Ajker Patrika

বড় ভাই স্ত্রীসহ জেলহাজতে

চৌদ্দগ্রাম প্রতিনিধি
আপডেট : ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৩: ২৯
বড় ভাই স্ত্রীসহ জেলহাজতে

চৌদ্দগ্রামে ছুরিকাঘাতে মো. হাফেজ নিহতের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত শুক্রবার তিনজনকে আসামি করে থানায় মামলাটি দায়ের করেন নিহতের ছেলে মো. মোস্তফা কামাল। ওই রাতেই অভিযুক্ত বড় ভাই আবদুল মালেক ও তাঁর স্ত্রী জবেদা বেগমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। দুজনই মামলার আসামি। গতকাল শনিবার তাঁদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়।

মামলার অপর আসামি হলেন অভিযুক্তের ছেলে ছেলে আবদুল্লাহ আল মামুন। তিনি পলাতক রয়েছেন। এসব তথ্য জানান থানার ওসি শুভ রঞ্জন চাকমা। তিনি জানান, আবদুল মালেক ও তাঁর স্ত্রী জবেদাকে গতকাল শনিবার ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেওয়ার জন্য আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই গ্রামের মৃত আবদুল মজিদের ছেলে আবদুল মালেক ও হাফেজ আহমেদের মধ্যে দীর্ঘ বছর ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। বিষয়টি নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম আদালতে একাধিকবার সালিস হয়। সভায় হাফেজ আহমেদ এক শতক জমি বেশি পাবেন বলে সিদ্ধান্ত হয়। এটি বড় ভাই আবদুল মালেক মেনে নিতে পারেননি। এ নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে ঝগড়া চলতে থাকে।

গত শুক্রবার সকাল ৯টায় আবদুল মালেক বাড়ির পাশের মমতাজ মিয়া নামের এক ব্যক্তিকে দিয়ে হাফেজ আহমেদকে চা দোকানে ডেকে নিয়ে যান। সেখানে দুই ভাইয়ের মধ্যে ওই জমির হিসেব নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে দোকানে থাকা ছুরি নিয়ে সবার সামনে হাফেজ আহমেদকে ছুরিকাঘাত করেন আবদুল মালেক। এরপরই ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। স্থানীয় বাসিন্দারা হাফেজ আহমেদকে উদ্ধার শেষে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়।

চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শুভ রঞ্জন চাকমা বলেন, ‘পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঘটনার দিন রাতেই জেলার লালমাই থানার কলমিয়া গ্রাম থেকে অভিযুক্ত আবদুল মালেককে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের পরে আবদুল মালেক তাঁর ছোট ভাই হাফেজকে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন। আর পুলিশ আবদুল মালেকের স্ত্রী জবেদা বেগমকে বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। ১৬৪ ধারা জবানবন্দির জন্য তাঁদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। অপর পলাতক আসামিকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’

এ দিকে গতকাল ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বিকেলে জানাজা শেষে হাফেজকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

এলাকায় চাঞ্চল্য: বড় ভাইয়ের বিরুদ্ধে ছোট ভাইকে ছুরিকাঘাতে হত্যার অভিযোগ উঠার পর এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। গ্রামের চা দোকান থেকে শুরু করে প্রতিবেশীদের মুখে ঘুরেফিরে একই আলোচনা। দুই ভাই-ই জীবনের শেষ বয়সে উপনীত, এই অবস্থায় এক ভাই নিহত এবং অপর ভাই স্ত্রীসহ গ্রেপ্তারের খবরে অনেকেই মর্মাহত। বিশেষ করে, জমির লোভ দুটি পরিবারকে মুহূর্তের মধ্যে তছনছ করে দেওয়া নিয়ে আলোচনা হচ্ছে বেশি।

গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা ফজল হক বলেন, ‘আমরা সত্যি মর্মাহত।’

পাইকোটা গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য আলী হায়দার বলেন, ‘তাঁদের বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য আমিসহ এলাকাবাসী অনেক চেষ্টা করেছি। অভিযুক্ত ভাই উচ্ছৃঙ্খল। তিনি কারও কথা মানতেন না। আমরা কল্পনাও করতে পারছি না, মাত্র এক শতাংশ ভূমির জন্য কেউ একজন মানুষকে হত্যা করতে পারে। আমি তাঁর ফাঁসি দাবি করছি।’

বর্তমান ইউপি সদস্য আবাদ মোল্লা বলেন, ‘এইভাবে প্রকাশ্যে কাউকে ছুরিকাঘাত করা অভাবনীয়। আমি প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানাই, অভিযুক্তসহ ঘটনার সঙ্গে যাঁরা জড়িত সবাইকে শাস্তি দেওয়া হোক।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জোবাইদার নিরাপত্তার নামে প্রতিবেশীদের বিরক্ত না করার নির্দেশ তারেক রহমানের

হেফাজতসহ ধর্ম ব্যবসায়ীরা নারীবিদ্বেষী প্রচারণা চালাচ্ছে: ৬৮ মানবাধিকার সংগঠন

মানিকগঞ্জে সালিসে বিএনপি নেতার নির্দেশে পাঁচ ভাইকে জুতাপেটা

রাখাইনে মানবিক করিডর: জান্তার আপত্তিতে সরকারে দ্বিধা

ভারতের ব্ল্যাকআউট মহড়া, সীমান্তে আটার মজুত বাড়াচ্ছে পাকিস্তান, যুদ্ধ কি লেগে যাচ্ছে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত