Ajker Patrika

খাবারে চেতনানাশক মিশিয়ে চুরি, রাত জেগে পাহারা

তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি
খাবারে চেতনানাশক মিশিয়ে চুরি, রাত জেগে পাহারা

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় চুরি বেড়েছে। কৌশলে বাড়িতে ঢুকে খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক মিশিয়ে লুট করা হচ্ছে টাকা, গয়নাসহ মূল্যবান সামগ্রী। এতে নিরাপত্তার স্বার্থে রাত জেগে বাড়ি পাহারা দিচ্ছেন পরিবারের লোকজন।

জানা গেছে, তেঁতুলিয়া উপজেলার ভজনপুর ও দেবনগড় ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক মিশিয়ে টাকা, গয়না, জমির দলিল, গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ও আসবাবপত্র চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে চক্রটি। চক্রের অনেক সদস্য পুলিশের কাছে গ্রেপ্তার হলেও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের তৎপরতায় তাঁদের জামিন করে নেওয়া হচ্ছে।

ভুক্তভোগীরা জানান, যে চক্রটি চুরির ঘটনা ঘটাচ্ছে, তাঁরা স্থানীয় মাদকাসক্ত যুবক, তাঁদের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলাও রয়েছে। এর মধ্যে দুয়েকজন পালাতকও। চক্রটি তাঁদের স্থানীয় সহযোগীদের মাধ্যমে কোন বাড়িতে চুরি করবে, তা নিশ্চিত হয়ে কৌশলে ওই বাড়িতে প্রবেশ করে।

এরপর রান্নাঘরের চা, চিনি, হলুদ, মরিচ গুঁড়া, পানি, লবণসহ বিভিন্ন মসলার সঙ্গে চেতনানাশক মিশিয়ে দিয়ে রাখে। পরে ওইসব উপকরণ দিয়ে রান্না করার পর পরিবারের সদস্যরা রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লে এতে কয়েক ঘণ্টা অচেতন হয়ে থাকে।

এ সুযোগে রাতের আঁধারে ওই বাড়িতে প্রবেশ করে টাকা-পয়সা, গয়না, দলিলপত্রসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র চুরি করে নিয়ে যায় চোর চক্র।

সম্প্রতি চুরির শিকার হয়েছে তেঁতুলিয়া উপজেলার ভজনপুর ইউনিয়নের গোলাপব্দীগছ এলাকার বাসিন্দা শরিফুল ইসলাম ও তাঁর ভাই বকুল হোসেন, একই ইউনিয়নের ভদ্রেশ্বর এলাকার রবিউল ইসলাম, শান্তিনগর এলাকার গ্রাম চৌকিদার সেকেন্দার, নয়াবাড়ী এলাকার ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম, দেবনগড় ইউনিয়নের আমজুয়ানী এলাকার ব্যবসায়ী ইসহাক আলী, শেখগছ এলাকার হাইয়ুল ইসলাম। এক-দেড় বছরে উপজেলায় চুরির ঘটনা ঘটেছে অর্ধশতাধিক বাড়িতে। 

শরিফুল ইসলাম ও বকুল ইসলাম বলেন, কয়েকদিন আগে আমাদের বাড়িতে মলম পার্টি প্রবেশ করে। রাতে চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে আমাদের আলমারির তালা ভেঙে টাকা-পয়সা, সোনা-গয়না ও জমির দলিলপত্র চুরি করে নিয়ে গেছে। এ কারণে রাত জেগে বাড়ি পাহারা দিতে হয়।

ভদ্রেশ্বর এলাকার ভুক্তভোগী বাসিন্দা রবিউল ইসলাম বলেন, ‘আমার বাড়িতে কৌশলে খাবারে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে রাখে চক্রটি। পরে রাতের খাবার খেয়ে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ঘুমিয়ে পড়লে আলমারি ভেঙে ১৫ লাখ টাকা নিয়ে যায় মলম পার্টি।

ভজনপুর ইউনিয়নের গ্রাম চৌকিদার সেকেন্দার আলী বলেন, ‘আমি সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার জন্য কাজ করি অথচ আমার বাড়িতে চুরি হয়েছে। আমার বাড়িতে মলম পার্টি ঢুকে তালা ভেঙে টাকা-পয়সা নিয়ে গেছে। কয়েকদিন পরপর এমন ঘটনা ঘটছে।’

ভজনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মসলিম উদ্দিন বলেন, ‘চুরিসহ বিভিন্ন অসামাজিক কাজের বিরুদ্ধে একাধিকবার অভিযান চালিয়েছি। অভিযানের পর এসব কাজ অনেকটা কমে গেছে। তবে যাঁরা মাদকাসক্ত তাঁরাই মূলত বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটাচ্ছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

পিটুনিতে নিহত সেই শামীম মোল্লাকে বহিষ্কার করল জাবি প্রশাসন, সমালোচনার ঝড়

চিন্ময় দাসের জামিন স্থগিতের আবেদন, শুনানি রোববার

মধুপুরে বিদ্যালয়ে ঢুকে শিক্ষককে জুতাপেটা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত