঙ্গবন্ধু না হলে বাংলাদেশ হতো না। এই বাংলাদেশের যা কিছু প্রাপ্তি, সবই তাঁর জন্য। ইতিহাস বলে, চলচ্চিত্রকে নিয়ে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অনেক বড় স্বপ্ন দেখেছিলেন। সে জন্যই ১৯৫৭ সালে তিনি প্রাদেশিক সরকারের শিল্পমন্ত্রী থাকাকালে সংসদে চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (এফডিসি) বিল উত্থাপন করেন এবং এফডিসি বিল পাস হয়।

একটি দেশের জন্য তার সংস্কৃতি কত বড় হাতিয়ার, তা অনুধাবন করতেন বলেই বঙ্গবন্ধু বাংলার সংস্কৃতির জন্য এফডিসি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তার আগে তো পাকিস্তানিরা বলত, আমরা সিনেমা বানাতে পারি না।

সোহেল রানা, অভিনেতাআমরা ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে ছিলাম। ২০ জনের একটি কমিটি ছিল। স্বাধীনতাযুদ্ধ পর্যন্ত ছাত্রলীগের এই কমিটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর ছিল। আমরা এটাকে বলি বঙ্গবন্ধুর ব্রেইন চাইল্ড। আমরা ইকবাল হলের ছাত্রনেতারা প্রায় প্রতিদিনই বঙ্গবন্ধুর বাসায় যেতাম। আলাপ করতাম। তাঁর সঙ্গে আমাদের বন্ধুর মতো সম্পর্ক ছিল। তিনি কথা বলতেন, আমরা মনোযোগ দিয়ে বাধ্য ছাত্রর মতো শুনতাম। আমরা প্রচণ্ড ভয় পেতাম তাঁকে। তাঁর চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলার সাহস আমাদের হতো না।

অনেক সময় সৈয়দ নজরুল ইসলাম কিংবা তাজউদ্দীন আহমদের মতো সিনিয়র নেতারা আসতেন। তখন উনি আমাদের বলতেন, ‘যা ভেতরে যা।’ আমরা ভেতরে চলে যেতাম। তখন আমাদের দেখা হতো বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের সঙ্গে। আমরা তাঁকে ভাবি ডাকতাম। তিনি আমাদের দেখে বলতেন, ‘তোরা আসছো। বস, দেখি তোদের কী দিতে পারি।’ মায়ের সামনে যেমন সন্তানেরা আবদার করে। আমরা এটা-ওটা বায়না ধরতাম। তিনি খাবার নিয়ে আসতেন। বসে আমাদের সঙ্গে কথা বলতেন। এটা বঙ্গবন্ধু জানতেন। এ জন্যই আমাদের যাওয়ার আগে তিনি বলতেন, ‘যা, ভেতর থেকে ঘুরে যা তোরা।’

অনুলিখন: মীর রাকিব হাসান

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইরানের ‘দানবীয় ক্ষেপণাস্ত্রের’ সামনে উন্মুক্ত ইসরায়েলের ‘অ্যাকিলিস হিল’

ভারতীয় বিমানবন্দরে ১১ দিন ধরে পড়ে আছে ব্রিটিশ এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান, ঘনাচ্ছে রহস্য

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার ফল আজ, যেভাবে দেখবেন

মামদানি শতভাগ কমিউনিস্ট উন্মাদ, দেখতেও খারাপ: ট্রাম্প

খামেনি কোথায়, কেমন আছেন—উৎকণ্ঠিত ইরানিদের প্রশ্নের বন্যা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত