নিউজিল্যান্ড সিরিজ নিয়ে বাড়ছে উদ্বেগ

বিশ্ব ক্রিকেট মানচিত্রে আবারও বসছে করোনাভাইরাসের থাবা। মহামারির প্রভাবে গত মাসে মেয়েদের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের শেষাংশের ম্যাচগুলো বাতিল হয়েছে। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের একটি খেলেই দক্ষিণ আফ্রিকা ছেড়ে দেশে ফিরে গেছে নেদারল্যান্ডস। দুই দিন আগে পাকিস্তান-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ওয়ানডে সিরিজ পেছানো হয় ছয় মাসের জন্য। মহামারির প্রভাবে এবার বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড টেস্ট সিরিজের পাশে বসল প্রশ্নবোধক চিহ্ন।

ক্রাইস্টচার্চে গত কয়েক দিনের ঘটনা পরম্পরায় অনিশ্চয়তার কালো মেঘ জমেছে দুই ম্যাচের সিরিজকে ঘিরে। সুতোয় ঝুলে যাওয়া এই সিরিজের ভাগ্য নির্ধারণ হতে পারে আগামী পরশু। সেদিন আরেক দফা কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা হবে বাংলাদেশ দলের। ওই পরীক্ষার রিপোর্টের ওপর দাঁড়িয়ে আছে এই সিরিজের ভবিষ্যৎ। সিরিজটি আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের দ্বিতীয় চক্রের অংশ।

নিউজিল্যান্ডে পৌঁছানোর পর থেকে একরকম বন্দিদশা হয়েছে বাংলাদেশ দলের। প্রাথমিক পর্যায়ের কোয়ারেন্টিনের পর জিম করার সুযোগ-সুবিধা মিলেছিল। মাঠে নামার অপেক্ষায় ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু গত পরশু মুমিনুল হকদের অনুশীলনে নিষেধাজ্ঞা দেয় নিউজিল্যান্ডের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

বিপত্তির সূত্র বাংলাদেশ দলের বোলিং কোচ রঙ্গনা হেরাথ। করোনাভাইরাস পরীক্ষায় পজিটিভ হন এই লঙ্কান। পরে তাঁকে আইসোলেশনে পাঠানো হয়। হেরাথের সংস্পর্শে আসা বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মুমিনুল হকসহ তিন ক্রিকেটারের কোয়ারেন্টিন বাড়ানো হয়। বাকিরা অবশ্য মাঠে নামতে উন্মুখ ছিলেন। এরপরই অনুশীলন স্থগিতের খবর আসে।

শেষ পর্যন্ত সিরিজটি হবে তো? বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন অবশ্য আশার কথা শুনিয়েছেন। তাঁর মতে বাংলাদেশ দলের দেশে ফেরা বা সিরিজ বাতিলের সুযোগ নেই। পাশাপাশি ২১ ডিসেম্বরের দিকে তাকিয়ে আছেন তিনি।

গতকাল মিরপুরে সংবাদমাধ্যমকে নাজমুল বলেছেন, ‘ওরা যদি তিন-চার দিন কোয়ারেন্টিন বাড়ায়, আমাদের না করার কারণ নেই। ওদের পরিকল্পনা না পেলে ২১ তারিখের আগে মন্তব্য করা কঠিন।’ প্রশ্ন হচ্ছে, রিপোর্টে কেউ পজিটিভ হলে কিংবা হেরাথ যদি ডেলটা প্লাস বা ওমিক্রনে আক্রান্ত হন তখন কী হবে?

সিদ্ধান্ত যা-ই হোক, দু্ই দেশের ক্রিকেট বোর্ডের আলোচনা থেকেই আসবে। তাই সোমবারের রিপোর্টের ওপর নির্ভর করছে অনেককিছুই। তবে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন নাজমুল, ‘আমরা জানিয়ে দিয়েছি, এটা যেহেতু টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ এবং আমাদের খেলোয়াড়েরা শারীরিক-মানসিকভাবে বিধ্বস্ত, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অনুশীলন, জিম-সুবিধা যদি না দেওয়া হয়, তাহলে তো অত্যন্ত কঠিন হবে। তারা বলেছে, সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করবে।’

বাইরের এ সবকিছুর প্রভাব কতটা পড়ছে বাংলাদেশ দলের ড্রেসিংরুমে? খেলোয়াড়দের মনের অবস্থাই-বা কেমন? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের এক ক্রিকেটার গতকাল আজকের পত্রিকাকে বলেছেন, ‘এটা একটু বেশি হয়ে যাচ্ছে ৷ কিছু করতে পারছি না৷ জিম, রানিং কিছুই না৷ এভাবে ১০-১২ দিন থাকলে কীভাবে হবে? যা হোক হেরাথের পজিটিভ হয়েছে বলে বোধ হয় এমনটা হচ্ছে ৷ আশা করি সব ঠিক হয়ে যাবে।’