Ajker Patrika

বিএনপির কমিটিতে ‘আ.লীগের’ কর্মী

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ১৭ মে ২০২২, ১৩: ২৪
বিএনপির কমিটিতে ‘আ.লীগের’ কর্মী

চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলা ও পৌরসভা বিএনপির নবগঠিত কমিটিতে পদ পেয়েছেন আওয়ামী লীগের পক্ষে প্রচারে অংশ নেওয়া কর্মী, রোহিঙ্গা পাচার, পাসপোর্ট জালিয়াতি ও মাদক মামলার আসামিরা। এ ছাড়া কখনো বিএনপির কার্যক্রমে অংশ না নিয়েও অনেকেই কমিটিতে পদ পেয়েছেন বলেও অভিযোগ। এমনকি ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে কখনো বিএনপির কার্যক্রমে অংশ নেবেন না’ বলে ঘোষণা দেওয়া ব্যক্তিকেও দেওয়া হয়েছে পদ। প্রতিবাদে কমিটি বাতিলের দাবিতে ঝাড়ুমিছিল ও সমাবেশ করেছেন তৃণমূল বিএনপির কর্মীরা।

দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান ও সদস্যসচিব মোস্তাক আহমেদ খান সাতকানিয়া উপজেলা ও পৌরসভার কমিটির অনুমোদন দেয় গত ২০ এপ্রিল। কমিটি প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই সেটি বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করছেন তৃণমূলের কর্মীরা।

জানা গেছে, ৩০ সদস্যের সাতকানিয়া উপজেলা যে কমিটি গঠন করা হয়েছে, সেখানে অনেকেই বিতর্কিত। আহ্বায়কের পদ পাওয়া জামাল হোসাইন একাধিক মামলার আসামি। তাঁর বিরুদ্ধে পাসপোর্ট জালিয়াতি ও রোহিঙ্গা পাচার মামলা রয়েছে। ২০১৭ সালের ৩০ ডিসেম্বর পতেঙ্গা থানায় মামলাটি হয়।

তাঁর বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ, গত ১৫ বছর বিএনপির কোনো আন্দোলন-সংগ্রামে নেই। বরং আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তাঁর সখ্যের প্রমাণ আছে। গাড়ি ভাঙচুর মামলায় তিনি নিজেই বাদী হয়ে বিএনপির ছয় কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেন। এমনকি গত বছর বিএনপির ২৩ জনের বিরুদ্ধে থানায় নাম জমা দেন তিনি। এ রকম গুরুতর অভিযোগের পরও তাঁকে পদ দেওয়ায় হতাশ তৃণমূল কর্মীরা।

যুগ্ম আহ্বায়কের পদ পাওয়া লোকমান হাকিমের বিরুদ্ধেও আছে সুনির্দিষ্ট বেশকিছু অভিযোগ। গত ইউপি নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীর প্রচারে অংশ নেওয়ার ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও যান তিনি।

এ ছাড়া যুগ্ম আহ্বায়কের পদ পাওয়া আহমেদুল হক সিকদার গাড়ির লাইনম্যানের কাজ করেন। কখনো বিএনপির কার্যক্রমে অংশ না নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। একই পদ পাওয়া শাহবুদ্দিন রাশেদও বিএনপির কোনো মিছিল-মিটিংয়ে ছিলেন না। বরং তিনি প্রকাশ্যে বক্তব্য দিয়েছেন যতদিন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকবেন, ততদিন বিএনপির কোনো মিছিল-মিটিংয়ে যাবেন না। এরপরও তাঁকে যুগ্ম আহ্বায়কের পদ দেওয়া হয়েছে।

কোনো দিন বিএনপির রাজনীতিতে অংশ না নিয়েও জহিরুল ইসলাম চৌধুরী, মোহাম্মদ নূরুনবী, তারেকুল ইসলামকে যুগ্ম আহ্বায়ক পদ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এলডিপি করা হাজি ছামাদকে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়েছে। যুগ্ম আহ্বায়ক পদ পাওয়া আরেক নেতা দিদার হোসেন ঢাকায় মাদক মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন।

পৌরসভার কমিটিতেও একই অভিযোগ রয়েছে। আহ্বায়কের পদ পাওয়া শওকত আলী চৌধুরী গত ১৫ বছর বিএনপির কোনো কার্যক্রমে অংশ নেননি বলে অভিযোগ। যুগ্ম আহ্বায়ক মাইনউদ্দিন মো. জাহেদ মাদক মামলার আসামি। তিনি ২০০৫ সালে হেরোইন মামলা ও ২০১৮ সালে ঢাকায় ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার হয়েছিলেন।

এ ছাড়া সদস্যসচিব আব্দুর রহিম, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ রফিকও কোনো দিন বিএনপির কার্যক্রমে অংশ নেননি বলে অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে রফিক তার ফেসবুকে আওয়ামী লীগের প্রচারণা করতে দেখা গেছে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে জামাল হোসাইনের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর ফোন কেটে দেন। এ ছাড়া অন্যদের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে এগুলো তাঁদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেন।

উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, উপজেলায় যাঁকে আহ্বায়ক করা হয়েছে; তিনি সম্প্রতি সৌদি আরব থেকে এসেছেন। কোনো দিন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। এ ছাড়া উপজেলা ও পৌরসভায় যাঁদের পদ দেওয়া হয়েছে, তাঁদের বেশির ভাগই কোনো দিন বিএনপি করতেন না। তাই এ কমিটি বাতিল করে এক সপ্তাহের মধ্যে তৃণমূল বিএনপির নেতা-কর্মীদের নিয়ে নতুন কমিটি গঠন করতে হবে। তা না হলে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা ঘোষিত কমিটির বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাকা দিয়ে নারীর চাবুকের ঘা খাচ্ছিলেন পুরুষ, দুজন গ্রেপ্তার

ভারতের সঙ্গে সংঘাতে পাকিস্তানের ভাগ্যনিয়ন্তা সেনাপ্রধান জেনারেল মুনির

প্রবাসীর রেমিট্যান্সের অর্থ আত্মসাৎ, নারী ব্যাংক কর্মকর্তা কারাগারে

পাকিস্তানে কীভাবে হামলা চালাতে পারে ভারত, ইতিহাস যা বলছে

কোটি টাকা ‘ভর্তুকি’র জিম্বাবুয়ে সিরিজে বাংলাদেশ যা পেল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত