Ajker Patrika

সহপাঠী ‘হত্যার’ বিচার দাবি

রাঙামাটি প্রতিনিধি
আপডেট : ০২ নভেম্বর ২০২১, ১২: ০৭
সহপাঠী ‘হত্যার’ বিচার দাবি

রাঙামাটি সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী পূর্ণিমা চাকমাকে হত্যার অভিযোগ এনে বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন সহপাঠী ও স্বজনেরা। গতকাল সোমবার সকালে জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

এতে বক্তব্য দেন হাসপাতালে প্রত্যক্ষদর্শী রিপেন চাকমা (২৮) ক্ষুদিরাম চাকমা (৩৫)। এর আগে গত শুক্রবার শহরের রাজাবাড়ি মল্লিকা দেওয়ানের বাড়ি থেকে পুর্ণিমার লাশ উদ্ধার করা হয়।

রিপেন চাকমা তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘পূর্ণিমার লাশ যখন হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়, তখন আমি সর্বপ্রথম দেখেছি। মেয়েটি পরিচিত হওয়ায় আমি জরুরি বিভাগে গিয়ে দেখেছি। পুর্ণিমার লাশ হাসপাতালে নিয়ে আসে অঞ্জলী চাকমা ওরফে গাণ্ডি। এসে প্রথমে গান্ডি বলেছিলেন মেয়েটি স্ট্রোক করেছে। এর কিছুক্ষণ পর বাড়ির মালিক মল্লিকা দেওয়ান এসে বলে ফ্যানে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে। পুর্ণিমা জিনস প্যান্ট পরা ছিল। তার প্যান্ট ভেজা ছিল। তাদের কথাবার্তার কিছুই মিল ছিল না।’

ক্ষুদিরাম চাকমা তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘হাসপাতালে গান্ডি, মল্লিকা, নিকেতার বক্তব্য কারোরই মিল ছিল না। পরে লাশ ফেলে এঁরা সবাই চলে যায়। এটা আত্মহত্যা হতে পারে না। এ ঘটনায় পুলিশ সুষ্ঠু তদন্ত করলে সবকিছু বেরিয়ে আসবে।’

পূর্ণিমার মামাতো ভাই পলাশ চাকমা বলেন, ‘পূর্ণিমা আত্মহত্যা করেছে বলা হচ্ছে; এটি মিথ্যা কথা। আত্মহত্যা করেছে এটা কেউ দেখেনি। পূর্ণিমা সত্যি যদি ফ্যানে ঝুলে আত্মহত্যা করে থাকে, তারা পুলিশকে খবর দিতে পারত। তারা তা করেনি।’

পুর্ণিমার সহপাঠী বিনু চাকমা বলেন, ‘আমরা দ্রুত ময়নাতদন্তের সুষ্ঠু প্রতিবেদন দাবি করছি। মানববন্ধনে বক্তারা এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দাবি করেন। জুরাছড়ি সুশীল সমাজের প্রতিনিধি মহারঞ্জন চাকমার সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন, পুর্ণিমার মামাতো ভাই পলাশ চাকমা, সহপাঠী সাধনা চাকমা, দুমদুম্যা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রাজেয়ে চাকমা।

রাঙামাটি কোতোয়ালি থানার পুলিশ উপপরিদর্শক রমজান বলেন, এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। এ মামলায় সংবাদ প্রেরক হিসেবে নিকেতা দেওয়ানকে বাদী করা হয়েছে। পূর্ণিমার লাশের ময়নাতদন্ত হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়া গেলে বলা যাবে খুন না আত্মহত্যা।

রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের আরএমও শওকত আকবর খান বলেন, ‘হাসপাতালে লাশ নিয়ে আসার পর আমাদের কাছে দুই ধরনের তথ্য বলা হয়েছে। প্রথমে বলা হয়েছিল হার্ট অ্যাটাক; পরে বলা হয়েছে আত্মহত্যা। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন আসতে এক মাসের মতো সময় লাগতে পারে।’

এদিকে পূর্ণিমার বাবা সাধন কুমার চাকমা বলেন, ‘মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। যেখানে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে বলা হচ্ছে, সেটা অনেক উঁচু। ওড়না দিয়ে ঝুলতে হলে সেখানে চেয়ার-টেবিল বা মই দরকার। কিন্তু সেই রুমে এমন কোনো কিছুই ছিল না। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দাবি করছি।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে গতকাল সোমবার বেলা ১টা ১২ মিনিটের দিকে নিকেতা দেওয়ানকে মোবাইলে কল করা হয়। সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর নিকেতা দেওয়ান অজুহাত দেখিয়ে কল কেটে দেন। পরে প্রতিবেদকের মোবাইল নম্বর ‘ব্ল্যাক’ লিস্টে রেখে দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত