Ajker Patrika

ছলচাতুরীতে কিংবদন্তি তিনি

আপডেট : ২৪ জুলাই ২০২২, ১০: ৩৯
ছলচাতুরীতে কিংবদন্তি তিনি

বিখ্যাত ক্রীড়াবিদদের আত্মজীবনী নিয়ে অসংখ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করা হয়েছে। সেসব চলচ্চিত্র তাঁদের আরও গভীরভাবে জানার সুযোগ করে দিয়েছে। কিন্তু ক্রীড়াজগতে নেতিবাচক ঘটনার জন্ম দিয়ে যাঁরা ‘কুখ্যাত’ হয়ে আছেন, তাঁদের নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণের আগ্রহ কজন প্রযোজক-পরিচালক-চিত্রনাট্যকার দেখিয়েছেন?

ক্রেইগ রবার্টস-সাইমন ফারনাবি-স্কট মারে আছেন এই তালিকায়। যাঁকে নিয়ে সম্প্রতি ‘দ্য ফ্যান্টম অব দ্য ওপেন’ চলচ্চিত্র নির্মাণ করে তাঁরা বিশ্বব্যাপী বাহবা কুড়াচ্ছেন, তিনি যে কুখ্যাতি দিয়েই কিংবদন্তি বনে গেছেন! ১৫ বছর আগে ওপারে পাড়ি জমানো মরিস ফ্লিটক্রফট আবার যেন পৃথিবীতে ফিরে এসেছেন।

ফ্লিটক্রফটকে বলা হয় গলফ ইতিহাসের সবচেয়ে বাজে খেলোয়াড়। ক্রীড়া ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ধোঁকাবাজও মনে করা হয় তাঁকে। ১৯৭৬ সালের ব্রিটিশ ওপেনে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে ১২১টি শট (অ্যাটেম্পট) নিতে হয়েছিল তাঁকে। স্বাভাবিকভাবেই এতবার সুযোগ পাওয়ার কথা নয় কোনো গলফারের। তবে ফ্লিটক্রফট নিয়েছিলেন প্রতারণার আশ্রয়। টুর্নামেন্টের আয়োজক দ্য রয়্যাল অ্যান্ড অ্যানসেন্ট গলফ ক্লাবের (সংক্ষেপে আর অ্যান্ড এ) সঙ্গে ইঁদুর-বিড়াল খেলা চলছিল তাঁর। ছদ্মবেশ ধারণ করে নাম বদলে বারবার বাছাইয়ে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। একটি-দুটি নয়; পাঁচটি ছদ্মনাম ছিল তাঁর।

আসল নামে ব্রিটিশ ওপেনের মূল পর্বে জায়গা করে নিতে ব্যর্থ হতেই বেশভূষা পাল্টে জিনি পাচেকি পরিচয়ে ফের অংশ নেন। এরপর জেরাল্ড হোপি, জেমস বিউ জোলি, আরনল্ড পামট্রি ছদ্মনামে খেলেন। শেষমেশ কাউন্ট ম্যানফ্রেড ভন হফমেন্সটাল নাম ধারণ করে সফল হন।

প্রতারণা করে ব্রিটিশ ওপেন খেলে রাতারাতি তারকা বনে যান ফ্লিটক্রফট। তাঁর ‘হাইপ’ এতটাই বেড়ে যায় যে আইটিভির সে সময়কার জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ‘গুড মর্নিং ব্রিটেন’-এ অতিথি করে আনা হয়। তাঁর সম্মানে যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান অঙ্গরাজ্যের ব্লাইদিফিল্ড কান্ট্রি ক্লাব ভোজসভার আয়োজন করে। আশির দশকের শেষ দিকে ক্লাবটি তাঁকে আমন্ত্রণও জানায়। কিন্তু তাঁর খেলা দেখে হতাশ হতে হয় উপস্থিত দর্শকদের। বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ে ক্লাবটিও। ফ্লিটক্রফটের ছলচাতুরী বুঝতে পারে তারাও। তাঁকে দেখার পর ক্লাবের পেশাদার গলফার বাডি হোয়াইটেনের প্রতিক্রিয়া সেটিরই জানান দেয়, ‘আমরা একটু বেশিই ভেবেছিলাম। আসলে ওকে আনাড়ি গলফার বলাই জুতসই হবে।’

অথচ ম্যানচেস্টারের জন্ম নেওয়া ফ্লিটক্রফটের ৪৫ বছর বয়সের আগেও গলফ নিয়ে বিন্দুমাত্র আগ্রহ ছিল না। তিনি মূলত ছিলেন কপিকল চালক ও আইসক্রিম বিক্রেতা। অভিনয়ের সঙ্গেও সম্পৃক্ত ছিলেন। মৃত্যুর আগে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ফ্লিটক্রফট বলে গেছেন, ‘১৯৭৪ সালের শরতে আমি গলফের প্রেমে পড়ি। খেলাটিকে ভালোবেসেছিলাম। তাই বড় টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলাম।’

ফ্লিটক্রফটের ক্যাডি (গলফের সরঞ্জাম বহনকারী) ছিলেন তাঁর ছেলে জিন। তাঁকে সব সময় কাছ থেকে দেখেছেন জিনই। বাবা প্রতারণা করলেও তাঁকে নিয়ে আজও গর্বিত তিনি, ‘বাবা ছিলেন গলফের সত্যিকারের চরিত্র। খেলাটিকে খুব ভালোবাসতেন। এভাবেই তিনি ভীষণ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশসহ এশিয়ার ৫ দেশে সফর বাতিল করলেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী মেলোনি

স্ত্রীকে হতে হবে নোরা ফাতেহির মতো, না খাইয়ে রেখে তিন ঘণ্টা করে ব্যায়াম করান স্বামী

বাংলা বলায় কলকাতার মার্কেটে ছুরি, বন্দুকের বাঁট ও হকিস্টিক নিয়ে ছাত্রদের ওপর হামলা

ঢাকা কলেজের বাস ভাঙচুর, আবারও শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, পুলিশের টিয়ার শেল-সাউন্ড গ্রেনেড

২০২৬ সালের পাঠ্যবইয়ে শেখ হাসিনার নামের আগে গণহত্যাকারী, ফেসবুকে আসিফ মাহমুদ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত