এ কে এম শামসুদ্দিন
পাকিস্তানের রাজনীতি এখন একটি সংকটের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হচ্ছে। ইমরান খানের গ্রেপ্তার ও তারপর আদালতের মাধ্যমে জামিন পাওয়ার সময় পর্যন্ত এক জটিল পরিস্থিতি অতিক্রম করেছে পাকিস্তান। ইমরানের আটক থাকাকালে যে সহিংস ঘটনা ঘটেছে তা ছিল পাকিস্তানের ইতিহাসে এক অভূতপূর্ব ঘটনা। ইমরান খানের মুক্তির পর থেকে তাঁর দল পিটিআইকে শিক্ষা দিতে পাকিস্তান সরকার ও সেনাবাহিনী এক জোট বেঁধেছে। পাকিস্তানের সেনাবাহিনীপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির ও প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ যেন আটঘাট বেঁধেই ইমরান খানের পেছনে লেগেছেন। এই সহিংস ঘটনার জের ধরেই ইমরানের দল পিটিআইয়ের গুরুত্বপূর্ণ প্রায় সব নেতাকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের পর জামিনে মুক্তি পেয়ে জেলগেট পেরোতে না পেরোতেই আবার তাঁদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। পাঞ্জাব ও খাইবার পাখতুনখাওয়ায় দাঙ্গা ও আগুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া পিটিআইয়ের ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মাহমুদ কুরেশি এবং পিটিআইয়ের আরেক নেত্রী মুসারাত জামশেদ চিমাওকে কারামুক্তির কয়েক মিনিটের মধ্যে আবারও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জেলের বাইরে গ্রেপ্তার হওয়ার আগে কুরেশি সাংবাদিকদের বলেছিলেন, তিনি এখনো পিটিআইয়ে আছেন এবং ভবিষ্যতেও থাকবেন।
কুরেশি ও মুসারাত জামশেদ ছাড়াও পিটিআইয়ের আরেক গুরুত্বপূর্ণ নেতা ও দলটির মহাসচিব আসাদ ওমরকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সম্প্রতি নিজের টুইটারে এক পোস্টে ইমরান লিখেছেন, ‘প্রায় সাত হাজার পিটিআই-সমর্থককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই সহিংস ঘটনার নেপথ্যে কে বা কারা রয়েছে, তা তদন্ত না করেই আমাদের সমর্থক, নেতৃত্ব এবং নারীদের জেলে ঢোকানো হয়েছে। আমাদের দলকে নিষিদ্ধ করার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।’ ইমরানের দল পিটিআইকে নিষিদ্ধ করার যে প্রচেষ্টা চলছে, তা দেশটির সরকারের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা আসিফও বলেছেন। তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, ইমরানের দল পিটিআইকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে চিন্তাভাবনা চলছে।
পাকিস্তানের ভিতে আঘাত করেছে পিটিআই। আসিফ এখানে পাকিস্তানের ভিত বলতে সেনাবাহিনীকেই বুঝিয়েছেন। তিনি আরও বলেছেন, এর আগে এমন ঘটনা কখনো ঘটেনি। এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এ কথা ঠিক, ইমরানকে গ্রেপ্তারের পর তাঁর সমর্থকেরা প্রতিবাদে যেভাবে ফেটে পড়েছিলেন, পাকিস্তানের সাম্প্রতিক ইতিহাসে এর কোনো নজির নেই। পিটিআইয়ের সমর্থকেরা এমনভাবে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছিলেন যে দেশের বিভিন্ন শহরে ১৪৪ ধারা জারি করেও ওই বিক্ষোভ ঠেকানো যাচ্ছিল না।
পিটিআইয়ের কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর মুহুর্মুহু সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। ৯ মে ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের পরপরই দেশ অচল করে দেওয়ার ডাক দিয়েছিল তাঁর দল। দলের নেতাদের এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে পাকিস্তানের বিভিন্ন শহরে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল। ইমরানের নিজ শহর লাহোরে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। সেখানে সেনানিবাসে সেনাকর্মকর্তাদের আবাসিক এলাকায় হামলা চালানো হয়েছে। এমনকি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কোর কমান্ডার থ্রি স্টার লে. জেনারেল পদবির সামরিক কর্মকর্তার বাড়িতেও আক্রমণ করা হয়। সেনানিবাসের বিভিন্ন ভবনেও ভাঙচুর চালাতে দেখা গেছে। পাকিস্তানের বিমানবাহিনীর এক ঘাঁটিতেও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। বিক্ষোভ হয়েছে বেলুচিস্তানের কোয়েটায়। সেখানেও সেনানিবাসের বাইরে বিক্ষোভ করেছেন পিটিআইয়ের সমর্থকেরা। ১০ মে দেশটির প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের লাহোরের বাসভবনেও হামলা করা হয়েছিল। এ হামলার সময় অবশ্য শাহবাজ এবং তাঁর পরিবারের সদস্যরা বাড়িতে ছিলেন না।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, পিটিআইয়ের যেসব নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাঁদের নাকি হুমকি দেওয়া হচ্ছে এই বলে, ইমরানের সঙ্গ ত্যাগ না করলে, অর্থাৎ পিটিআই দল ত্যাগ না করলে তাঁদের বিরুদ্ধে এমন ব্যবস্থা নেওয়া হবে, রাজনীতি করা তো দূরে থাক, সারা জীবন তাঁদের পরিবারের সদস্যদের মুখ দর্শন করার সুযোগও পাবেন না; বরং তাঁদের জীবনভর পঙ্গুত্ব বহন করতে হবে। এই হুমকি ওষুধের মতো কাজে দিয়েছে। দেখা গেছে, গ্রেপ্তারকৃতরা ছাড়াও ইমরানের অনেক নেতা-কর্মীর পিটিআই ত্যাগের হিড়িক পড়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী। তিনি ২৪ মে দল ছাড়ার কথা ঘোষণা দিয়েছেন। শুধু দল ছাড়াই নয়, ফাওয়াদ ইমরান খানের সঙ্গে কোনো সম্পর্কই রাখবেন না বলে অঙ্গীকারও করেন। দল ছাড়ার সময় বলেন, ‘আমি ইমরানের থেকে দূরে সরে যাচ্ছি। দলের সব পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছি।’ অথচ এই ফাওয়াদই গ্রেপ্তারের আগে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে ইমরান খানের গ্রেপ্তারের ঘটনাকে ‘অসাংবিধানিক’ বলেছিলেন। তিনি জোর গলায় সেদিন আরও বলেছিলেন, ‘আমরা একটি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছি। আমাকে সুপ্রিম কোর্ট চত্বর থেকে গ্রেপ্তারের ঘটনা সেই চ্যালেঞ্জেরই অংশ!’ ইমরানের জমানায় এই পাকিস্তানি তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ পিটিআইয়ের প্রধান মুখপাত্র ছিলেন। তাঁর এই দল ছাড়ার ঘোষণা ইমরানের জন্য ‘বড় ধাক্কা’ বলেই মনে করা হচ্ছে। পদত্যাগের তালিকায় সর্বশেষ নাম লিখিয়েছেন দলটির অন্যতম প্রভাবশালী নেত্রী শিরিন মাজারি। পদত্যাগকালে তিনিও ফাওয়াদের মতো অঙ্গীকার করে বলেছেন, এখন থেকে তিনি পিটিআই কিংবা অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ততা রাখবেন না। মাজারি সহিংসতার নিন্দাও জানিয়েছেন। পিটিআই ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন দলটির অন্যতম নেতা ও জাতীয় পরিষদের সদস্য আফতাব হোসাইন, পিটিআইয়ের পশ্চিম পাঞ্জাবের সভাপতি ফায়জুল্লাহ্ কামোকা, পাঞ্জাব প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য আব্দুল রাজ্জাক খান নিয়াজী ও মিয়া জলিল। জলিল সহিংস ঘটনার জন্য ইমরান খানকেই দায়ী করেছেন। তিনি অন্য নেতাদেরও ইমরান খান, তাঁর আদর্শ ও রাজনীতি থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে দল থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বানও জানান।
দলের এসব নেতার পদত্যাগের ঘোষণা ইমরানকে রাজনৈতিকভাবে আরও চাপে ফেলে দিল। ওদিকে জানা গেছে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও সরকারের হুমকির মধ্যে শাহ মাহমুদ কুরেশি ও মুসারাত জামশেদ চিমাও মাথা নত করেননি বলে তাঁদের উচ্চ আদালতের নির্দেশে মুক্তি দেওয়ার পরপরই অন্য এক মামলা দেখিয়ে পুনরায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অথচ আদালত জনশৃঙ্খলা আইনে কুরেশিকে গ্রেপ্তারের বিষয়টিকে ‘বেআইনি’ বলেছেন। পুনরায় গ্রেপ্তারের পর কুরেশিকে পুলিশ অজ্ঞাতনামা এক স্থানে নিয়ে গেছে। তাঁকে কোথায় নিয়ে গেছে, তা জানা যায়নি। এখানে উল্লেখ করা প্রাসঙ্গিক হবে, সহিংস ঘটনার পরপরই ১৩ মে পেশোয়ারে সেনাকর্মকর্তাদের একটি অনুষ্ঠানে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আসিম মুনির হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, যাঁরা সেনা সদর দপ্তর ও সেনাকর্মকর্তাদের বাড়িতে হামলার পরিকল্পনা করেছেন, অংশ নিয়েছেন, প্ররোচনা এবং উসকানি দিয়েছেন, তাঁদের সবাইকে বিচারের মুখোমুখি করা হবে।
পাকিস্তান নামের এ দেশটি স্বাধীন হওয়ার পর থেকে এযাবৎ কোনো সরকারপ্রধানই তাঁদের মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেননি। প্রায় ৭৫ বছরের মধ্যে তিনটি সফল সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সে দেশের সেনাবাহিনী মোট ৩৩ বছরের বেশি সময় ধরে সামরিক শাসন চালিয়েছে। এ ছাড়া বাকি সময়ে সেনাবাহিনীকে জমাখরচ দিয়েই বেসামরিক সরকারগুলোকে ক্ষমতায় টিকে থাকতে হয়েছে। যে মুহূর্তে সেনাবাহিনীর সঙ্গে দর-কষাকষিতে হেরফের হয়েছে, তারপরই বেসামরিক সরকারকে ক্ষমতার চেয়ার থেকে সরে দাঁড়াতে হয়েছে। এ কারণেই পাকিস্তানের রাজনীতিতে যেকোনো পালাবদলের সঙ্গে সেনাবাহিনীর সম্পৃক্ততাকে অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠতে দেখা গেছে। পাকিস্তানে সেনাবাহিনীর অবস্থান এমনই শক্তিশালী যে যেকোনো রাজনৈতিক দলই তাদের সঙ্গে আপস না করে টিকে থাকতে পারে না।
পাকিস্তানের রাজনৈতিক নেতৃত্বের দুর্বলতাই সেনাবাহিনীকে রাষ্ট্রক্ষমতায় হস্তক্ষেপের পথ সুগম করে দিয়েছে। পাকিস্তানের রাজনৈতিক নেতৃত্ব রাজনীতি থেকে সেনাবাহিনীকে পৃথক না করে; বরং বারবার তাদের ওপর নির্ভর করেছে, যার ফলে দেশটিতে সামরিক বাহিনী এত প্রভাবশালী হয়ে উঠেছে। সাড়ে পাঁচ লাখ জনবলের সেনাবাহিনীসহ সাত লাখের একটি সশস্ত্র বাহিনীর বোঝা বহন করতে হচ্ছে পাকিস্তানকে। পাকিস্তানের মোট বাজেটের ২০ শতাংশ অর্থ বরাদ্দ থাকে সশস্ত্র বাহিনীর জন্য।
ইমরান খানের জন্য সবচেয়ে দুঃসংবাদ বয়ে নিয়ে এসেছে যখন দলটির মহাসচিব আসাদ ওমর ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি দলের সঙ্গে থাকলেও দলীয় পদ থেকে সরে দাঁড়াবেন। তিনি বলেছেন, এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার পেছনে তাঁকে কোনো ধরনের চাপ দেওয়া হয়নি। আসাদ ওমরের এমন বক্তব্যে সন্দেহের অবকাশ আছে বৈকি। সামরিক জান্তাদের চাপের মুখে এই রাজনৈতিক ব্যক্তি যে এ ধরনের বক্তব্য দিচ্ছন, তা সহজেই অনুমেয়। তা না হলে ইমরান গ্রেপ্তার হওয়ার পর পিটিআইয়ের যেসব নেতাকে এত সক্রিয় দেখা গেছে, কয়েক দিন কারাবাসের পর তাঁদের ভেতরই বা এত পরিবর্তন এল কীভাবে? ইমরান এরই মধ্যে অভিযোগ করে বলেছেন, ধরপাকড় চালিয়ে তাঁর দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের দল থেকে পদত্যাগের জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। ইমরান দাবি, দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের পাশাপাশি তৃণমূল নেতা-কর্মীদেরও লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে। এমন রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বর্তমান সরকার সেনাবাহিনীর সহযোগিতা নিয়ে ইমরান খানের দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের নিষ্ক্রিয় করে তাঁকে একঘরে করে ফেলার চেষ্টা করছে, যাতে তিনি রাজনীতিতে শিগগিরই সক্রিয় হতে না পারেন। ইমরান নিজেও অভিযোগ করে বলেছেন, ‘তারা সবাইকে জেলে পাঠিয়েছে। এখন কার সঙ্গে যোগাযোগ করা যাবে, সেটাও আমি জানি না।’ সামনের দিনগুলোতে ইমরান খানকে যে আরও বেশি রাজনৈতিক হয়রানির শিকার
হতে হবে তা বলাই বাহুল্য।
ইমরান ইতিমধ্যে ঘোষণা করেছেন, প্রয়োজনে তিনি রাজনীতি ছেড়ে দেবেন। তবে তার আগে দুটো বিষয় সরকারকে বোঝাতে হবে যে আগামী অক্টোবরে নির্বাচন দিলে কতটা দেশের উপকার হবে এবং ইমরান রাজনীতি ছেড়ে দিলে দেশের কী কল্যাণ হবে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, এসবই ইমরানের রাজনৈতিক বক্তব্য ছাড়া কিছু নয়। ইমরানের গ্রেপ্তারের পর উদ্ভূত পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে অনেকেই ধারণা পোষণ করছেন, পাকিস্তানে সেনাবাহিনী হয়তো পুনরায় ক্ষমতা দখল করবে। এ আশঙ্কা অমূলক না হলেও খুব তাড়াতাড়িই এ ধরনের ঘটনা ঘটবে বলে মনে হয় না। তবে ক্ষমতা দখল না করলেও ইমরান খান যাতে রাজনীতিতে আগের মতো সক্রিয় হতে না পারেন, সে চেষ্টা তাঁরা করে যাবেন। বিশ্লেষকদের মতে, একসময়ের পাকিস্তান সেনাসদস্যদের, বিশেষ করে জুনিয়ার সামরিক কর্মকর্তাদের ‘পোস্টার বয়’ ছিলেন ইমরান খান। তাঁদের অনেকেই এখন সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ পদে আছেন। তাঁদের ভেতর হয়তো সহানুভূতি থাকতে পারে ইমরানের প্রতি। তবে তাঁদের সেই সহানুভূতি ইমরানের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের দুঃসময়ে কতটুকু কাজে আসবে তা হয়তো ভবিষ্যৎই বলতে পারবে।
এ কে এম শামসুদ্দিন, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ও কলাম লেখক
পাকিস্তানের রাজনীতি এখন একটি সংকটের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হচ্ছে। ইমরান খানের গ্রেপ্তার ও তারপর আদালতের মাধ্যমে জামিন পাওয়ার সময় পর্যন্ত এক জটিল পরিস্থিতি অতিক্রম করেছে পাকিস্তান। ইমরানের আটক থাকাকালে যে সহিংস ঘটনা ঘটেছে তা ছিল পাকিস্তানের ইতিহাসে এক অভূতপূর্ব ঘটনা। ইমরান খানের মুক্তির পর থেকে তাঁর দল পিটিআইকে শিক্ষা দিতে পাকিস্তান সরকার ও সেনাবাহিনী এক জোট বেঁধেছে। পাকিস্তানের সেনাবাহিনীপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির ও প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ যেন আটঘাট বেঁধেই ইমরান খানের পেছনে লেগেছেন। এই সহিংস ঘটনার জের ধরেই ইমরানের দল পিটিআইয়ের গুরুত্বপূর্ণ প্রায় সব নেতাকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের পর জামিনে মুক্তি পেয়ে জেলগেট পেরোতে না পেরোতেই আবার তাঁদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। পাঞ্জাব ও খাইবার পাখতুনখাওয়ায় দাঙ্গা ও আগুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া পিটিআইয়ের ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মাহমুদ কুরেশি এবং পিটিআইয়ের আরেক নেত্রী মুসারাত জামশেদ চিমাওকে কারামুক্তির কয়েক মিনিটের মধ্যে আবারও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জেলের বাইরে গ্রেপ্তার হওয়ার আগে কুরেশি সাংবাদিকদের বলেছিলেন, তিনি এখনো পিটিআইয়ে আছেন এবং ভবিষ্যতেও থাকবেন।
কুরেশি ও মুসারাত জামশেদ ছাড়াও পিটিআইয়ের আরেক গুরুত্বপূর্ণ নেতা ও দলটির মহাসচিব আসাদ ওমরকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সম্প্রতি নিজের টুইটারে এক পোস্টে ইমরান লিখেছেন, ‘প্রায় সাত হাজার পিটিআই-সমর্থককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই সহিংস ঘটনার নেপথ্যে কে বা কারা রয়েছে, তা তদন্ত না করেই আমাদের সমর্থক, নেতৃত্ব এবং নারীদের জেলে ঢোকানো হয়েছে। আমাদের দলকে নিষিদ্ধ করার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।’ ইমরানের দল পিটিআইকে নিষিদ্ধ করার যে প্রচেষ্টা চলছে, তা দেশটির সরকারের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা আসিফও বলেছেন। তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, ইমরানের দল পিটিআইকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে চিন্তাভাবনা চলছে।
পাকিস্তানের ভিতে আঘাত করেছে পিটিআই। আসিফ এখানে পাকিস্তানের ভিত বলতে সেনাবাহিনীকেই বুঝিয়েছেন। তিনি আরও বলেছেন, এর আগে এমন ঘটনা কখনো ঘটেনি। এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এ কথা ঠিক, ইমরানকে গ্রেপ্তারের পর তাঁর সমর্থকেরা প্রতিবাদে যেভাবে ফেটে পড়েছিলেন, পাকিস্তানের সাম্প্রতিক ইতিহাসে এর কোনো নজির নেই। পিটিআইয়ের সমর্থকেরা এমনভাবে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছিলেন যে দেশের বিভিন্ন শহরে ১৪৪ ধারা জারি করেও ওই বিক্ষোভ ঠেকানো যাচ্ছিল না।
পিটিআইয়ের কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর মুহুর্মুহু সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। ৯ মে ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের পরপরই দেশ অচল করে দেওয়ার ডাক দিয়েছিল তাঁর দল। দলের নেতাদের এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে পাকিস্তানের বিভিন্ন শহরে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল। ইমরানের নিজ শহর লাহোরে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। সেখানে সেনানিবাসে সেনাকর্মকর্তাদের আবাসিক এলাকায় হামলা চালানো হয়েছে। এমনকি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কোর কমান্ডার থ্রি স্টার লে. জেনারেল পদবির সামরিক কর্মকর্তার বাড়িতেও আক্রমণ করা হয়। সেনানিবাসের বিভিন্ন ভবনেও ভাঙচুর চালাতে দেখা গেছে। পাকিস্তানের বিমানবাহিনীর এক ঘাঁটিতেও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। বিক্ষোভ হয়েছে বেলুচিস্তানের কোয়েটায়। সেখানেও সেনানিবাসের বাইরে বিক্ষোভ করেছেন পিটিআইয়ের সমর্থকেরা। ১০ মে দেশটির প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের লাহোরের বাসভবনেও হামলা করা হয়েছিল। এ হামলার সময় অবশ্য শাহবাজ এবং তাঁর পরিবারের সদস্যরা বাড়িতে ছিলেন না।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, পিটিআইয়ের যেসব নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাঁদের নাকি হুমকি দেওয়া হচ্ছে এই বলে, ইমরানের সঙ্গ ত্যাগ না করলে, অর্থাৎ পিটিআই দল ত্যাগ না করলে তাঁদের বিরুদ্ধে এমন ব্যবস্থা নেওয়া হবে, রাজনীতি করা তো দূরে থাক, সারা জীবন তাঁদের পরিবারের সদস্যদের মুখ দর্শন করার সুযোগও পাবেন না; বরং তাঁদের জীবনভর পঙ্গুত্ব বহন করতে হবে। এই হুমকি ওষুধের মতো কাজে দিয়েছে। দেখা গেছে, গ্রেপ্তারকৃতরা ছাড়াও ইমরানের অনেক নেতা-কর্মীর পিটিআই ত্যাগের হিড়িক পড়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী। তিনি ২৪ মে দল ছাড়ার কথা ঘোষণা দিয়েছেন। শুধু দল ছাড়াই নয়, ফাওয়াদ ইমরান খানের সঙ্গে কোনো সম্পর্কই রাখবেন না বলে অঙ্গীকারও করেন। দল ছাড়ার সময় বলেন, ‘আমি ইমরানের থেকে দূরে সরে যাচ্ছি। দলের সব পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছি।’ অথচ এই ফাওয়াদই গ্রেপ্তারের আগে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে ইমরান খানের গ্রেপ্তারের ঘটনাকে ‘অসাংবিধানিক’ বলেছিলেন। তিনি জোর গলায় সেদিন আরও বলেছিলেন, ‘আমরা একটি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছি। আমাকে সুপ্রিম কোর্ট চত্বর থেকে গ্রেপ্তারের ঘটনা সেই চ্যালেঞ্জেরই অংশ!’ ইমরানের জমানায় এই পাকিস্তানি তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ পিটিআইয়ের প্রধান মুখপাত্র ছিলেন। তাঁর এই দল ছাড়ার ঘোষণা ইমরানের জন্য ‘বড় ধাক্কা’ বলেই মনে করা হচ্ছে। পদত্যাগের তালিকায় সর্বশেষ নাম লিখিয়েছেন দলটির অন্যতম প্রভাবশালী নেত্রী শিরিন মাজারি। পদত্যাগকালে তিনিও ফাওয়াদের মতো অঙ্গীকার করে বলেছেন, এখন থেকে তিনি পিটিআই কিংবা অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ততা রাখবেন না। মাজারি সহিংসতার নিন্দাও জানিয়েছেন। পিটিআই ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন দলটির অন্যতম নেতা ও জাতীয় পরিষদের সদস্য আফতাব হোসাইন, পিটিআইয়ের পশ্চিম পাঞ্জাবের সভাপতি ফায়জুল্লাহ্ কামোকা, পাঞ্জাব প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য আব্দুল রাজ্জাক খান নিয়াজী ও মিয়া জলিল। জলিল সহিংস ঘটনার জন্য ইমরান খানকেই দায়ী করেছেন। তিনি অন্য নেতাদেরও ইমরান খান, তাঁর আদর্শ ও রাজনীতি থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে দল থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বানও জানান।
দলের এসব নেতার পদত্যাগের ঘোষণা ইমরানকে রাজনৈতিকভাবে আরও চাপে ফেলে দিল। ওদিকে জানা গেছে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও সরকারের হুমকির মধ্যে শাহ মাহমুদ কুরেশি ও মুসারাত জামশেদ চিমাও মাথা নত করেননি বলে তাঁদের উচ্চ আদালতের নির্দেশে মুক্তি দেওয়ার পরপরই অন্য এক মামলা দেখিয়ে পুনরায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অথচ আদালত জনশৃঙ্খলা আইনে কুরেশিকে গ্রেপ্তারের বিষয়টিকে ‘বেআইনি’ বলেছেন। পুনরায় গ্রেপ্তারের পর কুরেশিকে পুলিশ অজ্ঞাতনামা এক স্থানে নিয়ে গেছে। তাঁকে কোথায় নিয়ে গেছে, তা জানা যায়নি। এখানে উল্লেখ করা প্রাসঙ্গিক হবে, সহিংস ঘটনার পরপরই ১৩ মে পেশোয়ারে সেনাকর্মকর্তাদের একটি অনুষ্ঠানে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আসিম মুনির হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, যাঁরা সেনা সদর দপ্তর ও সেনাকর্মকর্তাদের বাড়িতে হামলার পরিকল্পনা করেছেন, অংশ নিয়েছেন, প্ররোচনা এবং উসকানি দিয়েছেন, তাঁদের সবাইকে বিচারের মুখোমুখি করা হবে।
পাকিস্তান নামের এ দেশটি স্বাধীন হওয়ার পর থেকে এযাবৎ কোনো সরকারপ্রধানই তাঁদের মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেননি। প্রায় ৭৫ বছরের মধ্যে তিনটি সফল সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সে দেশের সেনাবাহিনী মোট ৩৩ বছরের বেশি সময় ধরে সামরিক শাসন চালিয়েছে। এ ছাড়া বাকি সময়ে সেনাবাহিনীকে জমাখরচ দিয়েই বেসামরিক সরকারগুলোকে ক্ষমতায় টিকে থাকতে হয়েছে। যে মুহূর্তে সেনাবাহিনীর সঙ্গে দর-কষাকষিতে হেরফের হয়েছে, তারপরই বেসামরিক সরকারকে ক্ষমতার চেয়ার থেকে সরে দাঁড়াতে হয়েছে। এ কারণেই পাকিস্তানের রাজনীতিতে যেকোনো পালাবদলের সঙ্গে সেনাবাহিনীর সম্পৃক্ততাকে অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠতে দেখা গেছে। পাকিস্তানে সেনাবাহিনীর অবস্থান এমনই শক্তিশালী যে যেকোনো রাজনৈতিক দলই তাদের সঙ্গে আপস না করে টিকে থাকতে পারে না।
পাকিস্তানের রাজনৈতিক নেতৃত্বের দুর্বলতাই সেনাবাহিনীকে রাষ্ট্রক্ষমতায় হস্তক্ষেপের পথ সুগম করে দিয়েছে। পাকিস্তানের রাজনৈতিক নেতৃত্ব রাজনীতি থেকে সেনাবাহিনীকে পৃথক না করে; বরং বারবার তাদের ওপর নির্ভর করেছে, যার ফলে দেশটিতে সামরিক বাহিনী এত প্রভাবশালী হয়ে উঠেছে। সাড়ে পাঁচ লাখ জনবলের সেনাবাহিনীসহ সাত লাখের একটি সশস্ত্র বাহিনীর বোঝা বহন করতে হচ্ছে পাকিস্তানকে। পাকিস্তানের মোট বাজেটের ২০ শতাংশ অর্থ বরাদ্দ থাকে সশস্ত্র বাহিনীর জন্য।
ইমরান খানের জন্য সবচেয়ে দুঃসংবাদ বয়ে নিয়ে এসেছে যখন দলটির মহাসচিব আসাদ ওমর ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি দলের সঙ্গে থাকলেও দলীয় পদ থেকে সরে দাঁড়াবেন। তিনি বলেছেন, এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার পেছনে তাঁকে কোনো ধরনের চাপ দেওয়া হয়নি। আসাদ ওমরের এমন বক্তব্যে সন্দেহের অবকাশ আছে বৈকি। সামরিক জান্তাদের চাপের মুখে এই রাজনৈতিক ব্যক্তি যে এ ধরনের বক্তব্য দিচ্ছন, তা সহজেই অনুমেয়। তা না হলে ইমরান গ্রেপ্তার হওয়ার পর পিটিআইয়ের যেসব নেতাকে এত সক্রিয় দেখা গেছে, কয়েক দিন কারাবাসের পর তাঁদের ভেতরই বা এত পরিবর্তন এল কীভাবে? ইমরান এরই মধ্যে অভিযোগ করে বলেছেন, ধরপাকড় চালিয়ে তাঁর দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের দল থেকে পদত্যাগের জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। ইমরান দাবি, দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের পাশাপাশি তৃণমূল নেতা-কর্মীদেরও লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে। এমন রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বর্তমান সরকার সেনাবাহিনীর সহযোগিতা নিয়ে ইমরান খানের দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের নিষ্ক্রিয় করে তাঁকে একঘরে করে ফেলার চেষ্টা করছে, যাতে তিনি রাজনীতিতে শিগগিরই সক্রিয় হতে না পারেন। ইমরান নিজেও অভিযোগ করে বলেছেন, ‘তারা সবাইকে জেলে পাঠিয়েছে। এখন কার সঙ্গে যোগাযোগ করা যাবে, সেটাও আমি জানি না।’ সামনের দিনগুলোতে ইমরান খানকে যে আরও বেশি রাজনৈতিক হয়রানির শিকার
হতে হবে তা বলাই বাহুল্য।
ইমরান ইতিমধ্যে ঘোষণা করেছেন, প্রয়োজনে তিনি রাজনীতি ছেড়ে দেবেন। তবে তার আগে দুটো বিষয় সরকারকে বোঝাতে হবে যে আগামী অক্টোবরে নির্বাচন দিলে কতটা দেশের উপকার হবে এবং ইমরান রাজনীতি ছেড়ে দিলে দেশের কী কল্যাণ হবে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, এসবই ইমরানের রাজনৈতিক বক্তব্য ছাড়া কিছু নয়। ইমরানের গ্রেপ্তারের পর উদ্ভূত পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে অনেকেই ধারণা পোষণ করছেন, পাকিস্তানে সেনাবাহিনী হয়তো পুনরায় ক্ষমতা দখল করবে। এ আশঙ্কা অমূলক না হলেও খুব তাড়াতাড়িই এ ধরনের ঘটনা ঘটবে বলে মনে হয় না। তবে ক্ষমতা দখল না করলেও ইমরান খান যাতে রাজনীতিতে আগের মতো সক্রিয় হতে না পারেন, সে চেষ্টা তাঁরা করে যাবেন। বিশ্লেষকদের মতে, একসময়ের পাকিস্তান সেনাসদস্যদের, বিশেষ করে জুনিয়ার সামরিক কর্মকর্তাদের ‘পোস্টার বয়’ ছিলেন ইমরান খান। তাঁদের অনেকেই এখন সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ পদে আছেন। তাঁদের ভেতর হয়তো সহানুভূতি থাকতে পারে ইমরানের প্রতি। তবে তাঁদের সেই সহানুভূতি ইমরানের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের দুঃসময়ে কতটুকু কাজে আসবে তা হয়তো ভবিষ্যৎই বলতে পারবে।
এ কে এম শামসুদ্দিন, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ও কলাম লেখক
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
৬ দিন আগেপাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
৬ দিন আগেভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে দুই চিরবৈরী প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনার পারদ ক্রমেই চড়ছিল। তা তুঙ্গে উঠল এবার পাকিস্তানের ভূখণ্ডে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলা দিয়ে। পাশাপাশি সীমান্তেও দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে...
৬ দিন আগেঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি বেড়েই চলছে। এ কারণে চালক ও যাত্রীদের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছে এই সড়ক। ডাকাতির শিকার বেশি হচ্ছেন প্রবাসফেরত লোকজন। ডাকাতেরা অস্ত্র ঠেকিয়ে লুট করে নিচ্ছে সর্বস্ব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়েও ঘটছে ডাকাতির ঘটনা।
০২ মার্চ ২০২৫