Ajker Patrika

মার্চের মধ্যে সব ওয়ার্ডে আ.লীগের সম্মেলন

রাজশাহী প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৮: ৪৫
মার্চের মধ্যে সব ওয়ার্ডে আ.লীগের সম্মেলন

রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের একটি থানা ও ওয়ার্ড কমিটির মেয়াদ নেই। কোথাও ৮ বছর আগে, আবার কোথাও ১০ বছর আগে কমিটি হয়েছে। মেয়াদোত্তীর্ণ সেই কমিটিতেই চলছে। তবে এবার আগামী মার্চের মধ্যেই শহরের সব কটি ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের সম্মেলনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

মহানগরে আওয়ামী লীগের পাঁচটি থানা কমিটি আছে। এ ছাড়া সিটি করপোরেশনের ৩০টি ওয়ার্ডে আছে ৩৭টি সাংগঠনিক ওয়ার্ড। দীর্ঘদিন ধরে থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতারা দায়িত্বে থেকে জড়িয়েছেন নানা বিতর্কে। কেউ কেউ বয়সের ভারে ভারাক্রান্ত। বেশ কিছু ওয়ার্ডের অনেক নেতা মারাও গেছেন। ফলে এই কমিটিগুলোতে স্থবিরতা বিরাজ করছে অনেক দিন ধরেই। এবার এসব নিয়ে ভাবছেন দলটির নেতারা।

শহরের সকল ওয়ার্ড ও থানায় সম্মেলন করতে গত বৃহস্পতিবার রাতে মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভা হয়েছে। নগরীর কুমারপাড়ায় দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল। সভা পরিচালনা করেন সম্পাদক ডাবলু সরকার।

ওই সভায় ২৩ ফেব্রুয়ারি নগরীর মতিহার থানা, ২ মার্চ রাজপাড়া থানা, ৪ মার্চ বোয়ালিয়া (পূর্ব) থানা, ৬ মার্চ বোয়ালিয়া (পশ্চিম) থানা এবং ৮ মার্চ শাহ মখদুম থানা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা করার সিদ্ধান্ত হয়। সেই সভা থেকেই থানার অন্তর্গত ওয়ার্ড কমিটিগুলোর সম্মেলনের দিনক্ষণ ঠিক করা হবে। তারপর হবে থানা পর্যায়ের সম্মেলন।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের সবশেষ সভাপতিমণ্ডলীর সভায় দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ওই সভায় তিনি সকল মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটির সম্মেলন করার জন্য কেন্দ্রীয় কমিটিকে নির্দেশনা দিয়েছেন। সে অনুযায়ী কেন্দ্রীয় কমিটি বিভাগীয় পর্যায়ের সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের নির্দেশনা দিয়েছে। বিভাগীয় সাংগঠনিক নেতারা এ বার্তা জেলা ও মহানগর পর্যায়ে দিয়েছেন। তাঁরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে সম্মেলন করার নির্দেশনা দিয়েছেন। আর সম্মেলনের মাধ্যমে বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির নেতাদের দায়িত্বে আনতে বলা হয়েছে।

নগর আওয়ামী লীগের সভায় সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার বলেন, দলকে তৃণমূল পর্যায়ে শক্তিশালী করার জন্য কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নির্দেশনা অনুযায়ী যা যা করা দরকার, সেগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে। আওয়ামী লীগে অপরাজনীতির কোনো সুযোগ নেই। সম্মেলনে বিতর্কিত কোনো ব্যক্তি, অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত কিংবা দল থেকে বহিষ্কৃত কোনো কর্মীকে দলের কোনো পর্যায়ের নেতৃত্বে আসার সুযোগ দেওয়া হবে না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডাবলু সরকার বলেন, ‘মহানগরের অন্তর্গত সব থানা ও ওয়ার্ড কমিটির মেয়াদ আট-দশ বছর আগেই উত্তীর্ণ হয়ে গেছে। কমিটির অনেক নেতা নিশ্চুপ, নিষ্ক্রিয়, অসুস্থ কিংবা বয়স্ক। অনেকে স্বেচ্ছায় সরে যেতে চাচ্ছেন। আমরা তাঁদের সম্মেলনের মাধ্যমে সম্মান দিয়েই সরিয়ে দিতে চাচ্ছি। আগামী মার্চের মধ্যে সকল সাংগঠনিক থানায় সম্মেলন হবে। দু-একটা থানা কমিটিরও সম্মেলনের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এ ছাড়া শহরে আরও দু-একটা ওয়ার্ড কমিটি বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ওয়ার্ড কিংবা থানা পর্যায়ের অনেক নেতাকে আমরা মহানগর কমিটিতে এনেছি। তাঁরা একই সঙ্গে একাধিক কমিটিতে আছেন। এটা গঠনতন্ত্রের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। সম্মেলনে এসব বিষয় বিবেচনায় নেওয়া হবে। নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে আমরা একটা নতুন নেতৃত্ব তৈরির বিষয়টি মাথায় রেখেই সম্মেলন করব। আগামী সংসদ নির্বাচনের আগে এটা করা জরুরি ছিল। দলকে সুসংগঠিত করতে এবার সেটা হচ্ছে।’

নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল বলেন, ‘বর্তমান বাস্তব প্রেক্ষাপটে জাতীয় থেকে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি যেভাবে সম্মেলন করার পরিকল্পনা করেছে তা বাস্তবসম্মত। কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশনা অনুযায়ী রাজশাহী শহরেও সম্মেলন হবে। এ জন্য আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত