Ajker Patrika

চিকিৎসা ও মুক্তিযুদ্ধ

আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২১, ১২: ১৪
চিকিৎসা ও মুক্তিযুদ্ধ

১৯৭০ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন সেতারা বেগম। পেশায় চিকিৎসক তিনি। পোস্টিং হয়েছিল কুমিল্লা সেনানিবাসে। ভাই মেজর হায়দার আগে থেকেই পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন।

১৯৭১ সালের মার্চ মাসে যখন যুদ্ধ শুরু হয়ে গেল, তখন তিনি ছুটিতে কিশোরগঞ্জে ছিলেন। কুমিল্লা কম্বাইন্ড মেডিকেল হাসপাতাল বা সিএমএইচ থেকে টেলিগ্রাম করে তাঁকে সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার কথা বলা হলো। কিন্তু সেতারা বেগম নানাভাবে সেই প্রস্তাব এড়িয়ে গেলেন।

এর মধ্যে একদিন মেজর হায়দার আসেন মেজর নাসিম ও ভারতের একজন সেনা কর্মকর্তাকে নিয়ে। ময়মনসিংহ আর কিশোরগঞ্জের মধ্যে একটি ব্রিজ বোমা মেরে উড়িয়ে দেওয়ার জন্য। কিন্তু পরদিন থেকেই সে এলাকায় পাকিস্তানিদের বোমারু বিমান উড়তে শুরু করে। সেতারা বেগমের মনে হলো, যেহেতু ভাই আর তিনি সেনাবাহিনীর লোক, তাই তাঁদের খোঁজে পাকিস্তানিরা আসতে পারে। তখনই এখান থেকে চলে যাওয়ার কথা ভাবছিলেন।

জুলাই মাসে সেতারা বেগম ও তাঁর পরিবার একটি চিঠি পান। সেই চিঠির সঙ্গে ছিল একটি পিস্তল। চিঠি পাঠিয়েছিলেন সেতারা বেগমের বড় ভাই মেজর হায়দার। তিনি বলছিলেন, সেতারা বেগম যেন দেশ ছেড়ে অন্য কোথাও চলে যান। আর পথে ধরা পড়লে এই পিস্তল দিয়ে যেন আত্মহত্যা করেন।

সেতারা বেগম ভাইয়ের পরামর্শ অনুযায়ী গুজাদিয়া ঘাট থেকে একটি নৌকায় করে সিলেট সীমান্ত দিয়ে ভারতের টেকেরঘাটে পৌঁছান। সেখান থেকে ভারতের মেলাঘরে যান। সেখানে ছিল বাংলাদেশ হাসপাতাল। সেটি ছিল একটি টিনের ঘর। আহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা করার জন্যই ছিল এই হাসপাতাল। সেখানে কমান্ডিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পান। যুক্তরাজ্য থেকে বেশ কিছুসংখ্যক চিকিৎসকও এসে সেই হাসপাতালে যোগ দেন। ৪০০ শয্যার এই হাসপাতালে মুক্তিবাহিনীর আহত সদস্যদের চিকিৎসা দেন সেতারা বেগম।

দিনের পর দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে মুক্তিযোদ্ধাদের আবার ফ্রন্টে পাঠানোর মতো সুস্থ করে তোলেন। তিনি বীর প্রতীক পদকে ভূষিত হয়েছেন।

সূত্র: ডয়চে ভেলে

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত