Ajker Patrika

একজন চিকিৎসক

সম্পাদকীয়
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২১, ০৭: ১৩
একজন চিকিৎসক

জন্ম তাঁর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলার বসিরহাটে। গ্রামের নাম চণ্ডীপুর। বাবা আবদুল মান্নান আল আজহারীকে কলকাতার ক্যাম্পবেল স্কুলের ক্লাস ফোরের ছাত্র থাকাকালে স্কুল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল। কারণ ছিল ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে শরিক হওয়া। তাঁরই ছেলে মোহাম্মদ মোর্তজা। মোর্তজার যখন দুই মাস বয়স, তখনই তাঁর বাবা দেশ ছাড়তে বাধ্য হন। চলে যান মিসরে। মিসরের কায়রোতে আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর করেন। অল্প বয়সেই মা সায়রা বেগমকেও হারান।

বালিগঞ্জ সরকারি উচ্চবিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে মেধাতালিকায় স্থান করে নেন। কলকাতা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাবিজ্ঞানে পড়েছেন। ১৯৫০ সালে দাঙ্গা শুরু হলে একখানা চিঠি হাতে তিনি ঢাকায় চলে আসেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন তৃতীয়বর্ষে। এখানে এসে পড়াশোনার পাশাপাশি সাহিত্য, দর্শন, ইতিহাস, রাজনীতি নিয়েও আগ্রহী হয়ে ওঠেন। ১৯৫১ সালে লিখেছিলেন, ‘কবিতা আমার জন্মগত আর চিকিৎসা আমার অবস্থানগত’। বামপন্থাকেই বেছে নিয়েছিলেন জীবনের ব্রত হিসেবে।

সেবাদানের জন্যই চিকিৎসক হয়েছিলেন তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল অফিসারের চাকরি নিয়েছিলেন নিরিবিলিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমৃদ্ধ পাঠাগার ব্যবহার করতে পারবেন বলে। ১৯৬৭ সালে যখন বিয়ে করেন সাঈদাকে, তখন অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী নিজেই গাড়ি চালিয়ে নিয়ে এসেছিলেন বরকে। বিয়ের রাতে তিনি স্ত্রীকে বলেছিলেন, শোষণমুক্ত সমাজ গড়তে তিনি অঙ্গীকারবদ্ধ।

১৯৭১ সালে যুদ্ধ শুরু হলে ফুলার রোডের বাড়ি থেকে চলে গিয়েছিলেন গ্রিন রোডে সাঈদার ভাইয়ের বাড়িতে। ফিরেও এসেছিলেন। একাত্তরের মাঝামাঝি সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষককে ধরে নিয়ে গিয়েছিল পাকিস্তানি বাহিনী। তাঁরা ফিরেও আসেন। তাই বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাকে আর অনিরাপদ ভাবেননি। কিন্তু ১৪ ডিসেম্বর কাদালেপা মাইক্রোবাসটা এল। অস্ত্রধারীরা স্ত্রী ও কন্যার কাপড় দিয়ে চোখ বাঁধল মোহাম্মদ মোর্তজার। তাঁকে নিয়ে বেরিয়ে গেল। ১৮ ডিসেম্বর পাওয়া গেল তাঁর গলিত লাশ।

সূত্র: গুণীজনডটওআরজিডটবিডি

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত