Ajker Patrika

‘এক সাগর রক্তের বিনিময়ে...’

গোবিন্দ হালদার
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২১, ১১: ১১
‘এক সাগর রক্তের বিনিময়ে...’

মুক্তিযুদ্ধের সময় গোবিন্দ হালদারের বয়স ছিল ৪০ বছর। আয়কর দপ্তরের একজন কর্মচারী ছিলেন তিনি। কাজের ফাঁকে ফাঁকে কবিতা আর গান লিখতেন। তাঁর কিছু গান প্রচার হতো আকাশবাণী কলকাতায়।

মুক্তিযুদ্ধের সময় যখন তিনি শুনলেন লাখো মানুষ জীবন বাঁচাতে ছুটে আসছে কলকাতায়, শুনলেন পাকিস্তানি বাহিনী যেখানে যাচ্ছে, সেখানেই যাকে পাচ্ছে, তাকেই হত্যা করছে, তখন আর বসে থাকতে পারলেন না। মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে কী লিখবেন, সে কথা ভাবতে থাকলেন গোবিন্দ হালদার এবং তারপর একটি খাতা টেনে নিয়ে লিখে ফেললেন একের পর এক ১৫টি গান।

কীভাবে এই গান স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে গিয়ে পৌঁছাল, তার রয়েছে ইতিহাস। গোবিন্দ হালদারের বন্ধু ছিলেন কামাল আহমেদ। তিনি ছিলেন কমার্শিয়াল আর্টিস্ট। কলকাতা পার্ক সার্কাস এলাকায় ঝাউতলা রোডে থাকতেন তিনি। তাঁর স্ত্রী ঢাকা বেতারে উর্দু বিভাগে কাজ করতেন।

সেই কামাল আহমেদ একদিন গোবিন্দ হালদারকে বললেন, ‘তুমি গান লেখো, আমি তা স্বাধীন বাংলা বেতারে প্রচার করার ব্যবস্থা করে দেব।’ বন্ধুর অনুপ্রেরণায় লাইনটানা খাতায় সেই ১৫টি গান লিখে ফেললেন গোবিন্দ হালদার। সেই গান নিয়ে স্বাধীন বাংলা বেতারের অন্যতম কর্ণধার কামাল লোহানীর কাছে গেলেন তাঁরা! তাঁর হাতেই তুলে দেওয়া হয় গানের খাতাটি। তারপর একদিন তিনি শুনতে পান, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে ভেসে আসছে তাঁর লেখা ‘পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে, রক্ত লাল...’ গানটি। এ গানটি ছাড়াও গোবিন্দ হালদার লিখেছিলেন ‘এক সাগর রক্তের বিনিময়ে...’, ‘লেফট রাইট লেফট রাইট...’, ‘পদ্মা-মেঘনা-যমুনা...’ ইত্যাদি গান। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে তাঁর মোট সাতটি গান প্রচারিত হয়েছিল।

স্বাধীনতার পর ২৩ অথবা ২৪ ডিসেম্বর স্বপ্না রায়ের কণ্ঠে প্রচারিত হয়েছিল ‘এক সাগর রক্তের বিনিময়ে...’ গানটি, যা গোবিন্দ হালদারকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের সঙ্গে অমর করে রেখেছে।

 

সূত্র: অমর সাহা, এক সাগর রক্তের বিনিময়ে

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত