Ajker Patrika

উচ্চশিক্ষার জন্য কেন ইউএসএ বাছাই করবেন

মুনতাসির সিয়াম
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২১, ১৩: ৫৭
উচ্চশিক্ষার জন্য কেন ইউএসএ বাছাই করবেন

উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে পাড়ি জমিয়েছেন মো. তৌহিদুল ইসলাম। পিএইচডির শিক্ষার্থী হিসেবে নিয়োজিত রয়েছেন ইউনিভার্সিটি অ্যাট বাফেলোতে। এ দেশের শিক্ষার্থীদের জন্য নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষাবিষয়ক গল্প জানিয়েছেন তিনি।

দেশ বাছাই
অফুরন্ত সম্ভাবনার দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। বিশ্ব র‍্যাঙ্কিংয়ে প্রথম সারির অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ই যুক্তরাষ্ট্রের। এ দেশের প্রতিষ্ঠানগুলো কঠোর নিয়ম অনুশীলন করে শিক্ষার মান বজায় রাখার জন্য। উন্নত শিক্ষাব্যবস্থা ও গবেষণালব্ধ ল্যাব, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ সুযোগ-সুবিধা, সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য ও বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে শেখার সুযোগ—মূলত এসব কারণে আমি যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।

উচ্চশিক্ষার জন্য প্রস্তুতি

  • স্নাতকের শুরু থেকেই ইংরেজিতে দক্ষতা অর্জন করতে পারেন এবং তৃতীয় বর্ষে পড়াকালীন আইইএলটিএস/টোফেল/জিআরই প্রস্তুতি নিয়ে চতুর্থ বর্ষের মধ্যে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেন।
  • দ্বিতীয় বর্ষ থেকে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভাগ সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া শুরু এবং প্রবাসী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এসব বিষয়ে আলোচনা করতে পারেন।
  • তৃতীয় বর্ষ থেকে কিছু গবেষণার কাজ শুরু করা ভালো।
  • চতুর্থ বর্ষে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা সংক্ষিপ্ত তালিকা তৈরি করতে পারেন, যেখানে আবেদন এবং প্রফেসরদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করবেন।
  • চতুর্থ বর্ষের শেষদিকে বা পাস করার পর আবেদন করতে পারেন।

আবেদনের যোগ্যতা

স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ভর্তির জন্য সচরাচর যেসব জিনিস চাওয়া হয়, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য:

  • স্নাতক ডিগ্রি।
  • স্নাতক ডিগ্রি বা সমতুল্য কোর্সে বি-গ্রেড (জিপিএ-৩.০) বা তার বেশি। তবে কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩.০-এর কমও গ্রহণ করে। সত্যিকার অর্থে ভর্তি কমিটি দ্বারা সিজিপিএ মূল্যায়িত হয়।
  • সিজিপিএর বাইরে অন্য যে স্কোরগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ:

ক. ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা: ন্যূনতম স্কোর আইইএলটিএস-৬.৫, টোফেল-৭৯। করোনা মহামারির মধ্যে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় ডুওলিঙ্গো (Duolingo) স্কোর গ্রহণ করে। সে ক্ষেত্রে ন্যূনতম স্কোর ১২০ ধরা হয়।

খ. জিআরই: করোনা মহামারির পর থেকে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় ঐচ্ছিক বা মওকুফ করে দিয়েছে। তবে জিআরই স্কোর চাইলে ৩০০-এর ওপর স্কোর থাকা ভালো।

  • সাধারণত তিন থেকে পাঁচটি লেটার অব রিকমেন্ডেশন (এলওআর) চাওয়া হয়, যেখানে উল্লেখ করা থাকে প্রফেসর (যাঁর কাছ থেকে এলওআর নেবেন) আপনাকে চেনেন এবং আপনার ব্যক্তিগত চরিত্র তুলে ধরবেন। এলওআরে আপনার লিডারশিপ ও টিম ম্যানেজমেন্টের দক্ষতা তুলে ধরতে হবে।
  • ফান্ডিং পেতে স্টেটমেন্ট অব পারপাস (এসওপি) সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এসওপি লেখার সময় আপনি স্নাতক পর্যায়ে যা করেছেন, সেসব তুলে ধরতে হবে। মোদ্দাকথা, আপনার আগের রিসার্চ অভিজ্ঞতা কেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসরের রিসার্চের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, তা তুলে ধরুন। এসওপিতে যে জিনিসগুলো তুলে ধরা জরুরি তা হলো, আপনি কেন পিএইচডি করতে চান, আবেদনকৃত বিশ্ববিদ্যালয় ও বিষয়টি কেন বাছাই করলেন ভর্তির জন্য, কেন আপনি বাছাইকৃত গবেষণা ক্ষেত্রে আগ্রহী। এ ছাড়া আপনার আগের চাকরির অভিজ্ঞতা ও পিএইচডি শেষে আপনার পরিকল্পনা তুলে ধরতে পারেন।

ভর্তির সময়

বিশ্ববিদ্যালয়ভেদে ভিন্ন হয়ে থাকে ভর্তির জন্য আবেদনের সময়। আলাদাভাবে বলা উচিত, ফল সেমিস্টারে ফান্ডিং পাওয়ার সুযোগ বেশি, আর সেখানে আবেদনের শেষ সময়টা হয়ে থাকে মূলত ডিসেম্বর মাসের শেষ থেকে জানুয়ারি মাসের শুরুর দিকটায়। আসলে বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিভাগের ওয়েবসাইটে নিয়মিত খোঁজ রাখতে হবে। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ই-মেইলে যোগাযোগও করা যেতে পারে।

কাজের সুযোগ

এফ-১ ভিসাধারী শিক্ষার্থীরা অন-ক্যাম্পাস জব বা চাকরি করতে পারেন। কাজ সরাসরি আপনার বিষয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে হবে এমনটা নয়। তবে অবশ্যই কিছু নিয়মকানুন রয়েছে, এফ-১ স্ট্যাটাস হারাতে না চাইলে যা কিনা আপনাকে মেনে চলতে হবে। টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্ট, রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট, গ্র্যাজুয়েট অ্যাসিস্ট্যান্ট, ডাইনিং ও লাইব্রেরিতে কাজ, বিভিন্ন ল্যাব ও প্রশাসনিক অফিসে কাজ অন ক্যাম্পাস জবের অন্তর্ভুক্ত। কোনোভাবেই আপনাকে অফ-ক্যাম্পাস জব ও কাজের পরিসর সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা অতিক্রম করার অনুমতি দেবে না কর্তৃপক্ষ।

অনুলিখন: মুনতাসির সিয়াম

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত