Ajker Patrika

‘আগুন নিয়ে না খেলার’ হুঁশিয়ারি চীনের

আজকের পত্রিকা ডেস্ক
আপডেট : ১৭ নভেম্বর ২০২১, ১৪: ৪২
‘আগুন নিয়ে না খেলার’ হুঁশিয়ারি চীনের

স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোয় সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়ে যাওয়া বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনের আলোচনায় জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় দুই পরাশক্তি চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের এক যৌথ ঘোষণা চমকে দিয়েছিল সবাইকে। তবে অন্যান্য ইস্যুতে দেশ দুটির মধ্যকার ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা তাদের মতপার্থক্যকে দাঁড় করিয়েছে তীব্র এক অস্বস্তির জায়গায়। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই পারস্পরিক তিক্ততা দূর করতে গতকাল যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ভার্চুয়াল বৈঠকে মিলিত হলেও উত্তাপ ছড়িয়েছে তাঁদের আলোচনা। বিশেষ করে তাইওয়ান ইস্যুতে দুই মেরুতে অবস্থান নিয়েছে উভয় পক্ষ।

গতকাল অনুষ্ঠিত এই ভার্চুয়াল বৈঠকে সি চিন পিং বাইডেনকে সতর্ক করে বলেছেন, ‘তাইওয়ানের স্বাধীনতাকে উৎসাহিত করা হবে আগুন নিয়ে খেলা।’

বিবিসি বলছে, গত জানুয়ারিতে বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এটি ছিল চীনের সঙ্গে তাঁর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা। বৈঠকে ব্যক্তিগত সম্পর্ক উন্নয়ন এবং দুই দেশের মধ্যকার উত্তেজনা কমানোর ওপর জোর দিয়েছে উভয় পক্ষই। তবে সবচেয়ে সংবেদনশীল তাইওয়ান ইস্যুতে উত্তেজনা এড়াতে পারেননি সি-বাইডেন।

তাইওয়ান নিজেকে একটি স্বাধীন দেশ বলে মনে করলও চীন তাদের দেখে নিজেদের একটি বিদ্রোহী প্রদেশ হিসেবে। এমনকি তাইওয়ানকে চীনের ‘মূলভূমির’ সঙ্গে পুনরায় যুক্ত করতে শক্তি প্রয়োগের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেয়নি চীন। অন্যদিকে চীনের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক থাকলেও সম্প্রতি বেইজিংয়ের আগ্রাসন থেকে তাইওয়ানকে রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

ওয়াশিংটনের এমন অবস্থান নিয়ে সি বলেছেন, ‘আগুন নিয়ে খেলার মতো এ ধরনের পদক্ষেপ অত্যন্ত বিপজ্জনক হবে। আর যে এই আগুন নিয়ে খেলবে সে পুড়ে যাবে,’ খবর চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমসের। তবে এর প্রতিক্রিয়ায় তাইওয়ান প্রণালিজুড়ে শান্তি ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করার ‘একতরফা প্রচেষ্টার’ তীব্র বিরোধিতা করেছেন বাইডেন।

এদিকে তাইওয়ান ইস্যুতে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হলেও বৈঠকের শুরুতেই একে অপরকে উষ্ণ অভিবাদন জানান সি ও বাইডেন। এ সময় ‘পুরোনো বন্ধু’ বাইডেনকে দেখে খুশি হওয়ার কথা উল্লেখ করে চীনা প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমরা সব সময়ই একে অপরের সঙ্গে খুব সৎ। অন্যদের কথায় কখনোই আমাদের মাঝে দূরত্ব সৃষ্টি হয়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগ আরও বাড়াতে হবে এবং একসঙ্গে সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।’

এটি অজানা নয় যে, গুরুত্বপূর্ণ অনেক বিষয়েই বিশ্বের এই দুই পরাশক্তির মধ্যে মতানৈক্য রয়েছে। এর জেরে হংকং এবং জিনজিয়াংয়ের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে উইঘুরদের বিরুদ্ধে চীনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগের বিষয়টি বৈঠকে উত্থাপন করেছেন বাইডেন।

বাণিজ্যের বিষয়ে তিনি ‘মার্কিন শ্রমিক ও শিল্পকে চীনের অন্যায্য বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক অনুশীলন থেকে রক্ষা করার প্রয়োজনীয়তাও তুলে ধরেছেন। সি চিন পিংও এ বিষয়ে জোরালো মন্তব্য করেছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। তিনি বাইডেনকে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের উচিত, ‘চীনা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিপীড়নের জন্য জাতীয় সুরক্ষার ধারণার অপব্যবহার বন্ধ করা।’ দ্বিপক্ষীয় এ বৈঠকে আলোচনা হয়েছে জলবায়ু ইস্যু নিয়েও।

বাইডেনের অভিষেকের পর এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো কথা বললেন দুই বিশ্ব নেতা। সি-বাইডেনের বৈঠক স্থায়ী হয় প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা, যা ছিল প্রত্যাশার চেয়েও বেশি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

যুদ্ধের পর এ যেন এক নতুন ইরান, জনগণের মতো বদলে গেছে সরকারও

তেহরান ওপর থেকে সুন্দর, একদিন যেতে চাই: ইরানে বোমা ফেলা ইসরায়েলি পাইলট

ইরানের পরমাণু কর্মসূচিতে ৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের কথা ভাবছেন ট্রাম্প

সাইপ্রাসে বিপুল জমি কিনছে ইসরায়েলিরা, দেশ বেদখলের শঙ্কা রাজনীতিবিদদের

বংশরক্ষায় মৃত ছেলের শুক্রাণু চান মা, সংরক্ষণের নির্দেশ মুম্বাই হাইকোর্টের

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত