Ajker Patrika

বিশ্বকাপের দল কতটা গোছাল বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
বিশ্বকাপের দল কতটা গোছাল বাংলাদেশ

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন একাধিকবার বলেছেন, আগামী সেপ্টেম্বরে এশিয়া কাপে যে দল খেলবে, সেটাই হবে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ দল। আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ শেষে এবার চোখ তাই বড় দুটি টুর্নামেন্টে।

সিলেটে আফগানদের বিপক্ষে সিরিজের পরদিনই মিরপুরে বিশ্বকাপের একটা আবহ বেশ ফুটে উঠল। সিলেটে গত পরশু রাতে আফগানিস্তানকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। গতকাল দুপুরেই মিরপুরে চলে এলেন কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। বিশ্বকাপ, এশিয়া কাপ—দুই টুর্নামেন্টের মধ্যে নিউজিল্যান্ড সিরিজ সামনে রেখে নির্বাচকদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ একটা আলোচনাও সেরে ফেললেন তিনি। যেখানে বিশ্বকাপের স্কোয়াড নিয়ে একটা রূপরেখা তৈরি করে ফেলেছেন তাঁরা।

বিশ্বকাপ সামনে রেখে ২৭-২৮ জনের স্কোয়াড নিয়ে ২৯ জুলাই শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ দলের কন্ডিশনিং ক্যাম্প। ২২ জুলাইয়ের মধ্যে মূল স্কোয়াড ঘোষণা করবে নির্বাচক প্যানেল। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু গতকাল বলেছেন, ‘প্রতিটি পজিশনে যেন দুজন খেলোয়াড় থাকে, ওভাবেই চিন্তা করে এগোচ্ছি আমরা।’

মূল দল পেতে খেলোয়াড়দের পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজটিই সম্ভবত শেষ। বড় মঞ্চে যাওয়ার আগে বাংলাদেশ কতটা পেরেছে দল গোছাতে, সেটিই এখন প্রশ্ন।

ওপেনিং নিয়ে চিন্তা
উদ্বোধনী জুটিতে এক প্রান্তে লিটন দাসকে নিয়ে কোনো চিন্তা নেই। কিন্তু চিন্তা অন্য প্রান্ত নিয়ে। চিন্তাটা আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন তামিম ইকবাল। ১৬ বছর ধরে ওপেনিংয়ের এক প্রান্ত ধরে রাখা তামিমের ফর্ম ও ফিটনেস—সবকিছুই বিপক্ষে এখন। কদিন আগে তাঁর আকস্মিক অবসর নিয়েও কম জল ঘোলা হয়নি। মানসিক ও শারীরিকভাবে খুব একটা সুবিধাজনক অবস্থানে নেই তিনি। এ মুহূর্তে ছুটিতে থাকা তামিমকে নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে। তাঁর বিকল্প হিসেবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলা মোহাম্মদ নাঈম ও রনি তালুকদার আস্থার প্রতিদান দিতে পারেননি। ওপেনিং নিয়ে তাই নির্ভার থাকার সুযোগ নেই নির্বাচকদের।

ভরসা মিডল অর্ডারে
তবে এই মুহূর্তে তিন সংস্করণে দলের সেরা ব্যাটার নাজমুল হোসেন শান্তকে নিয়ে চিন্তার তেমন কিছু নেই। ৩ নম্বর পজিশনে তাঁর ওপরই আস্থা রাখবে টিম ম্যানেজমেন্ট। সাকিব আল হাসানকে নিয়ে বলার কিছু নেই। এই বিশ্বকাপেও বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের মেরুদণ্ড হবেন তিনি। ৪ নম্বর পজিশনের দায়িত্ব সাকিবকেই দেবেন হাথুরু। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী তাওহীদ হৃদয়ের দ্রুতই নিজের জাত চিনিয়েছেন। ৫ নম্বরের আস্থা হতে পারেন তিনি।

সাতে কে
ম্যাচ ফিনিশিংয়ে কিংবা দ্রুত উইকেট পড়ে গেলে ‘মি. ডিপেন্ডেবল’ মুশফিকুর রহিমের বিকল্প নেই। গত ছয় মাসে ছয়ে নিজেকে দ্রুত মানিয়েও নিয়েছেন। তবে ৭ নম্বর পজিশন নিয়ে আছে প্রশ্ন। এখানে আফিফ হোসেন, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, সৌম্য সরকারসহ আরও কয়েকটি নাম আছে আলোচনায়। এই পজিশনের পরীক্ষায় আফিফ সুবিধা করতে পারেননি। সৌম্যর পরীক্ষা চলছে ইমার্জিং এশিয়া কাপে। মেহেদী হাসান মিরাজই কি ৭ নম্বরের ভরসা নাকি তিনি আটে খেলবেন নিয়মিত, এ প্রশ্নের উত্তর পেতে হবে দ্রুতই।

আশার নাম পেস আক্রমণ
বিশ্বকাপে হাই স্কোরিং উইকেটে প্রতিপক্ষের ব্যাটারদের চ্যালেঞ্জ জানাতে পেস বোলিংয়ের ভালো করতেই হবে। এখানে আশা দিচ্ছে তাসকিন আহমেদ, শরীফুল ইসলাম, ইবাদত হোসেন, হাসান মাহমুদরা। তবে মোস্তাফিজুর রহমানের ছন্দ ওঠানামাটা ভাবাতে পারে।

মনে রাখতে হবে, বড় মঞ্চে ফিজের উইকেটশিকারের অভ্যাস আছে। ভারতেই হওয়া ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ কিংবা ইংল্যান্ডে হওয়া ২০১৯ বিশ্বকাপে বাঁহাতি পেসার শীর্ষ উইকেটশিকারির তালিকায় ছিলেন। যদি বাংলাদেশ চার পেসার নিয়ে খেলতে যায় বিশ্বকাপ, জায়গা পেতে শরীফুল ও ইবাদতের মধ্যে ভালো লড়াই হবে। পাঁচ পেসার নিয়ে গেলে দুজনই হয়তো থাকতে পারেন। পেসারদের তুলনায় স্পিনারদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা কিছুটা কম। সাকিব-মিরাজ তো থাকছেনই। তৃতীয় স্পিনার কে হন, সেটাই দেখার।

নান্নু জানালেন, কন্ডিশনিং ক্যাম্পের পরই বিশ্বকাপের স্কোয়াড নিয়ে তাঁরা চিন্তা করবেন। প্রধান নির্বাচক বললেন, ‘আমাদের এখন মনোযোগ ফিটনেস ক্যাম্প নিয়ে। ফিটনেস ক্যাম্পের পরেই এশিয়া কাপ, নিউজিল্যান্ড সিরিজ ও বিশ্বকাপের দল নিয়ে ভাবতে 
শুরু করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত