Ajker Patrika

বাজেটেও রাজনীতির মারপ্যাচ!

আজকের পত্রিকা ডেস্ক
আপডেট : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১০: ০৯
বাজেটেও রাজনীতির মারপ্যাচ!

সম্প্রতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করেছে ভারত। দেশটির অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামণ এ বাজেট ঘোষণা করেন। কিন্তু উপস্থাপিত বার্ষিক কেন্দ্রীয় বাজেট নিয়ে ক্রমশ সংশয়বাদী হয়ে উঠছেন ভারতীয় সমালোচকেরা। তাঁরা বলছেন, সম্ভাব্য করোনা মহামারি-পরবর্তী যুগের প্রথম এই বাজেটে প্রতিফলিত হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অগ্রাধিকারমূলক নানা বিষয়, যেখানে রয়েছে রাজনৈতিক অনেক সমীকরণ।

সংবাদমাধ্যম দ্য ডিপ্লোম্যাটের এক প্রতিবেদন বলছে, ভারতের এবারের (২০২২-২০২৩) বাজেটের পেছনের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বেশ সুদূরপ্রসারী। তবে এমন সময়ে বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে যখন সরকারের সঙ্গে দেশটির বিক্ষুব্ধ কৃষকদের দ্বন্দ্ব চলছে এবং উত্তর প্রদেশ ও পাঞ্জাবের মতো কৃষিপ্রধান রাজ্যগুলোতে বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

অনেকেই মনে করেছিলেন ভারতের জনবহুল এবং রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় রাজ্যগুলোতে কৃষি খাতের জন্য বেশি অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হবে। কিন্তু সেই প্রত্যাশা পূরণ হয়নি বাজেটে। যদিও সরকার নির্ধারিত মূল্যে কৃষকদের কাছ থেকে চাল এবং গম সংগ্রহের প্রতিশ্রুতি দিয়ে এ খাতে ২ লাখ ৩৭ হাজার কোটি রুপি বরাদ্দের ঘোষণা দিয়েছেন ভারতের অর্থমন্ত্রী সীতারামণ।

কিন্তু বিগত নির্বাচনী বছরগুলোর মতো কৃষি ভোট ব্যাংককে আকৃষ্ট করার জন্য ভর্তুকির আশ্বাস দেননি অর্থমন্ত্রী। এর পরিবর্তে তিনি আগামী ২৫ বছরের জন্য মোদি সরকারের মূল অগ্রাধিকারগুলো তালিকাভুক্ত করেছেন এবং এর মধ্য দিয়ে মোদি সরকারের রাজনৈতিক স্থায়িত্বের প্রতি নিজের আস্থা প্রকাশ করেছেন।

ডিপ্লোম্যাট বলছে, ভারতের এবারের বাজেটে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে অবকাঠামোতে। সেই লক্ষ্যে সামগ্রিক মূলধন ব্যয়ের জন্য মোট ৭ লাখ ৫০ হাজার কোটি রুপি বরাদ্দ দিয়েছে সরকার, যা গত বছরের তুলনায় ৩৫ শতাংশের বেশি।

কিন্তু সমালোচনা ভিন্ন জায়গায়। কারণ, মোদি সরকারও তার পূর্বসূরিদের মতো পরিকাঠামোকে অগ্রাধিকার তালিকায় রেখেছে চাকরির সুযোগ সৃষ্টির দৃষ্টিকোণ থেকে। বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়েছিল গত বছর সীতারামণ মূল কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারী হিসেবে পরিকাঠামো খাতকে চিহ্নিত করার পর, যা মোদির অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে অন্যতম।

সম্প্রতি একই সুরে কথা বলেছেন মোদির প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা সঞ্জীব সান্যালও। পাবলিক সেক্টরের প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মসংস্থানের অভাব নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এমন অনেক ক্ষেত্র রয়েছে যেখানে সরকার কর্মসংস্থান সৃষ্টি করছে; এটি সরকারি চাকরি না-ও হতে পারে কিন্তু এটি সরকারি ব্যয় দ্বারা সৃষ্ট একটি চাকরি।’ কিন্তু চাকরির সুযোগ সৃষ্টির জন্য দীর্ঘ মেয়াদে অবকাঠামোতে নির্ভরশীলতা ফলপ্রসূ না-ও হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন অর্থনীতিবিদেরা।

কারণ, ইন্টারনেটের এই যুগে অনেক দেশই ডিজিটাল অর্থনীতি গড়ে তোলার চেষ্টা করছে, যা দীর্ঘ মেয়াদে টেকসই উপযোগ সৃষ্টি এবং সামাজিক গতিশীলতাকে এগিয়ে নিতে সহায়ক। যার জন্য প্রয়োজন শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও দক্ষ মানবসম্পদে বড় বিনিয়োগ। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে খাতগুলোকে উপেক্ষা করে আসছে মোদি সরকার।

বরং মহামারির প্রেক্ষাপটে বিজেপি সরকারের অগ্রাধিকারের জায়গাগুলো আরও বিস্ময়কর। দীর্ঘদিন ধরে স্কুল বন্ধ থাকার কারণে দেশটির লাখ লাখ শিশু স্কুল ছাড়তে বাধ্য হয়েছে বা দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। এ ছাড়া স্বাস্থ্যসেবা খরচ বেড়ে যাওয়া এবং চাকরি হারানোর কারণে নতুন করে প্রায় ২৩ কোটি ভারতীয় নাগরিক দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে গেছে।

মোদির আশা, পরিকাঠামোতে বেশি বিনিয়োগ বড় শহরগুলোতে ব্যক্তিগত বিনিয়োগকে উৎসাহিত করবে। পাশাপাশি ছোট শহর ও গ্রামগুলোতেও তা স্ব-কর্মসংস্থান এবং ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা গড়ে তুলতে সহায়ক হবে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সুশিক্ষিত ও দক্ষ জনশক্তি ছাড়া এ ধরনের কৌশল দীর্ঘ মেয়াদে টেকসই প্রমাণ হওয়ার সম্ভাবনা কম।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির কয়েক ঘণ্টা না যেতেই কাশ্মীরে বিস্ফোরণ!

বিশ্বে প্রথম পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে জড়ানোর পথে কি পরমাণু শক্তিধর দুই দেশ

লঞ্চের ওপর তরুণীকে প্রকাশ্যে পেটাচ্ছিলেন যুবক, ভিডিও ভাইরাল

ভারতের সেনাপ্রধানের ক্ষমতা বাড়াল কেন্দ্রীয় সরকার

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ, বিচার হবে ট্রাইব্যুনালে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত