Ajker Patrika

নদীর মাটি যাচ্ছে ইটভাটায়

রুদ্র রুহান, বরগুনা
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২১, ১১: ৫২
নদীর মাটি যাচ্ছে ইটভাটায়

বরগুনার বিষখালী নদীতীর থেকে মাটি কেটে ইটভাটায় ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের ডালভাঙা এলাকার আবু জাফরের মালিকানাধীন একটি ভাটায় ওই মাটি ইট তৈরিতে ব্যবহার করা হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রভাবশালী ভাটামালিক মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছেন। এতে ভাঙনকবলিত এলাকা আরও হুমকির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা এলাকাবাসীর।

বরগুনার ঢলুয়া ইউনিয়নের ডালভাঙা মাঝখালী এলাকায় জাফরের মালিকানাধীন ইটভাটায় সরেজমিন দেখা যায়, বিষখালী তীর থেকে খননযন্ত্র (ভেকু) ব্যবহার করে মাটি কেটে তীরে বিশাল স্তূপ করে রাখা হয়। মাটি কাটার ফলে বিষখালী তীর ধরে পশ্চিম দিকে বিভিন্ন স্থানে গভীর খাদের সৃষ্টি হয়েছে। ভাটায় কাজ করছেন এমন কয়েকজন শ্রমিক জানান, মাটি কাটার জন্য চট্টগ্রাম থেকে একটি পন্টুন ভাড়া করে আনা হয়েছে। পন্টুনে ভেকু বসিয়ে বিভিন্ন স্থান থেকে মাটি কেটে ভাটায় আনা হয়।

সরেজমিন আরও দেখা যায়, ইটভাটা থেকে আধা কিলোমিটার পশ্চিম দিকে ডালভাঙা মাধ্যমিক বিদ্যালয় এলাকায় খননযন্ত্র নিয়ে মাটিভর্তি পন্টুনটি নোঙর করে রাখা হয়েছে। খননযন্ত্রের চালক সুজন মিয়া দাবি করেন, মাটি নদীতীর থেকে কাটা হয়নি। ওই মাটি মালিকদের কাছ থেকে কিনে কেটে আনা হয়েছে।

এলাকার বাসিন্দা স্কুলশিক্ষক মো. রেজাউল করিম বলেন, এক সপ্তাহ ধরে ভেকু দিয়ে নদীতীরের মাটি কেটে নিচ্ছেন ভাটার লোকজন। বাধা দিলে উল্টো হুমকি দেওয়া হয়।

ডালভাঙা এলাকার বাসিন্দা ফরহাদ হাওলাদার বলেন, ‘বিষখালী নদীর ভাঙনে আমাদের এলাকা প্রায় বিলীন। এখানে বেড়িবাঁধও নেই, এমনিতেই আমরা সব সময় আতঙ্কে থাকি। এই অবস্থায় তীরের মাটি কেটে নেওয়া আমাদের জন্য বিপজ্জনক। কিন্তু কে কার কথা শোনে।’

বরইতলা মাঝখালী এলাকার বাসিন্দা সবুজ হাওলাদার বলেন, ‘নদীতীরের মাটি তো কাটছেই, এর পাশাপাশি ভারী যানবাহনে করে ইট পরিবহন করায় আমাদের একমাত্র চলাচলের মাটির রাস্তাটিরও সর্বনাশ করা হয়েছে। মাত্র কয়েক মাস আগে পানি উন্নয়ন বোর্ড বেড়িবাঁধের মাটির কাজ করেছে। মাটি শক্ত হওয়ার আগেই ভারী যানবাহন চলায় দেবে গিয়ে এখন হাঁটার অনুপযোগী।’

ভাটার মালিক আবু জাফর বলেন, ‘ডালভাঙা এলাকার একটি পরিত্যক্ত ইটভাটার মাটি কিনেছি। ওই মাটি কেটে আনার জন্য পন্টুন ও ভেকু ভাড়া করা হয়েছে। পন্টুনের মাটি নদীতীরের নয়।’ তিনি দাবি করেন, নদীতীর থেকে কোনো মাটি কাটা হয়নি এবং হবে না।

বরগুনার জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘নদীতীর থেকে মাটি কাটার কোনো নিয়ম নেই। ভাটায় মাটি কেটে ব্যবহার করা বিধিসম্মত নয়। আমরা এর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত