মোনায়েম সরকার

বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা সামনে। ৯ অক্টোবর পূজা শুরু। বাংলাদেশে এবার দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে উদ্যাপন হবে কি না, তা নিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে কিছু উদ্বেগ আছে বলে শুনতে পাচ্ছি। যদিও কোনো কোনো মহল থেকে বলা হচ্ছে, দুর্গাপূজা ভালোভাবে উদ্যাপনের জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এমনকি মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা পূজামণ্ডপ পাহারা দেবে বলেও খবর প্রচার হয়েছে। সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দল হিসেবে পরিচিত জামায়াতে ইসলামীও দুর্গাপূজা নির্বিঘ্নে পালনের পক্ষে কথা বলেছে। কিন্তু এতে হিন্দু সম্প্রদায়ের উদ্বেগ কমছে না বাড়ছে, তা বলা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তবে সরকার পরিবর্তনের পর প্রায় দেড় মাসেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি, পুলিশ সব জায়গায় সমান সক্রিয় হয়নি। আন্দোলনের সময় ও পরে এমন সব ঘটনা ঘটেছে যার ফলে পুলিশের মনোবল ভেঙে পড়েছে। নাগরিকদের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে সেনাবাহিনীকে দুই মাসের জন্য ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও উপাসনালয়ে হামলার ঘটনা ঘটেছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে লেখা একটি খোলাচিঠিতে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘ছাত্র-জনতার এই আত্মদান, ত্যাগ ও সংগ্রাম বাংলাদেশে জাগরণের যে চেতনা প্রজ্বালন করেছে, তা যেন কখনো কেউ নিভিয়ে দিতে না পারে, মুক্তিযুদ্ধ যেন পথ না হারায়। এই বিজয় যখন চূড়ান্ত লক্ষ্য অভিমুখে এগিয়ে যাচ্ছে, অত্যন্ত দুঃখ ও বেদনার সঙ্গে লক্ষ করছি যে একটি বিশেষ গোষ্ঠী সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে নির্বিচার তুলনাহীন সহিংসতা ছড়িয়ে এই অর্জনে কালিমা লেপন করার ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে।’
খোলাচিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ‘অনেক মন্দির হামলার পর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, অনেক নারী নিগৃহীত হয়েছেন। কয়েকটি স্থানে হত্যার ঘটনাও ঘটেছে। আক্রান্ত হয়েছে অন্য সংখ্যালঘুরাও। মূলত ৫ আগস্ট থেকে এই সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, যা এখনো অব্যাহত রয়েছে। সারা দেশের সংখ্যালঘুদের মধ্যে গভীর শঙ্কা, উদ্বেগ ও অনিশ্চয়তা ছড়িয়ে পড়েছে।’
অন্য দিকে ১৫ আগস্ট ভারতের স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছিলেন, ‘বিশেষ করে ভারতের ১৪০ কোটি মানুষ চায় হিন্দুসহ বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা যেন নিরাপদে থাকে।’
এর পরদিনই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। দুইজনের মধ্যে হিন্দুসহ বাংলাদেশের সকল সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিয়ে কথা হয়েছে। প্রফেসর ইউনূস নরেন্দ্র মোদিকে বলেছেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নির্যাতন নিয়ে ভারতীয় মিডিয়ায় অতিরঞ্জিত খবর প্রকাশ করা হয়েছে। সত্যিকার অর্থে কী ঘটেছে সেটি দেখতে বাংলাদেশে এসে ভারতীয় সাংবাদিকদের রিপোর্ট করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার বিষয়টি যখন উত্থাপন করেছেন তখন প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, সংখ্যালঘুসহ বাংলাদেশের সব নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
নিরাপত্তার দাবিতে হিন্দু সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে একাধিক সমাবেশ করে বিভিন্ন দাবিদাওয়া তুলে ধরা হয়েছে। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যেন দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে না ঘটে, সেটাই সবার প্রত্যাশা। সারা দেশে এখন চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ। ১৪ সেপ্টেম্বর ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় একটি মন্দিরে নির্মাণাধীন আটটি দুর্গা প্রতিমা ভাঙচুর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলা সদর বাজারের গুড়পট্টি এলাকার হরি মন্দিরে এ ঘটনা ঘটে বলে ভাঙ্গা থানার ওসি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন।
মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় সঞ্জিত বিশ্বাস নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে তাকে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে পরিচিত করানো হয় স্থানীয় পুলিশের পক্ষ থেকে। এই ঘটনা সম্পর্কে জার্মানিভিত্তিক গণমাধ্যম ডয়চে ভেলের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে ভিন্ন খবর। ডয়চে ভেলে জানাচ্ছে: পুলিশ যাকে ‘ভারতীয়’ ধরে নিয়ে বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করেছিল তার নাম সঞ্জিত বিশ্বাস (৪৫), বাবার নাম নিশিকান্ত বিশ্বাস, বাড়ি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানি উপজেলায়। ডয়চে ভেলেকে নিশিকান্ত বিশ্বাস জানান, তাঁর ছেলে মানসিক ভারসাম্য হারানোর ফলে ২০১৯ সাল থেকে নিখোঁজ ছিলেন ৷ সংবাদপত্রে ছবি দেখে সঞ্জিতের সন্ধান পেয়েছেন তাঁরা।
অথচ সঞ্জিতের পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত না হয়ে, এমনকি প্রতিমা ভাঙচুরের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততার বিষয়ে কোনো অভিযোগ বা তথ্য না পেয়েই পুলিশের পক্ষ থেকে সোমবার গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয় ৷ সেই তথ্য যাচাই-বাছাই না করে খবরও প্রকাশ করা হয় ৷ একটি ইংরেজি দৈনিকের বাংলা ভার্সনে সেই খবরের শিরোনাম ছিল ‘ফরিদপুরে নির্মাণাধীন দুর্গা প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় “ভারতীয় নাগরিক” গ্রেপ্তার।’
কিন্তু ডয়চে ভেলের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে সম্পূর্ণ ভিন্ন তথ্য। মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তিকে কিনা ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত করে আসামি ধরার কৃতিত্ব নেওয়ার চেষ্টা করেছে পুলিশ, পাসপোর্ট বা অন্য কোনো পরিচয়পত্র না দেখা সত্ত্বেও তাঁকে ভারতীয় নাগরিক সাব্যস্ত করে দ্রুত খবর প্রচারে উদ্যোগ নিয়েছে, সংবাদমাধ্যমের একটা অংশও কোনো যাচাই-বাছাইয়ে না গিয়ে হুবহু প্রচার করেছে সেই ‘কাল্পনিক’ তথ্য। অথচ খুব সহজেই সঞ্জিতের জাতীয়তা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যেত। আঙুলের ছাপ নিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রের সার্ভারে পরীক্ষা করলেই পুলিশ জানতে পারত সঞ্জিত বাংলাদেশের নাগরিক। শেষ পর্যন্ত অবশ্য জাতীয় পরিচয়পত্র দেখেই পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
ভাঙ্গার স্থানীয় এক সাংবাদিক ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘অন্তত দেড় মাস ধরে ওই পাগলকে বাজারে দেখা যাচ্ছে। সে কোনো প্রশ্নের উত্তর দেয় না। পোশাক খুবই অপরিচ্ছন্ন। ঘটনা জানার পর এসপি যখন ঘটনাস্থলে যান, তখন আমাদেরও ডাকা হয়েছিল। আমরা তখনো ওই পাগলকে সেখানে দেখেছিলাম। কিন্তু সেদিন তাকে ধরা হয়নি। পরদিন হঠাৎ করে পুলিশ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে পাগলকে গ্রেপ্তারের কথা জানায়। ফলে আমরাও নিশ্চিত নই কীভাবে ওই পাগলের সম্পৃক্ততার বিষয়ে পুলিশ নিশ্চিত হয়ে তাকে গ্রেপ্তার করল। তবে আমরা ধারণা করছি, পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে তাদের তৎপরতা দেখাতে ওই পাগলকে গ্রেপ্তার করে থাকতে পারে।’
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেছেন ইউএনও বি এম কুদরত-এ-খুদা। ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘আমি এখানে ৯ মাস ধরে আছি ৷ এখানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কোনো অভাব নেই ৷ হঠাৎ করেই কেন এমন একটি ঘটনা ঘটে গেল, সেটা বুঝতে পারছি না। এবার এখানে ৯১টি মণ্ডপে পূজা হচ্ছে। আমরা সবার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। আশা করছি, আর কোনো সমস্যা হবে না।’
সঞ্জিতের সম্পর্কে তার বাবা নিশিকান্ত বিশ্বাস ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘জন্মের পর থেকেই সঞ্জিতের মাথায় কিছুটা সমস্যা ছিল। ২০০৬ সালে সে একবার পালিয়ে ভারতে চলে গিয়েছিল। ৬ মাস পর আবার ফিরে আসে। ২০০৯ সালে আমার স্ত্রী মারা যাওয়ার পর ছেলের মাথা আরও খারাপ হয়ে যায় ৷ মায়ের মৃত্যুর শোক সে নিতে পারেনি। যত দিন যায়, তার মানসিক অবস্থা আরও খারাপ হতে থাকে। ২০১৫ সাল থেকে আমরা একজন মানসিক চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা করাতে থাকি ৷ কিন্তু পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। ২০১৯ সালে সে একেবারে হারিয়ে যায়। বহু জায়গায় আমরা খোঁজ করেছি, কিন্তু পাইনি। অবশেষে থানা পুলিশ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তার কথা জানায়। আমরা পুলিশের সঙ্গে কথা বলে আদালতে গিয়েছিলাম। কিন্তু জামিন হয়নি। আশা করি, ২৯ সেপ্টেম্বর হয়ে যাবে। তবে যে কেউ তাকে দেখলে বুঝবে, তার পক্ষে প্রতিমা ভাঙচুর করা সম্ভব না।’
বিষয়টি বিশেষভাবে উল্লেখ করার কারণ, কোনো স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে অতিউৎসাহী হয়ে কারোরই এমন কিছু করা বা বলা উচিত নয়, যা মানুষের মধ্যে ভুল-বোঝাবুঝি বা উত্তেজনার সৃষ্টি করতে পারে। দুর্গাপূজাকে ঘিরে সব পক্ষকেই দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। গণমাধ্যমের অনুসন্ধানী ভূমিকা যে সত্য উদ্ঘাটনে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে, সেটাও ভাঙ্গার ঘটনায় প্রমাণ হলো। কী করা উচিত আর কী করা উচিত নয়—এই বোধ তৈরি না হলে সম্প্রীতির পরিবেশ কীভাবে প্রশস্ত হবে?
লেখক: মোনায়েম সরকার
লেখক, রাজনীতিবিদ; চেয়ারম্যান, বিএফডিআর

বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা সামনে। ৯ অক্টোবর পূজা শুরু। বাংলাদেশে এবার দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে উদ্যাপন হবে কি না, তা নিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে কিছু উদ্বেগ আছে বলে শুনতে পাচ্ছি। যদিও কোনো কোনো মহল থেকে বলা হচ্ছে, দুর্গাপূজা ভালোভাবে উদ্যাপনের জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এমনকি মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা পূজামণ্ডপ পাহারা দেবে বলেও খবর প্রচার হয়েছে। সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দল হিসেবে পরিচিত জামায়াতে ইসলামীও দুর্গাপূজা নির্বিঘ্নে পালনের পক্ষে কথা বলেছে। কিন্তু এতে হিন্দু সম্প্রদায়ের উদ্বেগ কমছে না বাড়ছে, তা বলা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তবে সরকার পরিবর্তনের পর প্রায় দেড় মাসেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি, পুলিশ সব জায়গায় সমান সক্রিয় হয়নি। আন্দোলনের সময় ও পরে এমন সব ঘটনা ঘটেছে যার ফলে পুলিশের মনোবল ভেঙে পড়েছে। নাগরিকদের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে সেনাবাহিনীকে দুই মাসের জন্য ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও উপাসনালয়ে হামলার ঘটনা ঘটেছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে লেখা একটি খোলাচিঠিতে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘ছাত্র-জনতার এই আত্মদান, ত্যাগ ও সংগ্রাম বাংলাদেশে জাগরণের যে চেতনা প্রজ্বালন করেছে, তা যেন কখনো কেউ নিভিয়ে দিতে না পারে, মুক্তিযুদ্ধ যেন পথ না হারায়। এই বিজয় যখন চূড়ান্ত লক্ষ্য অভিমুখে এগিয়ে যাচ্ছে, অত্যন্ত দুঃখ ও বেদনার সঙ্গে লক্ষ করছি যে একটি বিশেষ গোষ্ঠী সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে নির্বিচার তুলনাহীন সহিংসতা ছড়িয়ে এই অর্জনে কালিমা লেপন করার ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে।’
খোলাচিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ‘অনেক মন্দির হামলার পর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, অনেক নারী নিগৃহীত হয়েছেন। কয়েকটি স্থানে হত্যার ঘটনাও ঘটেছে। আক্রান্ত হয়েছে অন্য সংখ্যালঘুরাও। মূলত ৫ আগস্ট থেকে এই সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, যা এখনো অব্যাহত রয়েছে। সারা দেশের সংখ্যালঘুদের মধ্যে গভীর শঙ্কা, উদ্বেগ ও অনিশ্চয়তা ছড়িয়ে পড়েছে।’
অন্য দিকে ১৫ আগস্ট ভারতের স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছিলেন, ‘বিশেষ করে ভারতের ১৪০ কোটি মানুষ চায় হিন্দুসহ বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা যেন নিরাপদে থাকে।’
এর পরদিনই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। দুইজনের মধ্যে হিন্দুসহ বাংলাদেশের সকল সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিয়ে কথা হয়েছে। প্রফেসর ইউনূস নরেন্দ্র মোদিকে বলেছেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নির্যাতন নিয়ে ভারতীয় মিডিয়ায় অতিরঞ্জিত খবর প্রকাশ করা হয়েছে। সত্যিকার অর্থে কী ঘটেছে সেটি দেখতে বাংলাদেশে এসে ভারতীয় সাংবাদিকদের রিপোর্ট করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার বিষয়টি যখন উত্থাপন করেছেন তখন প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, সংখ্যালঘুসহ বাংলাদেশের সব নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
নিরাপত্তার দাবিতে হিন্দু সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে একাধিক সমাবেশ করে বিভিন্ন দাবিদাওয়া তুলে ধরা হয়েছে। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যেন দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে না ঘটে, সেটাই সবার প্রত্যাশা। সারা দেশে এখন চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ। ১৪ সেপ্টেম্বর ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় একটি মন্দিরে নির্মাণাধীন আটটি দুর্গা প্রতিমা ভাঙচুর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলা সদর বাজারের গুড়পট্টি এলাকার হরি মন্দিরে এ ঘটনা ঘটে বলে ভাঙ্গা থানার ওসি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন।
মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় সঞ্জিত বিশ্বাস নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে তাকে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে পরিচিত করানো হয় স্থানীয় পুলিশের পক্ষ থেকে। এই ঘটনা সম্পর্কে জার্মানিভিত্তিক গণমাধ্যম ডয়চে ভেলের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে ভিন্ন খবর। ডয়চে ভেলে জানাচ্ছে: পুলিশ যাকে ‘ভারতীয়’ ধরে নিয়ে বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করেছিল তার নাম সঞ্জিত বিশ্বাস (৪৫), বাবার নাম নিশিকান্ত বিশ্বাস, বাড়ি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানি উপজেলায়। ডয়চে ভেলেকে নিশিকান্ত বিশ্বাস জানান, তাঁর ছেলে মানসিক ভারসাম্য হারানোর ফলে ২০১৯ সাল থেকে নিখোঁজ ছিলেন ৷ সংবাদপত্রে ছবি দেখে সঞ্জিতের সন্ধান পেয়েছেন তাঁরা।
অথচ সঞ্জিতের পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত না হয়ে, এমনকি প্রতিমা ভাঙচুরের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততার বিষয়ে কোনো অভিযোগ বা তথ্য না পেয়েই পুলিশের পক্ষ থেকে সোমবার গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয় ৷ সেই তথ্য যাচাই-বাছাই না করে খবরও প্রকাশ করা হয় ৷ একটি ইংরেজি দৈনিকের বাংলা ভার্সনে সেই খবরের শিরোনাম ছিল ‘ফরিদপুরে নির্মাণাধীন দুর্গা প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় “ভারতীয় নাগরিক” গ্রেপ্তার।’
কিন্তু ডয়চে ভেলের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে সম্পূর্ণ ভিন্ন তথ্য। মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তিকে কিনা ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত করে আসামি ধরার কৃতিত্ব নেওয়ার চেষ্টা করেছে পুলিশ, পাসপোর্ট বা অন্য কোনো পরিচয়পত্র না দেখা সত্ত্বেও তাঁকে ভারতীয় নাগরিক সাব্যস্ত করে দ্রুত খবর প্রচারে উদ্যোগ নিয়েছে, সংবাদমাধ্যমের একটা অংশও কোনো যাচাই-বাছাইয়ে না গিয়ে হুবহু প্রচার করেছে সেই ‘কাল্পনিক’ তথ্য। অথচ খুব সহজেই সঞ্জিতের জাতীয়তা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যেত। আঙুলের ছাপ নিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রের সার্ভারে পরীক্ষা করলেই পুলিশ জানতে পারত সঞ্জিত বাংলাদেশের নাগরিক। শেষ পর্যন্ত অবশ্য জাতীয় পরিচয়পত্র দেখেই পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
ভাঙ্গার স্থানীয় এক সাংবাদিক ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘অন্তত দেড় মাস ধরে ওই পাগলকে বাজারে দেখা যাচ্ছে। সে কোনো প্রশ্নের উত্তর দেয় না। পোশাক খুবই অপরিচ্ছন্ন। ঘটনা জানার পর এসপি যখন ঘটনাস্থলে যান, তখন আমাদেরও ডাকা হয়েছিল। আমরা তখনো ওই পাগলকে সেখানে দেখেছিলাম। কিন্তু সেদিন তাকে ধরা হয়নি। পরদিন হঠাৎ করে পুলিশ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে পাগলকে গ্রেপ্তারের কথা জানায়। ফলে আমরাও নিশ্চিত নই কীভাবে ওই পাগলের সম্পৃক্ততার বিষয়ে পুলিশ নিশ্চিত হয়ে তাকে গ্রেপ্তার করল। তবে আমরা ধারণা করছি, পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে তাদের তৎপরতা দেখাতে ওই পাগলকে গ্রেপ্তার করে থাকতে পারে।’
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেছেন ইউএনও বি এম কুদরত-এ-খুদা। ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘আমি এখানে ৯ মাস ধরে আছি ৷ এখানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কোনো অভাব নেই ৷ হঠাৎ করেই কেন এমন একটি ঘটনা ঘটে গেল, সেটা বুঝতে পারছি না। এবার এখানে ৯১টি মণ্ডপে পূজা হচ্ছে। আমরা সবার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। আশা করছি, আর কোনো সমস্যা হবে না।’
সঞ্জিতের সম্পর্কে তার বাবা নিশিকান্ত বিশ্বাস ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘জন্মের পর থেকেই সঞ্জিতের মাথায় কিছুটা সমস্যা ছিল। ২০০৬ সালে সে একবার পালিয়ে ভারতে চলে গিয়েছিল। ৬ মাস পর আবার ফিরে আসে। ২০০৯ সালে আমার স্ত্রী মারা যাওয়ার পর ছেলের মাথা আরও খারাপ হয়ে যায় ৷ মায়ের মৃত্যুর শোক সে নিতে পারেনি। যত দিন যায়, তার মানসিক অবস্থা আরও খারাপ হতে থাকে। ২০১৫ সাল থেকে আমরা একজন মানসিক চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা করাতে থাকি ৷ কিন্তু পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। ২০১৯ সালে সে একেবারে হারিয়ে যায়। বহু জায়গায় আমরা খোঁজ করেছি, কিন্তু পাইনি। অবশেষে থানা পুলিশ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তার কথা জানায়। আমরা পুলিশের সঙ্গে কথা বলে আদালতে গিয়েছিলাম। কিন্তু জামিন হয়নি। আশা করি, ২৯ সেপ্টেম্বর হয়ে যাবে। তবে যে কেউ তাকে দেখলে বুঝবে, তার পক্ষে প্রতিমা ভাঙচুর করা সম্ভব না।’
বিষয়টি বিশেষভাবে উল্লেখ করার কারণ, কোনো স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে অতিউৎসাহী হয়ে কারোরই এমন কিছু করা বা বলা উচিত নয়, যা মানুষের মধ্যে ভুল-বোঝাবুঝি বা উত্তেজনার সৃষ্টি করতে পারে। দুর্গাপূজাকে ঘিরে সব পক্ষকেই দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। গণমাধ্যমের অনুসন্ধানী ভূমিকা যে সত্য উদ্ঘাটনে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে, সেটাও ভাঙ্গার ঘটনায় প্রমাণ হলো। কী করা উচিত আর কী করা উচিত নয়—এই বোধ তৈরি না হলে সম্প্রীতির পরিবেশ কীভাবে প্রশস্ত হবে?
লেখক: মোনায়েম সরকার
লেখক, রাজনীতিবিদ; চেয়ারম্যান, বিএফডিআর
মোনায়েম সরকার

বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা সামনে। ৯ অক্টোবর পূজা শুরু। বাংলাদেশে এবার দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে উদ্যাপন হবে কি না, তা নিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে কিছু উদ্বেগ আছে বলে শুনতে পাচ্ছি। যদিও কোনো কোনো মহল থেকে বলা হচ্ছে, দুর্গাপূজা ভালোভাবে উদ্যাপনের জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এমনকি মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা পূজামণ্ডপ পাহারা দেবে বলেও খবর প্রচার হয়েছে। সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দল হিসেবে পরিচিত জামায়াতে ইসলামীও দুর্গাপূজা নির্বিঘ্নে পালনের পক্ষে কথা বলেছে। কিন্তু এতে হিন্দু সম্প্রদায়ের উদ্বেগ কমছে না বাড়ছে, তা বলা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তবে সরকার পরিবর্তনের পর প্রায় দেড় মাসেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি, পুলিশ সব জায়গায় সমান সক্রিয় হয়নি। আন্দোলনের সময় ও পরে এমন সব ঘটনা ঘটেছে যার ফলে পুলিশের মনোবল ভেঙে পড়েছে। নাগরিকদের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে সেনাবাহিনীকে দুই মাসের জন্য ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও উপাসনালয়ে হামলার ঘটনা ঘটেছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে লেখা একটি খোলাচিঠিতে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘ছাত্র-জনতার এই আত্মদান, ত্যাগ ও সংগ্রাম বাংলাদেশে জাগরণের যে চেতনা প্রজ্বালন করেছে, তা যেন কখনো কেউ নিভিয়ে দিতে না পারে, মুক্তিযুদ্ধ যেন পথ না হারায়। এই বিজয় যখন চূড়ান্ত লক্ষ্য অভিমুখে এগিয়ে যাচ্ছে, অত্যন্ত দুঃখ ও বেদনার সঙ্গে লক্ষ করছি যে একটি বিশেষ গোষ্ঠী সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে নির্বিচার তুলনাহীন সহিংসতা ছড়িয়ে এই অর্জনে কালিমা লেপন করার ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে।’
খোলাচিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ‘অনেক মন্দির হামলার পর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, অনেক নারী নিগৃহীত হয়েছেন। কয়েকটি স্থানে হত্যার ঘটনাও ঘটেছে। আক্রান্ত হয়েছে অন্য সংখ্যালঘুরাও। মূলত ৫ আগস্ট থেকে এই সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, যা এখনো অব্যাহত রয়েছে। সারা দেশের সংখ্যালঘুদের মধ্যে গভীর শঙ্কা, উদ্বেগ ও অনিশ্চয়তা ছড়িয়ে পড়েছে।’
অন্য দিকে ১৫ আগস্ট ভারতের স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছিলেন, ‘বিশেষ করে ভারতের ১৪০ কোটি মানুষ চায় হিন্দুসহ বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা যেন নিরাপদে থাকে।’
এর পরদিনই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। দুইজনের মধ্যে হিন্দুসহ বাংলাদেশের সকল সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিয়ে কথা হয়েছে। প্রফেসর ইউনূস নরেন্দ্র মোদিকে বলেছেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নির্যাতন নিয়ে ভারতীয় মিডিয়ায় অতিরঞ্জিত খবর প্রকাশ করা হয়েছে। সত্যিকার অর্থে কী ঘটেছে সেটি দেখতে বাংলাদেশে এসে ভারতীয় সাংবাদিকদের রিপোর্ট করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার বিষয়টি যখন উত্থাপন করেছেন তখন প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, সংখ্যালঘুসহ বাংলাদেশের সব নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
নিরাপত্তার দাবিতে হিন্দু সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে একাধিক সমাবেশ করে বিভিন্ন দাবিদাওয়া তুলে ধরা হয়েছে। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যেন দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে না ঘটে, সেটাই সবার প্রত্যাশা। সারা দেশে এখন চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ। ১৪ সেপ্টেম্বর ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় একটি মন্দিরে নির্মাণাধীন আটটি দুর্গা প্রতিমা ভাঙচুর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলা সদর বাজারের গুড়পট্টি এলাকার হরি মন্দিরে এ ঘটনা ঘটে বলে ভাঙ্গা থানার ওসি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন।
মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় সঞ্জিত বিশ্বাস নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে তাকে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে পরিচিত করানো হয় স্থানীয় পুলিশের পক্ষ থেকে। এই ঘটনা সম্পর্কে জার্মানিভিত্তিক গণমাধ্যম ডয়চে ভেলের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে ভিন্ন খবর। ডয়চে ভেলে জানাচ্ছে: পুলিশ যাকে ‘ভারতীয়’ ধরে নিয়ে বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করেছিল তার নাম সঞ্জিত বিশ্বাস (৪৫), বাবার নাম নিশিকান্ত বিশ্বাস, বাড়ি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানি উপজেলায়। ডয়চে ভেলেকে নিশিকান্ত বিশ্বাস জানান, তাঁর ছেলে মানসিক ভারসাম্য হারানোর ফলে ২০১৯ সাল থেকে নিখোঁজ ছিলেন ৷ সংবাদপত্রে ছবি দেখে সঞ্জিতের সন্ধান পেয়েছেন তাঁরা।
অথচ সঞ্জিতের পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত না হয়ে, এমনকি প্রতিমা ভাঙচুরের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততার বিষয়ে কোনো অভিযোগ বা তথ্য না পেয়েই পুলিশের পক্ষ থেকে সোমবার গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয় ৷ সেই তথ্য যাচাই-বাছাই না করে খবরও প্রকাশ করা হয় ৷ একটি ইংরেজি দৈনিকের বাংলা ভার্সনে সেই খবরের শিরোনাম ছিল ‘ফরিদপুরে নির্মাণাধীন দুর্গা প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় “ভারতীয় নাগরিক” গ্রেপ্তার।’
কিন্তু ডয়চে ভেলের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে সম্পূর্ণ ভিন্ন তথ্য। মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তিকে কিনা ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত করে আসামি ধরার কৃতিত্ব নেওয়ার চেষ্টা করেছে পুলিশ, পাসপোর্ট বা অন্য কোনো পরিচয়পত্র না দেখা সত্ত্বেও তাঁকে ভারতীয় নাগরিক সাব্যস্ত করে দ্রুত খবর প্রচারে উদ্যোগ নিয়েছে, সংবাদমাধ্যমের একটা অংশও কোনো যাচাই-বাছাইয়ে না গিয়ে হুবহু প্রচার করেছে সেই ‘কাল্পনিক’ তথ্য। অথচ খুব সহজেই সঞ্জিতের জাতীয়তা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যেত। আঙুলের ছাপ নিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রের সার্ভারে পরীক্ষা করলেই পুলিশ জানতে পারত সঞ্জিত বাংলাদেশের নাগরিক। শেষ পর্যন্ত অবশ্য জাতীয় পরিচয়পত্র দেখেই পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
ভাঙ্গার স্থানীয় এক সাংবাদিক ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘অন্তত দেড় মাস ধরে ওই পাগলকে বাজারে দেখা যাচ্ছে। সে কোনো প্রশ্নের উত্তর দেয় না। পোশাক খুবই অপরিচ্ছন্ন। ঘটনা জানার পর এসপি যখন ঘটনাস্থলে যান, তখন আমাদেরও ডাকা হয়েছিল। আমরা তখনো ওই পাগলকে সেখানে দেখেছিলাম। কিন্তু সেদিন তাকে ধরা হয়নি। পরদিন হঠাৎ করে পুলিশ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে পাগলকে গ্রেপ্তারের কথা জানায়। ফলে আমরাও নিশ্চিত নই কীভাবে ওই পাগলের সম্পৃক্ততার বিষয়ে পুলিশ নিশ্চিত হয়ে তাকে গ্রেপ্তার করল। তবে আমরা ধারণা করছি, পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে তাদের তৎপরতা দেখাতে ওই পাগলকে গ্রেপ্তার করে থাকতে পারে।’
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেছেন ইউএনও বি এম কুদরত-এ-খুদা। ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘আমি এখানে ৯ মাস ধরে আছি ৷ এখানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কোনো অভাব নেই ৷ হঠাৎ করেই কেন এমন একটি ঘটনা ঘটে গেল, সেটা বুঝতে পারছি না। এবার এখানে ৯১টি মণ্ডপে পূজা হচ্ছে। আমরা সবার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। আশা করছি, আর কোনো সমস্যা হবে না।’
সঞ্জিতের সম্পর্কে তার বাবা নিশিকান্ত বিশ্বাস ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘জন্মের পর থেকেই সঞ্জিতের মাথায় কিছুটা সমস্যা ছিল। ২০০৬ সালে সে একবার পালিয়ে ভারতে চলে গিয়েছিল। ৬ মাস পর আবার ফিরে আসে। ২০০৯ সালে আমার স্ত্রী মারা যাওয়ার পর ছেলের মাথা আরও খারাপ হয়ে যায় ৷ মায়ের মৃত্যুর শোক সে নিতে পারেনি। যত দিন যায়, তার মানসিক অবস্থা আরও খারাপ হতে থাকে। ২০১৫ সাল থেকে আমরা একজন মানসিক চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা করাতে থাকি ৷ কিন্তু পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। ২০১৯ সালে সে একেবারে হারিয়ে যায়। বহু জায়গায় আমরা খোঁজ করেছি, কিন্তু পাইনি। অবশেষে থানা পুলিশ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তার কথা জানায়। আমরা পুলিশের সঙ্গে কথা বলে আদালতে গিয়েছিলাম। কিন্তু জামিন হয়নি। আশা করি, ২৯ সেপ্টেম্বর হয়ে যাবে। তবে যে কেউ তাকে দেখলে বুঝবে, তার পক্ষে প্রতিমা ভাঙচুর করা সম্ভব না।’
বিষয়টি বিশেষভাবে উল্লেখ করার কারণ, কোনো স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে অতিউৎসাহী হয়ে কারোরই এমন কিছু করা বা বলা উচিত নয়, যা মানুষের মধ্যে ভুল-বোঝাবুঝি বা উত্তেজনার সৃষ্টি করতে পারে। দুর্গাপূজাকে ঘিরে সব পক্ষকেই দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। গণমাধ্যমের অনুসন্ধানী ভূমিকা যে সত্য উদ্ঘাটনে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে, সেটাও ভাঙ্গার ঘটনায় প্রমাণ হলো। কী করা উচিত আর কী করা উচিত নয়—এই বোধ তৈরি না হলে সম্প্রীতির পরিবেশ কীভাবে প্রশস্ত হবে?
লেখক: মোনায়েম সরকার
লেখক, রাজনীতিবিদ; চেয়ারম্যান, বিএফডিআর

বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা সামনে। ৯ অক্টোবর পূজা শুরু। বাংলাদেশে এবার দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে উদ্যাপন হবে কি না, তা নিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে কিছু উদ্বেগ আছে বলে শুনতে পাচ্ছি। যদিও কোনো কোনো মহল থেকে বলা হচ্ছে, দুর্গাপূজা ভালোভাবে উদ্যাপনের জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এমনকি মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা পূজামণ্ডপ পাহারা দেবে বলেও খবর প্রচার হয়েছে। সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দল হিসেবে পরিচিত জামায়াতে ইসলামীও দুর্গাপূজা নির্বিঘ্নে পালনের পক্ষে কথা বলেছে। কিন্তু এতে হিন্দু সম্প্রদায়ের উদ্বেগ কমছে না বাড়ছে, তা বলা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তবে সরকার পরিবর্তনের পর প্রায় দেড় মাসেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি, পুলিশ সব জায়গায় সমান সক্রিয় হয়নি। আন্দোলনের সময় ও পরে এমন সব ঘটনা ঘটেছে যার ফলে পুলিশের মনোবল ভেঙে পড়েছে। নাগরিকদের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে সেনাবাহিনীকে দুই মাসের জন্য ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও উপাসনালয়ে হামলার ঘটনা ঘটেছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে লেখা একটি খোলাচিঠিতে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘ছাত্র-জনতার এই আত্মদান, ত্যাগ ও সংগ্রাম বাংলাদেশে জাগরণের যে চেতনা প্রজ্বালন করেছে, তা যেন কখনো কেউ নিভিয়ে দিতে না পারে, মুক্তিযুদ্ধ যেন পথ না হারায়। এই বিজয় যখন চূড়ান্ত লক্ষ্য অভিমুখে এগিয়ে যাচ্ছে, অত্যন্ত দুঃখ ও বেদনার সঙ্গে লক্ষ করছি যে একটি বিশেষ গোষ্ঠী সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে নির্বিচার তুলনাহীন সহিংসতা ছড়িয়ে এই অর্জনে কালিমা লেপন করার ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে।’
খোলাচিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ‘অনেক মন্দির হামলার পর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, অনেক নারী নিগৃহীত হয়েছেন। কয়েকটি স্থানে হত্যার ঘটনাও ঘটেছে। আক্রান্ত হয়েছে অন্য সংখ্যালঘুরাও। মূলত ৫ আগস্ট থেকে এই সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, যা এখনো অব্যাহত রয়েছে। সারা দেশের সংখ্যালঘুদের মধ্যে গভীর শঙ্কা, উদ্বেগ ও অনিশ্চয়তা ছড়িয়ে পড়েছে।’
অন্য দিকে ১৫ আগস্ট ভারতের স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছিলেন, ‘বিশেষ করে ভারতের ১৪০ কোটি মানুষ চায় হিন্দুসহ বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা যেন নিরাপদে থাকে।’
এর পরদিনই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। দুইজনের মধ্যে হিন্দুসহ বাংলাদেশের সকল সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিয়ে কথা হয়েছে। প্রফেসর ইউনূস নরেন্দ্র মোদিকে বলেছেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নির্যাতন নিয়ে ভারতীয় মিডিয়ায় অতিরঞ্জিত খবর প্রকাশ করা হয়েছে। সত্যিকার অর্থে কী ঘটেছে সেটি দেখতে বাংলাদেশে এসে ভারতীয় সাংবাদিকদের রিপোর্ট করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার বিষয়টি যখন উত্থাপন করেছেন তখন প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, সংখ্যালঘুসহ বাংলাদেশের সব নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
নিরাপত্তার দাবিতে হিন্দু সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে একাধিক সমাবেশ করে বিভিন্ন দাবিদাওয়া তুলে ধরা হয়েছে। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যেন দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে না ঘটে, সেটাই সবার প্রত্যাশা। সারা দেশে এখন চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ। ১৪ সেপ্টেম্বর ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় একটি মন্দিরে নির্মাণাধীন আটটি দুর্গা প্রতিমা ভাঙচুর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলা সদর বাজারের গুড়পট্টি এলাকার হরি মন্দিরে এ ঘটনা ঘটে বলে ভাঙ্গা থানার ওসি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন।
মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় সঞ্জিত বিশ্বাস নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে তাকে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে পরিচিত করানো হয় স্থানীয় পুলিশের পক্ষ থেকে। এই ঘটনা সম্পর্কে জার্মানিভিত্তিক গণমাধ্যম ডয়চে ভেলের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে ভিন্ন খবর। ডয়চে ভেলে জানাচ্ছে: পুলিশ যাকে ‘ভারতীয়’ ধরে নিয়ে বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করেছিল তার নাম সঞ্জিত বিশ্বাস (৪৫), বাবার নাম নিশিকান্ত বিশ্বাস, বাড়ি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানি উপজেলায়। ডয়চে ভেলেকে নিশিকান্ত বিশ্বাস জানান, তাঁর ছেলে মানসিক ভারসাম্য হারানোর ফলে ২০১৯ সাল থেকে নিখোঁজ ছিলেন ৷ সংবাদপত্রে ছবি দেখে সঞ্জিতের সন্ধান পেয়েছেন তাঁরা।
অথচ সঞ্জিতের পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত না হয়ে, এমনকি প্রতিমা ভাঙচুরের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততার বিষয়ে কোনো অভিযোগ বা তথ্য না পেয়েই পুলিশের পক্ষ থেকে সোমবার গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয় ৷ সেই তথ্য যাচাই-বাছাই না করে খবরও প্রকাশ করা হয় ৷ একটি ইংরেজি দৈনিকের বাংলা ভার্সনে সেই খবরের শিরোনাম ছিল ‘ফরিদপুরে নির্মাণাধীন দুর্গা প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় “ভারতীয় নাগরিক” গ্রেপ্তার।’
কিন্তু ডয়চে ভেলের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে সম্পূর্ণ ভিন্ন তথ্য। মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তিকে কিনা ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত করে আসামি ধরার কৃতিত্ব নেওয়ার চেষ্টা করেছে পুলিশ, পাসপোর্ট বা অন্য কোনো পরিচয়পত্র না দেখা সত্ত্বেও তাঁকে ভারতীয় নাগরিক সাব্যস্ত করে দ্রুত খবর প্রচারে উদ্যোগ নিয়েছে, সংবাদমাধ্যমের একটা অংশও কোনো যাচাই-বাছাইয়ে না গিয়ে হুবহু প্রচার করেছে সেই ‘কাল্পনিক’ তথ্য। অথচ খুব সহজেই সঞ্জিতের জাতীয়তা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যেত। আঙুলের ছাপ নিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রের সার্ভারে পরীক্ষা করলেই পুলিশ জানতে পারত সঞ্জিত বাংলাদেশের নাগরিক। শেষ পর্যন্ত অবশ্য জাতীয় পরিচয়পত্র দেখেই পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
ভাঙ্গার স্থানীয় এক সাংবাদিক ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘অন্তত দেড় মাস ধরে ওই পাগলকে বাজারে দেখা যাচ্ছে। সে কোনো প্রশ্নের উত্তর দেয় না। পোশাক খুবই অপরিচ্ছন্ন। ঘটনা জানার পর এসপি যখন ঘটনাস্থলে যান, তখন আমাদেরও ডাকা হয়েছিল। আমরা তখনো ওই পাগলকে সেখানে দেখেছিলাম। কিন্তু সেদিন তাকে ধরা হয়নি। পরদিন হঠাৎ করে পুলিশ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে পাগলকে গ্রেপ্তারের কথা জানায়। ফলে আমরাও নিশ্চিত নই কীভাবে ওই পাগলের সম্পৃক্ততার বিষয়ে পুলিশ নিশ্চিত হয়ে তাকে গ্রেপ্তার করল। তবে আমরা ধারণা করছি, পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে তাদের তৎপরতা দেখাতে ওই পাগলকে গ্রেপ্তার করে থাকতে পারে।’
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেছেন ইউএনও বি এম কুদরত-এ-খুদা। ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘আমি এখানে ৯ মাস ধরে আছি ৷ এখানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কোনো অভাব নেই ৷ হঠাৎ করেই কেন এমন একটি ঘটনা ঘটে গেল, সেটা বুঝতে পারছি না। এবার এখানে ৯১টি মণ্ডপে পূজা হচ্ছে। আমরা সবার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। আশা করছি, আর কোনো সমস্যা হবে না।’
সঞ্জিতের সম্পর্কে তার বাবা নিশিকান্ত বিশ্বাস ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘জন্মের পর থেকেই সঞ্জিতের মাথায় কিছুটা সমস্যা ছিল। ২০০৬ সালে সে একবার পালিয়ে ভারতে চলে গিয়েছিল। ৬ মাস পর আবার ফিরে আসে। ২০০৯ সালে আমার স্ত্রী মারা যাওয়ার পর ছেলের মাথা আরও খারাপ হয়ে যায় ৷ মায়ের মৃত্যুর শোক সে নিতে পারেনি। যত দিন যায়, তার মানসিক অবস্থা আরও খারাপ হতে থাকে। ২০১৫ সাল থেকে আমরা একজন মানসিক চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা করাতে থাকি ৷ কিন্তু পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। ২০১৯ সালে সে একেবারে হারিয়ে যায়। বহু জায়গায় আমরা খোঁজ করেছি, কিন্তু পাইনি। অবশেষে থানা পুলিশ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তার কথা জানায়। আমরা পুলিশের সঙ্গে কথা বলে আদালতে গিয়েছিলাম। কিন্তু জামিন হয়নি। আশা করি, ২৯ সেপ্টেম্বর হয়ে যাবে। তবে যে কেউ তাকে দেখলে বুঝবে, তার পক্ষে প্রতিমা ভাঙচুর করা সম্ভব না।’
বিষয়টি বিশেষভাবে উল্লেখ করার কারণ, কোনো স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে অতিউৎসাহী হয়ে কারোরই এমন কিছু করা বা বলা উচিত নয়, যা মানুষের মধ্যে ভুল-বোঝাবুঝি বা উত্তেজনার সৃষ্টি করতে পারে। দুর্গাপূজাকে ঘিরে সব পক্ষকেই দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। গণমাধ্যমের অনুসন্ধানী ভূমিকা যে সত্য উদ্ঘাটনে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে, সেটাও ভাঙ্গার ঘটনায় প্রমাণ হলো। কী করা উচিত আর কী করা উচিত নয়—এই বোধ তৈরি না হলে সম্প্রীতির পরিবেশ কীভাবে প্রশস্ত হবে?
লেখক: মোনায়েম সরকার
লেখক, রাজনীতিবিদ; চেয়ারম্যান, বিএফডিআর

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা সামনে। ৯ অক্টোবর পূজা শুরু। বাংলাদেশে এবার দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে উদ্যাপন হবে কি না, তা নিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে কিছু উদ্বেগ আছে বলে শুনতে পাচ্ছি। যদিও কোনো কোনো মহল থেকে বলা হচ্ছে, দুর্গাপূজা ভালোভাবে উদ্যাপনের জন্য সব ধর
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা সামনে। ৯ অক্টোবর পূজা শুরু। বাংলাদেশে এবার দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে উদ্যাপন হবে কি না, তা নিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে কিছু উদ্বেগ আছে বলে শুনতে পাচ্ছি। যদিও কোনো কোনো মহল থেকে বলা হচ্ছে, দুর্গাপূজা ভালোভাবে উদ্যাপনের জন্য সব ধর
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা সামনে। ৯ অক্টোবর পূজা শুরু। বাংলাদেশে এবার দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে উদ্যাপন হবে কি না, তা নিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে কিছু উদ্বেগ আছে বলে শুনতে পাচ্ছি। যদিও কোনো কোনো মহল থেকে বলা হচ্ছে, দুর্গাপূজা ভালোভাবে উদ্যাপনের জন্য সব ধর
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা সামনে। ৯ অক্টোবর পূজা শুরু। বাংলাদেশে এবার দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে উদ্যাপন হবে কি না, তা নিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে কিছু উদ্বেগ আছে বলে শুনতে পাচ্ছি। যদিও কোনো কোনো মহল থেকে বলা হচ্ছে, দুর্গাপূজা ভালোভাবে উদ্যাপনের জন্য সব ধর
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫